HighlightNewsদেশ

দাঁড়িয়ে থাকা মাল গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা খায় করমন্ডল এক্সপ্রেস, তৃতীয় ট্র্যাকে লাফিয়ে পড়ে বেশ কয়েকটি বগি; তাদের সঙ্গে ধাক্কা খায় বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট-ব্যাখ্যা রেলওয়ে বোর্ডের

টিডিএন বাংলা ডেস্কঃ ২ জুন সন্ধ্যায় ওড়িশার বালাসোরে কীভাবে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটল তার ব্যাখ্যা দিয়ে বিস্তারিত ভাবে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে রেলওয়ে বোর্ড। বোর্ড জানিয়েছে, তিনটি ট্রেন নয়, শুধুমাত্র একটি ট্রেন, করমন্ডেল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার শিকার হয়। করমন্ডল এক্সপ্রেস ট্র্যাকে দাঁড়ানো একটি পণ্যবাহী ট্রেনের সাথে ধাক্কা খায়, এরফলে করমন্ডলের বেশ কয়েকটি বগি তৃতীয় ট্র্যাকে লাফিয়ে পড়ে। এরপর, বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট তৃতীয় ট্র্যাকে পড়ে থাকা করমন্ডলের বগিগুলিতে ধাক্কা দেয়।
রেলওয়ে বোর্ড জানিয়েছে, যে লাইনে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে সেখানে গতিসীমা প্রতি ঘন্টায় ১৩০ কিলোমিটার এবং উভয় ট্রেনই একই গতিতে চলছিল। সিগন্যালে সমস্যা হওয়ায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। দুর্ঘটনায় ২৭৫ জন মারা গেছেন এবং ১ হাজার জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।


রেলওয়ে বোর্ডের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, ২ জুন সন্ধ্যায়, শালিমার-চেন্নাই সেন্ট্রাল করোমন্ডল এক্সপ্রেস চেন্নাই থেকে হাওড়া যাচ্ছিল। অন্যদিকে, হাওড়া থেকে আসছিল বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। করোমন্ডল এক্সপ্রেস লুপ লাইনে সবুজ সংকেত পেয়েছিল যেখানে পণ্য ট্রেনটি দাঁড়িয়ে ছিল। এর পরেই মাল ট্রেনের সঙ্গে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের সংঘর্ষ হয়। পণ্যবাহী ট্রেনে লোহা বোঝাই ছিল, সেই কারণেই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।
অপরদিকে, করোমন্ডেল এক্সপ্রেসের কয়েকটি বগি পণ্যবাহী ট্রেনে ধাক্কা খেয়ে তৃতীয় ট্র্যাকে পড়ে যায়। এর পরে, একই ট্র্যাকে আসা বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের করমন্ডলের বগিগুলির সাথে সংঘর্ষ হয়।
রেলওয়ে বোর্ড আরও জানিয়েছে, করমন্ডল এক্সপ্রেস ১২৮ কিমি প্রতি ঘন্টা গতিতে চলছিল এবং অন্য একটি যাত্রীবাহী ট্রেন ১২৬ কিমি প্রতি ঘন্টা গতিতে চলছিল। এই লাইনে ট্রেনের গতিসীমা প্রতি ঘন্টায় ১৩০ কিমি, তাই দুটি ট্রেনের কোনোটিই অতিরিক্ত গতিতে চলেনি। করমন্ডল এক্সপ্রেসকে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছিল। সবুজ সংকেত বলতে চালককে বোঝানো হয় যে সামনের পথ পরিষ্কার এবং সে তার সর্বোচ্চ গতিতে এগিয়ে যেতে পারে।


বোর্ড জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সিগন্যালে সমস্যার কারণেই এমনটি ঘটেছে। এই বিষয়ে বেশি কিছু বলা খুব তাড়াতাড়ি করা হয়ে যাবে। তদন্তের পরই বিস্তারিত তথ্য বেরিয়ে আসবে, এরপরই দাবি নিয়ে কিছু বলা যাবে। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবও বলেছেন, ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং পরিবর্তনের কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে।
রেলওয়ে বোর্ডের সদস্য জয়া ভার্মা সিনহা জোর দিয়ে বলেছেন, শুধুমাত্র একটি ট্রেন (করমন্ডল এক্সপ্রেস) দুর্ঘটনার মুখোমুখি হয়েছিল, তিনটি নয়। যেমন অনুমান করা হচ্ছে। বালাসোর বহনাগা বাজার স্টেশনের কাছে দুর্ঘটনাটি ঘটে। এটি একটি চার লাইনের স্টেশন, যার কেন্দ্রে দুটি প্রধান লাইন এবং এর চারপাশে দুটি লুপ লাইন রয়েছে। পণ্যবাহী ট্রেনগুলো লুপ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে।


একইসঙ্গে, রেলওয়ে বোর্ড বলেছে, আমাদের হেল্পলাইন নম্বর ১৩৯ উপলব্ধ রয়েছে। এটি কোনো কল সেন্টার নম্বর নয়, আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মানুষের ফোন কলের উত্তর দিচ্ছেন। আমরা যতটা সম্ভব মানুষের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি। আহত বা নিহতদের পরিবারের সদস্যরা আমাদের ফোন করতে পারেন। আমরা কলকারীকে তার পরিবারের সদস্যের(যিনি ট্রেনে ছিলেন) সঙ্গে দেখা করতে সহায়তা করব ।

Related Articles

Back to top button
error: