টিডিএন বাংলা: আবু সিদ্দিক হালদারকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে মনে করে আইএসএফ। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট জানিয়েছে,”দক্ষিণ ২৪ পরগণার ঢোলাহাট থানায় আবু সিদ্দিক হালদার নামে এক যুবককে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আইএসএফ চেয়ারম্যান ও বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকী। তিনি আজ ঐ যুবকটির জানাজায় সামিল হয়েছিলেন। তিনি বলেন, আবু সিদ্দিক আইএসএফের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে পুলিশের নির্মম অত্যাচারে প্রাণ হারালো যুবকটি। তাছাড়া, পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁকে ধর্মীয় অবমাননারও শিকার হতে হয় বলে নওসাদ সিদ্দিকী অভিযোগ করেছেন।”
বিবৃতিতে দলটি উল্লেখ করেছে,”উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে চুরির অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গিয়ে পুলিশী হেফাজতে প্রচন্ড মারধর করা হয়। তারই জেরে কলকাতার এক হাসপাতালে গতকাল তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর বয়স হয়েছিল মাত্র ২১ বছর। মা, বাবার একমাত্র সন্তান। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী।”
আইএসএফ প্রেস বিবৃতিতে বলেছে,”এই ঘটনা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ করে দিচ্ছে এই রাজ্যে আইনের শাসন বলতে আর কিছু নেই। আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি বেশ কিছুদিন ধরে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে গুজব ছড়িয়ে গণপিটুনি চলছে। তাতে ১২ জন প্রাণও হারিয়েছেন। এতগুলি গণপিটুনি ঘটনার পরও প্রশাসনিক স্তরে কোন হেলদোল নেই। এখন ফের পুলিশী হেফাজতে যুবককে পিটিয়ে মেরে ফেলা হল। সবথেকে আশ্চর্যের বিষয়, যাদের বাড়িতে চুরির অভিযোগে যুবকটিকে গ্রেপ্তার করা হয়, যুবকটি সেই বাড়িরই একজন সদস্য। অথচ মিথ্যা অভিযোগে পুলিশ তাঁকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল। উল্লেখ্য, গতবছর বারুইপুর পুলিশের হেফাজতে চারজনের মৃত্যু হয়েছিল।”
দলটি আরও বলেছে,’ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছে। দলের চেয়ারম্যান বলেছেন, আমরা মনে করি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গকে আরেকটি উত্তর প্রদেশ তৈরি করতে উঠেপড়ে লেগেছেন। পশ্চিমবঙ্গ এখন দেশের নয়া লিঞ্চিংস্তান। বাগাড়ম্বর প্রিয় মুখ্যমন্ত্রী এই ব্যাপারে মুখে কুলুপ এঁটেছেন। এই ঘটনা অন্য রাজ্যে ঘটলে এতক্ষণ হইচই পড়ে যেত। পরিতাপের বিষয়, এতগুলি গণপ্রহারের ঘটনা ঘটে গেল, এখন ফের পুলিশী অত্যাচারে মৃত্যু, অথচ এই নিয়ে কোন শোরগোলও উঠছে না। এই মৃত্যুর ঘটনার আমরা নিরপেক্ষভাবে বিচারপতির নেতৃত্বাধীন উচ্চ পর্যায়ের বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবী জানাচ্ছি ও দোষীদের কঠোর শাস্তিরও দাবী করছি। তার কারণ পুলিশ কর্তা মিথ্যা বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, পুলিশী হেফাজত থেকে ছাড়ার সময় মেডিকেল রিপোর্টে সম্পূর্ণ সুস্থ বলে সার্টিফিকেট ছিল। অথচ থানা থেকে বেরোনোর পর ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে আবু সিদ্দিকির সারা শরীরে মারের চোটে রক্ত জমা বেঁধে আছে। শরীরের অভ্যন্তরে রক্তক্ষরণ হয়েছে। এছাড়া, আনিস খান হত্যা নিয়ে প্রহসনমূলক তদন্তের কথাও আমাদের মনে আছে। মৃতের পরিবারকে পর্যাপ্ত পরিমানের আর্থিক ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা ও পরিবারের একজনের চাকরির দেবারও দাবী জানাচ্ছি। এই অবাঞ্ছিত ঘটনা বন্ধ করতে রাজ্য বিধানসভায় কঠোর আইন প্রণয়নের জন্য আইএসএফ দাবী জানাবে।’