HighlightNewsদেশ

মণিপুরে নিহত ৩, ইম্ফলে চরম উত্তেজনা: পাহাড় থেকে চলছে গুলি চলছে; মর্টার হামলা হচ্ছে, একাধিক রাস্তা অবরোধ করেছে জনতা

টিডিএন বাংলা ডেস্ক: গত ২৪ ঘণ্টা ধরে মণিপুরে নিরাপত্তা বাহিনী ও মেইতি সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। ইতিমধ্যেই এই সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। জানা গিয়েছে, মৃতদের নাম ইউমনাম জিতেন মেইতি (৪৬), ইউমনাম পিশাক মেইতি (৬৭) এবং ইউমনাম প্রেমকুমার মেইতি (৩৯), সকলেই কোয়াকতা লামহাইয়ের বাসিন্দা৷ তেরখোংসাংবি কাংওয়ে এবং থরবুং-এ এই সহিংস সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এই এলাকাটি কুকি-মেইতেইয়ের মধ্যবর্তী সীমানা, যাকে বাফার জোন বলা হয়। হামলাকারীরা এই বাফার জোন পার হওয়ার চেষ্টা করেছিল বলে জানা গিয়েছে। এসময় নিরাপত্তা বাহিনী বাধা দিলে তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। গুলিও চালানো হয়। পাল্টা জবাব দিতে হয় নিরাপত্তা বাহিনীকে। একইসঙ্গে, বিষ্ণুপুরে, মেইতি সম্প্রদায়ের মহিলারা ৩ আগস্ট বাফার জোন অতিক্রম করার চেষ্টা করেছিলেন। নিরাপত্তাকর্মীরা তাদের বাধা দেন। ওই সময় দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়।

প্রসঙ্গত, মণিপুরের জনসংখ্যা প্রায় ৩৮ লাখ।  এখানে তিনটি প্রধান সম্প্রদায় রয়েছে – মেইতি, নাগা এবং কুকি। মেইতিরা বেশিরভাগই হিন্দু। এনগা-কুকি খ্রিস্টান ধর্ম অনুসরণ করে। এরা সিডিউল ট্রাইবের অন্তর্গত। এদের জনসংখ্যা প্রায় ৫০%। ইম্ফলের উপত্যকায় মেইতেই সম্প্রদায়ের প্রভাব রয়েছে, যা রাজ্যের প্রায় ১০% এলাকা জুড়ে রয়েছে। নাগা-কুকির জনসংখ্যা প্রায় ৩৪ শতাংশ। এরা রাজ্যের প্রায় ৯০% অঞ্চলে বসবাস করে।
মেইতেই সম্প্রদায় তাদেরও উপজাতির মর্যাদা দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। সম্প্রদায়ের তরফে এর জন্য মণিপুর হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছিল। সম্প্রদায়ের যুক্তি ছিল যে মণিপুর ১৯৪৯ সালে ভারতের সাথে একীভূত হয়েছিল।

এর আগে, তারা কেবল উপজাতির মর্যাদা পেয়েছে। এর পরে, হাইকোর্ট রাজ্য সরকারকে সুপারিশ করেছিল যে মেইতিকে তফসিলি উপজাতি (এসটি) অন্তর্ভুক্ত করা হোক। মেইতি উপজাতিরা বিশ্বাস করে যে কয়েক বছর আগে তাদের রাজারা যুদ্ধের জন্য মিয়ানমার থেকে কুকিদের ডেকেছিল।  এরপর তারা স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে যায়। এরা কর্মসংস্থানের জন্য বন কেটে আফিম চাষ শুরু করে। এতে মণিপুর মাদক চোরাচালানের ত্রিভুজ হয়ে ওঠে। এসবই হতে থাকে প্রকাশ্যে। নাগাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য তারা একটি সসস্ত্র দল গঠন করে।
এদিকে, অন্য দুটি উপজাতি মেইতি সম্প্রদায়কে সংরক্ষণ দেওয়ার বিপক্ষে।তাদের বক্তব্য, রাজ্যের ৬০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৪০টি ইতিমধ্যেই মেইতি-অধ্যুষিত ইম্ফল উপত্যকায় রয়েছে। এই অবস্থায় এসটি ক্যাটাগরিতে মেইতিদের সংরক্ষণের মাধ্যমে তাদের অধিকার ভাগ হয়ে যাবে।

উল্লেখ্য, মণিপুরের ৬০ জন বিধায়কের মধ্যে ৪০ জন বিধায়ক মেইতি এবং ২০ জন বিধায়ক নাগা-কুকি উপজাতির। এখনও পর্যন্ত ১২ জন মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে মাত্র দু’জন উপজাতি থেকে এসেছেন।

Related Articles

Back to top button
error: