মনুস্মৃতি পোড়ানোর ভিডিয়ো পোস্ট, সোশ্যাল মিডিয়ায় হুমকি দলিত সাংবাদিক মীনাকে

ছবি সংগৃহীত ,প্রতীকী ছবি

টিডিএন বাংলা ডেস্ক : মনুস্মৃতি পোড়ানোর একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে উগ্রবাদীদের রোষের মুখে পড়েছেন দলিত মহিলা সাংবাদিক মীনা কোতওয়াল৷ ভার্চুয়াল জগতে তাকে প্রতিনিয়ত হুমকির সম্মুখীন হতে হচ্ছে৷ বাজে মন্তব্যের মাধ্যমে তাকে হেনস্তা করা হচ্ছে৷ তার পরিণতি হতে পারে নিহত মানবাধিকার কর্মী গৌরী লঙ্কেশের মতো, এমন হুমকিও দেওয়া হয়েছে তাকে৷ প্রসঙ্গত, মনুস্মৃতি হিন্দু ধর্মের প্রাচীন ‘ধর্মশাস্ত্র’ এবং হিন্দু সমাজের কিছু অংশের কাছে অত্যন্ত সম্মানিত৷ তবে আধুনিক কালে অনেকেই মনে করেন যে এই গ্রন্থে নারীকে হেয় করা হয়েছে৷

সাংবাদিক কোতওয়াল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘দ্য মুকনায়ক’-এর প্রতিষ্ঠাতা৷ ১৯২৭ সালে ড. ভীমরাও আম্বেদকরের এই প্রাচীন আইন নথিটি পুড়িয়েছিলেন৷ সেই দিনটির স্মরণে ‘মনুস্মৃতি দহন দিবস’ পালন উপলক্ষে ভিডিয়োটি পোস্ট করেছিলেন তিনি৷ তিনি বলেন, এর পরপরই আমি বজরং দল, কর্নি সেনা, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মতো হিন্দুত্ববাদী জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীগুলির সদস্যদের কাছ থেকে হিংসাত্মক হুমকি পেতে শুরু করি। গৌরী লঙ্কেশের মতো আপনিও একই পরিণতি ভোগ করবেন৷ এই হুমকিও দেওয়া হয়েছে আমাকে৷ এই কথোপকথনের একটিতে হুমকি প্রদানকারী কোতওয়ালকে সতর্ক করে যে তার ফোন নম্বরটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ এবং সোশ্যাল মিডিয়ার পেজগুলিতে ব্যাপকভাবে বিতরণ করা হচ্ছে৷ এবার সবাই মিলে তাকে দেখে নেবে বলে শাসানো হয়৷ ওই সমস্ত উগ্রবাদীরা দাবি করছেন যে তিনি যে ভিডিয়োটি শেয়ার করেছেন তা মুছে ফেলতে হবে। রাজি না হলে তারা তাকে শারীরিক নির্যাতনের হুমকিও দেয়।

‘মুকনায়ক’ একটি মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম যা প্রাথমিকভাবে সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর উপর প্রতিবেদন তৈরি ও প্রকাশ করে। হুমকির ভয়ে গত সাতদিন ধরে কাজ করতে পারছেন না মীনা। তিনি অচেনা নম্বর থেকে ফোন ধরতে এবং বাড়ি থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছেন। মীনা জানান, তাদের মনে মনু আছে, আর সেই কারণেই তারা নারীদের আক্রমণ করে এবং তাদের ঘরে বন্দি করে রাখতে চায়। তারা ভয় পায় যে আমার মতো দলিতরা, বিশেষ করে দলিত মহিলারা তাদের নিপীড়ন বুঝতে শুরু করবে এবং তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করবে৷ যদিও মীনা তিন দিন আগে অভিযোগ জমা দিয়েছেন৷ কিন্তু তিনি যে হুমকির সম্মুখীন হচ্ছেন সে বিষয়ে কোনও এফআইআর দায়ের করা হয়নি। তিন মাস আগে তিনি জাত-ভিত্তিক ঘৃণামূলক মন্তব্যের জন্য একজন টুইটার ব্যবহারকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় জনসাধারণের চাপ এবং ক্ষোভ ছাড়া এফআইআর দায়ের করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল সেই সময়৷ তার ভাষায়, দলিত নারী সাংবাদিক, বিশেষ করে যারা স্পষ্টভাষী, তাদের সংখ্যা খুবই কম। তারা ভয়ভীতিমূলক ব্যবস্থা অবলম্বন করছে৷ কারণ তারা অবস্থার পরিবর্তন করতে চায় না৷
সংবাদ সূত্র- পুবের কলম পত্রিকা