টিডিএন বাংলা ডেস্ক : অশান্তির আবহেলাই মিটল ত্রিপুরার ভোটপর্ব। কোথাও ধরা পড়েছে পুরনির্বাচনে অবাধ সন্ত্রাস ও কোথাও আবার দেদার ছাপ্পা। ভোট সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছে শাসক দল বিজেপির বিরুদ্ধে। আগরতলার সবকটি ওয়ার্ডে পুনঃনির্বাচনের দাবি তুলেছে সিপিআইএম। ভোট মিটতেই ফের সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল ঘাসফুল শিবির। আগামীকাল অর্থাৎ শুক্রবার শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হবে তারা।
শান্তিপূর্ণভাবে ভোট করতে আগরতলার সব বুথকে স্পর্শ কাতর ঘোষণা করে কমিশন। বুথে বুথে মোতায়েন ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী। তা সত্ত্বেও লাগামছাড়া হিংসা। ঝরল রক্ত। কোথাও ভাঙ্গা হয়েছে সিপিএমের ক্যাম্প অফিস। কোথাও আবার তৃণমূল কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। ত্রিপুরা সিপিআইএমর রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী বলেন – “বিজেপি, ত্রিপুরা সরকারের আধিকারিক ও নির্বাচন কমিশন মিলে ত্রিপুরার পুরনির্বাচনকে প্রহসনে পরিনত করেছে। দিন দুপুরে গনতন্ত্রের অমাবস্যা নামিয়ে এনেছে।”
আগরতলা পুরনিগম সহ ত্রিপুরার মোট ১৩ টি পুর অঞ্চলের ৬৪৪টি বুথে ভোট গ্রহণ হয়েছে। এরমধ্যে আগরতলার সবকটি ভোট গ্রহণ কেন্দ্রকেই স্পর্শকাতর হিসাবে ঘোষণা করেছিল কমিশন। ভোট চলাকালীন ভুরি ভুরি অভিযোগ আসতে শুরু করে। পুরভোট চলাকালীন রাজ্যে আরও বাহিনী পাঠানোর নজিরবিহীন নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি বিক্রম নাথের বেঞ্চ এদিন এই নির্দেশ দেয়। এদিন শীর্ষ আদালতে সিপিআই(এম)-এর পক্ষে আইনজীবী পি ভি সুরেন্দ্রনাথ ত্রিপুরায় সন্ত্রাসের ছবি তুলে ধরেন। দু’বার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য ত্রিপুরা সরকারকে নির্দেশ দিইয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু শীর্ষ আদালতের নির্দেশই সার। বিরোধীদের অভিযোগ, বুধবার রাত থেকেই পুর এলাকাগুলিতে মাস্ক ও হেলমেট পরা দুষ্কৃতীরা বাইক নিয়ে টহল দিচ্ছিল। বিরোধী সমর্থকদের পরিণতি ভয়ঙ্কর হবে বলে ভয় দেখানো হচ্ছে। অধিকাংশ বুথে তাদের পোলিং এজেন্টকে বসতে দেওয়া হয়নি। এমনকি আক্রান্ত হয়েছেন খোদ তৃণমূল প্রার্থী। আগরতলার ৫১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী তপন কুমার বিশ্বাসকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। তার চোখে গুরুতর আঘাত লেগেছে। আগরতলার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী পদ্মা ভট্টাচার্যের ছেলে আক্রমণ করা হয়।
এমনকি, বিজেপি বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণ- এর অভিযোগ, “ভয় দেখিয়ে ভোট না করলেও পারতেন মুখ্যমন্ত্রী। নেতৃত্বের শিশুসুলভ আচরণের জন্য দলের বদনাম হচ্ছে। মানুষের অভিশাপ কুড়োতে হচ্ছে।” উল্লেখ্য, ত্রিপুরাতে সুদীপ রায় বর্মন ও বিপ্লব দেবের বিরোধ এখন চরমে। সব মিলিয়ে বৃহস্পতিবার নির্বাচনে ৭৫% ভোট পড়েছে।