HighlightNewsদেশ

কেন কৃষি আইন প্রত্যাহার? প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরও কেন কৃষকদের অবিশ্বাস?

টিডিএন বাংলা ডেস্ক : অবশেষে সরকারের আনা ৩টি কৃষি আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। এই আইন প্রত্যাহার ভোটের দায় ছাড়া আর কিছুই নয় বলে দাবি রাজনৈতিক মহলের একাংশের। কিন্তু আইন প্রত্যাহারের ঘোষণার পরও কৃষকদের মাথার উপর থেকে দুশ্চিন্তার কালো মেঘ কাটছে না। কৃষকদের দুশ্চিন্তার কারণ অবশ্যই যুক্তিযুক্ত।

রাজনৈতিক মহল মনে করছে ক্ষমা প্রার্থনা চেয়ে কৃষি আইন প্রত্যাহারের দুটি কারণ রয়েছে। প্রথমত দিনের পর দিন বেড়ে চলা সংঘ পরিবারের চাপ এবং দ্বিতীয়ত ভোটের বাধ্যবাধকতা। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাতে বিজেপির দুই শীর্ষ নেতার কাছে নাগপুর থেকে সংঘের এক শীর্ষ পদাধিকারীর ফোন আসে। গভীর রাত পর্যন্ত আলোচনায় স্থির হয়, কৃষি আইনের জন্য উত্তর প্রদেশ, পাঞ্জাবের মতো রাজ্যে ভোটের মুখে হওয়া রাজনৈতিক ক্ষতে প্রলেপ দিতে যত দ্রুত সম্ভব তিন কৃষি আইন বাতিলের ঘোষণা করতে হবে। সেইজন্য কালবিলম্ব না করে গুরু নানক জয়ন্তীর দিনটিকে বেছে নেওয়া হয় এই ঘোষণার জন্য।

২৯ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে শীতকালীন অধিবেশন। বিল দুই কক্ষে পাস করিয়ে পুরো প্রক্রিয়া শেষ হবে এই অধিবেশনের মধ্যেই। তারপরেও কেন এত অবিশ্বাস কৃষকদের? অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি) নিশ্চিত করাই কৃষকদের প্রধান দাবি। কৃষি আইন প্রত্যাহারের পর ন্যূনতম সহায়ক মূল্য যদি সরকার তুলে নেয়, তাহলে কৃষকদের অবস্থা আরও খারাপ হবে। গত ১০ বছরে সরকার একের পর এক সহায়ক মূল্য, সার-জলসেচে ভর্তুকি তুলে নিয়েছে। সে ক্ষেত্রে কৃষকদের এমএসপি গ্যারান্টি অ্যাকট চাওয়া যুক্তিসংগত। সত্যিই যদি ন্যুনতম সহায়ক মূল্য দেওয়া সরকার বন্ধ করে দেয়, তাহলে দরকষাকষির ক্ষমতাটা পুরোটাই কর্পোরেটদের হাতে চলে যাবে। সে ক্ষেত্রে শুধু ছোট বা প্রান্তিক চাষি নয়, বড় চাষিদেরও শস্যের যথার্থ মূল্য না পাওয়ার আশঙ্কা বেশি। খোলাবাজারে কৃষি পণ্যের দাম ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। কিন্তু সরকার যেভাবে সর্বত্র বেসরকারিকরণের পথে হাঁটছে, তাতে এমএসপি তুলে নিলে খোলাবাজারে চাষিরা কৃষিপণ্যের ন্যূনতম দামও পাবেন না।

তাহলে কি কেন্দ্রের কৃষি সংস্কারের যুক্তি পুরোটাই মিথ্যা? অর্থনীতিবিদদের মতে, মুক্ত অর্থনীতির তত্ত্ব সবক্ষেত্রে লাভদায়ক হয় না। কৃষি সংস্কার যদি করতেই হয়, তাহলে পরিকাঠামোর ক্ষেত্রে করতে হবে। সেটা না করে কৃষি বাজারের বিকেন্দ্রীকরণ করে লাভ হবে না। সহায়ক মূল্য বা ভর্তুকির খরচ জোগাতে ধনী চাষীদের আয়করের আওতায় আনা প্রয়োজন। এতে সরকারের ওপর খরচের বোঝার বাড়বে না। বেসরকারিকরণ না করেও কৃষির উন্নতির সম্ভব হবে|

Related Articles

Back to top button
error: