আসামে মুসলিমদের উচ্ছেদ ও পুলিশের বর্বরোচিত হামলার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাল বিভিন্ন গণ সংগঠন

নিজস্ব সংবাদদাতা,টিডিএন বাংলাঃ আসামের দরং জেলায় পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনী সরকারি জমিতে অবৈধ বসতি উচ্ছেদের নামে বর্বরোচিত হামলা চালায়। এই ঘটনায় পুলিশের গুলিতে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের দুজন ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। এছাড়া আরও কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়। পরে হাসপাতালে আরও এক জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ও উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়ে। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছেন ভারতের বিভিন্ন গণসংগঠন, সমাজকর্মী, সংখ্যালঘু সংগঠন ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলি। সোশ্যাল মিডিয়ায় আসাম সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলে, “দরং – এর ধলপুরের অধিবাসীদের সবধরনের বৈধ কাগজপত্র রয়েছে। তারা এই দেশের বৈধ নাগরিক। অথচ ধর্মীয় উপাসনা গৃহ নির্মাণের নামে তাদের উচ্ছেদের জন্য পুলিসি অত্যাচার ও নির্যাতন চালানাে হল। মুখ্যমন্ত্রীর ভাই যিনি ওই জেলার এসপি, তার পুলিশ বাহিনী এমন ফ্যাসিবাদি আচরণ করল। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। বিভেদকামী শক্তির মােকাবেলায় আসাম – সহ দেশের সর্বত্র সুশীল সমাজ, ন্যায়পরায়ণ জনগণ, গণতন্ত্রপ্রিয় মানবাধিকার সংগঠন এবং রাজনৈতিক দলগুলিকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।” একইসঙ্গে তারা আরও বলেন, “একজন চিত্র সাংবাদিক যেভাবে আহত মুসলিম যুবকের বুকের ওপর লাফ দিয়ে পড়ে , সজোরে লাথি মারে- এই দৃশ্য ফ্যাসিবাদী চরিত্রকে উন্মােচিত করে দিয়েছে। এই সাংবাদিককে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেবার এবং নিহত ও আহত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ দেবার দাবি জানাই।” অন‍্যদিকে সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি অফ ইন্ডিয়া এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলে, “গত তিন দিন ধরে আরএসএস পরিচালিত বিজেপি সরকার অসমের দারাং জেলার সিপাহ মোড়সহ কয়েকটি জায়গায় উচ্ছেদ অভিযানের বাহানায় দীর্ঘ দিন ধরে বসবাসকারী গরীব মানুষদের উপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে কম করে দুজন মানুষকে হত্যা করেছে। প্রায় হাজার খানেক পরিবারকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করেছে। মসজিদ মাদ্রাসা নিয়ে পাঁচ খানা প্রতিষ্ঠান গুড়িয়ে দিয়েছে। আরএসএস এর অসম থেকে বাঙালি উচ্ছেদের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে পরিকল্পিত এই উচ্ছেদ অভিযান এবং নির্বিচার গুলিচালনা। কোন বিকল্প ব্যবস্থা না করে হঠাৎ করে রাতের অন্ধকারে বিশাল সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী এবং আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ান অভিযান পরিচালনা করে। এই বেআইনি উচ্ছেদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ প্রতিবাদ জানালে পুলিশ প্রতিবাদী মানুষের উপর গুলি চালায়। পুলিশের এই গুলিচালনা বেআইনি, উচ্ছেদ অভিযান নারকীয়, বর্বরোচিত। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা পুলিশের এই কাজকে সমর্থন করে টুইট করেছেন। আমরা পুলিশের এবং মুখ্যমন্ত্রীর এই কাজের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”