Highlightরাজ্য

“রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই কী মুখ্যসচিবের বদলি-নির্দেশ?” প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের

টিডিএন বাংলা ডেস্ক: গতকাল কলাইকুণ্ডায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ইয়াস নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আলাদা সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন ইয়াসের প্রভাবে রাজ্যের ক্ষয়ক্ষতির হিসাব। দীঘা ও সুন্দরবন উন্নয়নের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার ওই প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর অনুপস্থিতি ঘিরে দিনভর সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনা করেন যাবতীয় বিজেপি নেতারা। এর পরেই ৩১ মে, সকালে দিল্লিতে রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নর্থ ব্লকে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেয় কেন্দ্র। মুখ্যসচিবকে অব্যহতি দিতে রাজ্যকে চিঠি লেখে কেন্দ্র। উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই রাজ্যের মুখ্যসচিব হিসাবে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মেয়াদ বৃদ্ধি করার জন্য কেন্দ্রকে প্রস্তাব পাঠায় রাজ্য। সেই প্রস্তাবে সম্মতিও জানায় কেন্দ্র। তারপরেও কেন এই নির্দেশ?

তৃণমূলের অভিযোগ, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। এ প্রসঙ্গে নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও একই অভিযোগ করতে শোনা যায়। তিনি বলেন,”প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আগেও ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন,প্রত্যেক বৈঠকে হাজির থেকেছি। বৈঠকের পর রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই কী মুখ্যসচিবের বদলি-নির্দেশ?বাংলায় হার হজম করতে পারেননি বলেই লাগাতার প্রতিহিংসা। নেতাজির অনুষ্ঠানেও একইরকম পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছিল। বাংলার স্বার্থে আমি সবকিছু করতে পারি।মুখ্যসচিবের ভুলটা কী হয়েছে? রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা না করেই কীভাবে বদলি-নির্দেশ দিল কেন্দ্র? ৩১ মে মুখ্যসচিবের অবসরের কথা ছিল। করোনার কারণে আমরা তাঁর ৩ মাসের মেয়াদ বৃদ্ধির অনুরোধ জানাই। কেন্দ্র আমাদের অনুরোধ মেনে মেয়াদ বৃদ্ধির নির্দেশ দেয়।অসাংবিধানিক ভাবে মুখ্যসচিবকে বদলি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

এদিন ঘূর্ণিঝড় তকতের পরে গুজরাতের প্রশাসনিক বৈঠকে কেন বিরোধী দলনেতাকে ডাকা হয়নি তা নিয়েও প্রশ্ন করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন,”আবহাওয়া খারাপ থাকায় প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিয়ে বেরিয়ে আসি। তাহলে আমার দোষ কোথায়? প্রধানমন্ত্রী সংসদে কেন বিরোধীদের বলতে দেন না। ২ সপ্তাহ আগে গুজরাতে কেন প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে বিরোধী নেতা ছিলেন না। অথচ ওড়িশার দুর্যোগ বৈঠকে কেন ছিলেন বিরোধী দলনেতা? ৩ বার প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিয়ে আমি দিঘায় যাই। গতকাল পরিকল্পনা করে কয়েকটা ফাঁকা চেয়ার রাখা হয়, যাতে আমি না বসি। যাঁরা বৈঠকে আসার কথা নয়, তাঁরা কেন ছিলেন?”

মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন,”আগে বলা হয়েছিল, শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক হবে। পরে দেখা গেল রাজ্যপাল, বিরোধী দলনেতা সবাই আছেন। দেখা গেল বিজেপির সবাই রয়েছে, আমি একা।আমি মুখ্যসচিবকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর হাতে ক্ষতির খতিয়ান তুলে দিই।”

পাশাপাশি শুক্রবারের ওই প্রশাসনিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্যও দীর্ঘক্ষণ তাঁকে অপেক্ষা করতে হয় বলেও অভিযোগ করেন মমতা। তিনি বলেন,”ঘূর্ণিঝড়-বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাওয়ার কর্মসূচি কাটছাঁট করতে হয়। এটিসি থেকে জানানো হয় প্রধানমন্ত্রীর কপ্টার নামবে। আমাদের হেলিকপ্টার প্রায় ২০ মিনিট আকাশে চক্কর কাটে। প্রায় ১৫ মিনিট পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ১ মিনিটের জন্য দেখা করতে চাই।এসপিজি জবাব দেয়, একঘণ্টা পর বলুন, এখন কিছু হবে না। তারপর দীর্ঘক্ষণ আমাদের অপেক্ষা করতে হয়।”

শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দপ্তরের বিরুদ্ধে সংবাদমাধ্যমে অসত্য খবর দেওয়ার অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,”সংবাদ মাধ্যমে অসত্য খবর দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দপ্তর। আমার কর্মসূচি ঘোষণার পর প্রধানমন্ত্রীর সফরের কথা ঘোষিত হয়।”

Related Articles

Back to top button
error: