HighlightNewsদেশ

প্রয়াত শরদ যাদব; দিল্লির বাসভবনে শেষ দর্শনের জন্য রাখা হয়েছে মরদেহ; আগামীকাল শেষকৃত্য

টিডিএন বাংলা ডেস্ক: প্রয়াত শরদ যাদব। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন ৭৫ বছর বয়সী প্রাক্তন জেডিইউ সভাপতি ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। দিল্লির ছাতারপুরে তাঁর বাসভবনে শেষ দর্শনের জন্য মরদেহ রাখা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, রাহুল গান্ধী, হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টর তাঁর বাসভবনে পৌঁছে তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। আগামীকাল হোশাঙ্গাবাদের বাবাই তহসিলের আঁখমাউ গ্রামে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
এদিন তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়ে অমিত শাহ বলেন, আমাদের মধ্যে শরদ যাদবজির অনুপস্থিতি দেশের জনজীবনের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।শরদ যাদবের পরিবারের সঙ্গেও দেখা করেন অমিত শাহ।
শরদ যাদবের শেষ দর্শনের জন্য পৌঁছেছেন রাহুল গান্ধী। পরিবারকে সান্ত্বনা দেন রাহুল। তিনি বলেন, আমি শরদজির কাছ থেকে রাজনীতি সম্পর্কে অনেক কিছু শিখেছি।
হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টর প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং জেডিইউ নেতা শরদ যাদবকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
শরদ যাদবের মরদেহ দিল্লির ছাতারপুরে তাঁর বাসভবনে রাখা হয়েছে। ১৪ জানুয়ারি হোশাঙ্গাবাদের বাবাই তহসিলের আনখমাউ গ্রামে তাঁকে দাহ করা হবে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দিল্লির একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন প্রাক্তন জেডিইউ সভাপতি শরদ যাদব। রাত ১১.৪৫ মিনিটে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর মৃত্যুর খবর জানান তাঁর মেয়ে সুভাষিনী যাদব। টুইটে সুভাষিনী লেখেন,’বাবা আর নেই। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। দিল্লির ছাতারপুরে তাঁর বাসভবনে শেষ দর্শনের জন্য মরদেহ রাখা হয়েছে।’

উল্লেখ্য, শরদ যাদব বিহারের মাধেপুরা আসন থেকে চারবার সাংসদ হয়েছেন। তিনি জনতা দল ইউনাইটেডের (জেডিইউ) সভাপতির পাশাপাশি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও হন। প্রাক্তন মন্ত্রীর স্বাস্থ্যের অবনতি হওয়ায় তাঁকে গুরুগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের তরফে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছে, শরদ যাদবকে ইমারজেন্সিতে অজ্ঞান অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। পরীক্ষায়, তাঁর কোনো পালস বা রেকর্ডযোগ্য রক্তচাপ ছিল না। এসিএলএস প্রোটোকলের অধীনে তাঁর উপর সিপিআর করা হয়। সর্বাত্মক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি এবং রাত ১০:১৯ নাগাদ তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। আমরা তাঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করছি।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, রাজনাথ সিং, রাহুল গান্ধী, নীতীশ কুমার, লালু যাদব, বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব, বিরোধীদলীয় নেতা বিজয় সিনহা সহ একাধিক নেতা তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন।

শারদ যাদব লালু প্রসাদ যাদব এবং নীতীশ কুমার উভয়ের সাথেই ছিলেন। নীতীশ কুমারের সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পর্কের অবনতি হওয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন শরদ যাদব। গুরুতর অসুস্থ থাকায় তাঁর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডও অনেকটা কমে গিয়েছিল।

শারদ যাদবের মৃত্যুতে গভীরভাবে শোক প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইট করে লেখেন,”তাঁর দীর্ঘ জনজীবনে তিনি নিজেকে একজন সংসদ সদস্য এবং মন্ত্রী হিসাবে আলাদা করেছেন। তিনি ডক্টর লোহিয়ার আদর্শ দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত ছিলেন। আমি সবসময় আমাদের মধ্যে হওয়া কথোপকথন মনে করব। তাঁর পরিবার ও ভক্তদের প্রতি সমবেদনা। শান্তি।”
লালু যাদব শোক প্রকাশ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও বার্তা পোস্ট করেছেন। ওই ভিডিওতে তিনি বলেন, “আমি এখন সিঙ্গাপুরে আছি এবং শরদ ভাইয়ের চলে যাওয়ার দুঃখজনক খবর পেয়েছি। নিজেকে খুব অসহায় লাগছে। আসার আগে আমাদের দেখা হয়েছিল এবং সমাজতান্ত্রিক ও সামাজিক ন্যায় ধারার প্রেক্ষাপটে আমরা অনেককিছু ভেবেছিলাম। শরদ ভাই… এভাবে বিদায় জানাতে চাননি। আন্তরিক শ্রদ্ধাঞ্জলি!”
বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার টুইটারে লেখেন, “প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শরদ যাদবের মৃত্যু দুঃখজনক। শরদ যাদবজির সঙ্গে আমার খুব গভীর সম্পর্ক ছিল। তাঁর মৃত্যু সংবাদে আমি শোকাহত ও মর্মাহত। তিনি একজন শক্তিশালী সমাজতান্ত্রিক নেতা ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। তাঁর আত্মা শান্তিতে বিশ্রাম পাক।”

রাহুল গান্ধী লিখেছেন, “শরদ যাদবজি সমাজতন্ত্রের প্রবক্তা হওয়ার পাশাপাশি বিনয়ী প্রকৃতির ব্যক্তি ছিলেন। তাঁর কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। আমি তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। দেশের জন্য তাঁর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।”
শরদ যাদবের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা বলেন, “আমি প্রবীণ রাজনীতিবিদ, প্রাক্তন সাংসদ শরদ যাদবের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করছি। তিনি ছিলেন অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী একজন মহান সমাজতান্ত্রিক নেতা, যিনি সুবিধাবঞ্চিত ও শোষিতদের বেদনা দূর করতে তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তার মৃত্যু সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের জন্য একটি বড় ক্ষতি।”
শরদ যাদবের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন সিপিআইএম-এর রাজ্য সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম। তিনি বলেন, “ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাজনীতির ক্ষেত্রে স্তম্ভ ছিলেন,ওনার মৃত্যুতে আমি শোকাহত।”

Related Articles

Back to top button
error: