সুইস ব্যাঙ্কে করোনাকালে ভারতীয়দের টাকার পরিমাণ বেড়ে ১৩ বছরে সবচেয়ে বেশি , নিশানায় প্রধানমন্ত্রী মোদী
টিডিএন বাংলা ডেস্ক : ব্যাঙ্কগুলিতে ভারতীয় ব্যক্তি ও বিভিন্ন সংস্থার রাখা টাকার পরিমাণ ২০২০-তে একলাফে অনেকটাই বেড়ে হল ২০,৭০০ কোটি টাকা।সুইৎজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টে জমা অর্থ কমলেও বন্ড, সিকিউরিটিজ় ও অন্যান্য ভাবে সুইস ব্যাঙ্কে গচ্ছিত অর্থ বিপুল ভাবে বেড়েছে। অন্য ব্যাঙ্কের মাধ্যমে সুইস ব্যাঙ্কে জমা টাকার পরিমাণও বেড়েছে।
সুইস ব্যাঙ্কগুলিতে ভারতীয় গ্রাহকদের টোটাল সম্পত্তির পরিমাণ ২০১৯-র শেষে ৬,৬২৫ কোটি টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ২০,৭০০ কোটি টাকা। পূর্বের দুই বছরে এর পরিমাণ কমেছিল , কিন্তু ২০২০ তে পুণরায় তা বেড়ে গত ১৩ বছরের মধ্যে সর্বাধিক অঙ্কে পৌঁছেছে।
গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন নরেন্দ্র মোদী বারবার মনমোহন সিংহ সরকারের কাছে সুইস ব্যাঙ্কে গচ্ছিত টাকা ফেরত আনার দাবি তুলতেন। প্রতিশ্রুতি দিতেন ক্ষমতায় এলে সুইস ব্যাঙ্কে জমা কালো টাকা দেশে ফেরত আনবেন কিন্তু নরেন্দ্র মোদীর জমানায় ভারতীয়দের সুইস ব্যাঙ্কে গচ্ছিত জমা টাকার পরিমাণ সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিল। করোনা কালে দেশের মানুষের করুণ পরিস্থিতির মাঝে এক শ্রেণীর মানুষ বিদেশে টাকার পাহাড় গড়ে তুলছেন।
২০১৪ সালে লোকসভা ভোটের প্রচারে মোদী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি ক্ষমতায় এলে তিন বছরে বিদেশে গচ্ছিত সমস্ত কালো টাকা দেশে ফিরিয়ে এনে গরিবদের মধ্যে বিলি করে দেবেন এবং সে ক্ষেত্রে গরিবদের মাথাপিছু ১৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা বলেন।
বিরোধীদের মতে মোদীর ওই প্রতিশ্রুতি ছিল ‘নির্বাচনী জুমলা’!পুরনো কথা মনে করিয়ে কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা প্রশ্ন ছুড়েছেন, “তিন বছরের বদলে সাত বছর কেটে গিয়েছে। মোদীজির কি ইচ্ছাশক্তি নেই? নাকি ওই সব অর্থ তাঁর বন্ধুদের?”
কংগ্রেসের সরকারের কাছে কার কত কালো টাকা রয়েছে, কেন্দ্র তা জানিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করার দাবি তুলেছে। মোদী সরকার সাত বছরে কী পরিমাণ কালো টাকা বিদেশ থেকে উদ্ধার করেছে, তা-ও খোলসা করার কথা বলে। সুইস ব্যাঙ্কের পরিসংখ্যান মতে ২০০৬ সালের পর থেকে শুধু ২০১১, ২০১৩ ও ২০১৭ বাদে লাগাতার ভারতীয়দের জমা টাকার অঙ্ক কমেছে। ২০১৮ থেকে ভারত ও সুইৎজ়ারল্যান্ডের মধ্যে কর জমা সংক্রান্ত তথ্য আদানপ্রদান শুরু হয়েছে, তার পরেও কেন টাকা জমানোর প্রবণতা বাড়ছে এ নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।