জল এখানে দামি আর জীবন এখানে সস্তা, এক কলসি জলের জন্য মহিলাদের নামতে হয় ৪০ ফুট নিচু কুয়োয়

টিডিএন বাংলা ডেস্ক: জলের অপর নাম জীবন। অথচ সেই জল কিছু কিছু জায়গায় জীবনের থেকেও বেশী দামী হয়ে যায়। তাই নিজের পরিবারের জন্য সারাদিনের প্রয়োজনের এক কলসি জল নিতে মহিলাদের নামতে হয় ৪০ ফুট নিচু কুয়োয়। এই ঘটনা আজ থেকে ৪০বছর আগের বা ৫০ বছর আগের নয়।অবিশ্বাস্য ঠেকলেও এটাই বাস্তব মহারাষ্ট্রের নাসিকের মরাঠবাড়া এবং বিদর্ভ এলাকায়। প্রতিদিন প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ওই এলাকার মহিলাদের মাত্র একটি দড়ির সহযোগিতায় রীতিমতো প্রাণ হাতে নিয়ে জল নিতে নামতে হয় ৪০ ফুট নিচু কুয়োয়। গোটা পরিবারের জন্য মাত্র এক কলসি জল।
আজকের দিনে আমরা যখন চাইলেই খুব সহজে জল খেতে পাই, রাস্তায় ঘাটে বিভিন্ন জায়গায় পানীয় জল কিনতে পাওয়া যায় সেখানে মাত্র এক কলসি জলের জন্য জীবন বিপন্ন করতে হচ্ছে মারাঠবাড়া এবং বিদর্ভের বাসিন্দাদের। কয়েক ফোঁটা জলও এখানে ভীষণ দামি।
সম্প্রতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নাসিক জেলার ত্রয়ম্বকেশ্বর তালুকার মহাদরবাজা আদিবাসী বস্তি থেকে একটি ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে। ওই ভিডিওতে দেখা গেছে গ্রামের এক মহিলা জল নিতে নিচে নামছেন এবং অন্যান্য মহিলারাও যারা আশে পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তাঁরাও এক এক করে কুয়োর মধ্যে জল নিতে নামছেন। যে কুয়োর মধ্যে তাঁরা নামছেন সেই কুয়োতে জলের পরিমাণ যথেষ্ট কম, প্রায় তলানীতে থেকেছে। উপর থেকে দড়িতে বেঁধে খালি বাসন নিচে পাঠালে তাতেও খুব কম পরিমাণ জল উঠে আসছে। যে রোমহর্ষক উপায়ে ওই মহিলারা ওই সামান্য পরিমান জল তুলে আনছেন তা দেখে রীতিমত হতভম্ব নেটিজেনরা।
প্রসঙ্গত এই চিত্রটা শুধুমাত্র ওই একটিমাত্র গ্রামের নয়, আশেপাশের অন্যান্য গ্রামেও একই চিত্র রয়েছে। আগে নাসিক থেকে মরাঠবাড়া এলাকায় জলের সাপ্লাই করা হত, কিন্তু এখন ঐ সমস্ত এলাকায় কোন রকম জলের সাপ্লাই করা হয় না। যার ফলে খরার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এক কলসি জলের জন্য ২ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে এবং তারপর ঐ ভয়ানক গভীর কুয়ো থেকে একটিমাত্র দড়ির সহযোগিতায় নিচে নামতে হয়।
উল্লেখ্য, ত্রয়ম্বকেশ্বর তালুকার এই আদিবাসী গ্রামটির উদঘাটন করেছিলেন পর্যটনমন্ত্রী আদিত্য ঠাকরে। এই গ্রামে প্রায় ৫০০ বেশি মানুষ বাস করেন। তা সত্ত্বেও এই গ্রামে না কোনও সঠিক রাস্তা রয়েছে, নাই জলের কোনও ব্যবস্থা। একমাত্র ভরসা ছিল যে কুয়ো, সেই কুয়োর জলও এখন তলানিতে। ওই আদিবাসী গ্রামের এক মহিলার বক্তব্য অনুযায়ী, এই কুয়োর জল শেষ হয়ে গেলে তাদেরকে জল না খেয়েই দিন কাটাতে হতে পারে।