নিজস্ব সংবাদ, টিডিএন বাংলা: যখন দেশ জুড়ে কঠোরতা, সাম্প্রদায়িকতা আর হিংসার ছড়াছড়ি তখন এরই মাঝে সরলতা, শান্তি আর সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে ‘সহজ কর, কঠিন করোনা, সুসংবাদ দাও ঘৃণা ছড়িওনা’ শিরোনামে বিশেষ সভা আয়োজিত হল গোপালপুর হাউসে। এই সভার আলোচ্য বিষয় ছিল বর্তনাম এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে সমাজ পুণর্গঠনে ইসলাম ও মুহাম্মাদ(সঃ) এর শিক্ষা বিষয়ক। সভায় উপস্থিত সমস্ত বক্তারা মুহাম্মাদ(সঃ) জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে সমাজ পুণর্গঠনে সকলকে বিশেষত যুবকদের এগিয়ে আসার আহব্বান করেন। সাধারণ মানুষকেও তাদের কর্তব্য স্মরণ করিয়ে দেন তারা।
উক্ত সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে রাজারহাট এলাকার বিধায়ক তাপশ চ্যাটার্জি বলেন, “প্রতিনিয়ত সমাজে হিংসা বৃদ্ধি পাচ্ছে। হজরত মুহাম্মাদ(সঃ)-এর শান্তির বানী সমাজে ছড়িয়ে দিতে হবে। তিনি শুধু মুসলিমদের নেতা ছিলেন না, তিনি হলেন সবার আদর্শ। তিনি সারা পৃথিবীতে শান্তির বার্তা দিয়েছেন।” পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, “যে দেশের প্রধানমন্ত্রীর হাতে মুসলিমদের রক্ত লেগে আছে। যিনি মনে করেন মুসলিমরা এই দেশের নাগরিকই নয়। সেই দেশে এই চ্যালেঞ্জ থাকবে। এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে মুহাম্মাদ(সঃ)-ই আমাদের অনুপ্রেরণা।” বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও সাংবাদিক নুরুদ্দিন শাহ বলেন, “ধীরে ধীরে মানুষের কাছে সব কিছুই যেন কঠিন হয়ে উঠছে। আমাদের সমস্যা হচ্ছে আমরা সবটাই চরম ভাবে গ্রহণ করি। ফলে তারা হতাশায় ভুগছে। কিন্তু হজরত মুহাম্মাদ(সঃ) শিক্ষা দিয়েছেন যে, জীবনে জয়-পরাজয়, সুখ-দুঃখ থাকবে। তবে সমস্ত কিছুকেই সহজ ভাবে গ্রহণ করতে হবে। যদি মহা বিজয় আসে তাহলেও সেটাকে সহজ ভাবে নাও। আবার যদি চরম বিপর্যয়ও সামনে আসে তাহলেও সেটাকে সহজ ভাবে গ্রহণ করে সমাধান করার চেষ্টা করতে হবে। মুহাম্মাদ(সঃ)-এর এই বার্তা সকলের কাছে পৌছে দিতেই আমাদের আজকের এই অনুষ্টান।”
এছাড়াও উক্ত সভায় উপস্থিত ছিলেন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়য়ের প্রফেসর আয়াতুল্লাহ ফারুক মোল্লা। তিনি বলেন, “বিশেষ করে যুব সমাজের উদ্দেশ্যে বলব বর্তমান পরিস্থিতিতে সঠিক পথ পেতে আমাদের প্রথমেই মুহাম্মাদ(সঃ)-এর সম্পূর্ণ জীবনিটা একবার আমাদের পড়ে নেওয়া উচিৎ। আমরা তো অনেক নোবেল, নাটক পড়েছি। সেখানে যেমন উত্থান-পতন, জয়-পরাজয়, সুখ-দুঃখ, সমস্যা-সমাধান আছে। তেমনই ভাবে মুহাম্মাদ(সঃ)-এর জীবনেও তা ছিল। আমাদের দেখতে হবে তিনি কিভাবে তার সমাধান করেছিলেন।” এছাড়াও এদিনের সভা থেকে জামাআতে ইসলামী হিন্দের উত্তর ২৪ পরগণার সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, “এক শ্রেণীর মানুষ নিজেদের স্বার্থে সমাজে হিংসা-বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলির অবস্থা এই যে, কেউ তাদের একজনকে হত্যা করলে তারা ৫ জনকে না হত্যা করা পর্যন্ত থামছে না। দেশের অবস্থা এতটাই খারাপ যে, মেয়েদের ধর্ষণের পর হত্যা করে তাদের লাশ পর্যন্ত জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আসলে এই সমস্যার আসল কারণ হচ্ছে মানুষ আল্লাহর নির্দেশ ভুলে তাদের নিজেদের মত জীবনের লক্ষ্য ঠিক করে নিয়েছে। যদি মানুষের লক্ষ্য উদ্দেশ্য এক হয় তাহলে এই সংঘাত বন্ধ হবে।”