পবিত্র কাবা শরীফের আজকের জুমার খুতবা প্রদান করলেন বিশিষ্ট শায়খ ড. আবদুল্লাহ আল জুহানি, ফিলিস্তিন ইস্যুতে নীরব!
সারওয়ার হাসান: পবিত্র হজ পালনের জন্য গোটা পৃথিবী থেকে হাজী সাহেবগন মক্কায় প্রায় পৌঁছে গিয়েছেন। গোটা পৃথিবী তাকিয়ে ছিল আজকের জুমার খুতবা শুনার জন্য। মানরাতাল হারামাইন ওয়েবসাইট থেকে লাইভ হয়েছে । বিভিন্ন ভাষায় ট্রান্সলেটও হয়েছে। তাই খুবি মনোযোগ দিয়ে বিশিষ্ট আলেমের জুম্মা খুতবা শুনছিলাম । প্রত্যেকটি শব্দ অনুধাবন করার চেষ্টা করছিলাম । তিনি তার বক্তব্যের প্রথম অংশে হজের গুরুত্ব, ইসমাইল (আ:), মা হাজেরা ও ইব্রাহিম (আ:) এর ঘটনা শুনালেন যা প্রত্যেক হাজীগন জানেন। তিনি তাকওয়া অর্জনের উপর জোর দেন। তিনি আরো বলেন, মাবরুর হজ পালন করতে গেলে বা হজ কবুল করাতে হলে ধৈর্য, সহ্য ক্ষমতা অর্জন করতে হবে। পারস্পরিক গণ্ডগোল ও হৈ হুল্লোড় থেকে বাঁচতে হবে। বাড়ি ফিরে তাকওয়া পূর্ন জীবন যাপন করতে হবে, ইত্যাদি ইত্যাদি।
বক্তব্যের দ্বিতীয় অংশে তিনি সৌদি সরকারের দীর্ঘ প্রসংশা ও এই সরকারের শাসকদের জন্য তাদের বংশধরদের জন্য এবং হাজীদের জন্য দোয়া করলেন।
প্রশ্ন হলো এত গুরুত্বপুর্ন সময় যখন গোটা বিশ্বের ক্রিম লেবেলের মুসলিমগন একত্রিত হয়েছেন, সেখানে বিশ্বের সব থেকে বড় অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে একটা শব্দ ও উচ্চারণ করা গেলনা ? ইসরাইল অন্যায় ভাবে ফিলিস্তিনি মা বোন , শিশুদের হত্যা করছে তার প্রতিবাদ করা গেলনা ? অন্তত ফিলিস্তিনি নিরীহ মহিলা শিশুদের হয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করা গেলনা ? বরং বক্তব্যের একপর্যায়ে তিনি বলেন, হজকে মাবরুর করানোর জন্য হারামাইন উলামা কমিটির পক্ষ থেকে হজে এসে ঐক্যবদ্ধ কোনো রাজনৈতিক স্লোগান, প্রতিবাদকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে ।
মনটা ভীষণ ভারাক্রান্ত। ব্যাকুল মনকে সান্তনা শুধু একটাই এই ধরনের বিষয় নতুন নয়। যুগ যুগ ধরে তথাকথিত আলেমগণ সরকারের কাছে নিজেদের টিকি বিক্রি করেছে। সুচতুর ভাবে সুকৌশলে রাজনীতিকে ইসলাম থেকে বাদ দিয়ে শুধু কয়েকটি ধর্মীয় আচার আচরণে আবদ্ধ করেছে । নিজেদের মোটা অঙ্কের বেতন , খ্যাতি আরাম আয়েশ এর জন্য শাসকের কাছে মস্তক অবনত করেছে। এই ধরনের আলেম আজ মুসলিম সমাজের বিভিন্ন সংগঠনের মাথায় বসে দিব্যি শাসকের সাথে হাত মিলিয়ে হিকমতের দোহাই দিয়ে চটি চেটে চলেছে । পরিবারের চাকরি, ব্যাবসায়িক কন্ট্রাক্ট, হাতে গরম কিছু অর্থ ইত্যাদির বিনিময়ে সু-কৌশলে চতুরতার সাথে শাসকের হাতে হাত মিলিয়ে এই সমস্ত সংগঠনের রুহ কে বিক্রি করে দিচ্ছে । এদের অবস্থা দেখে মনে হয় এরা কখনও ইমাম মেহেদীর সহযোগী হবে না বরং দাজ্জালের অত্যাচার থেকে বাঁচতে দাজ্জালের হাতে বাইয়াত করবে ।
আলহামদুলিল্লাহ এমন উলামা ও মুসলিম সমাজের নেতাও বিদ্যমান আছেন যারা শাসকের চোখে চোখ রেখে প্রতিবাদ করে, আন্দোলন সংগঠিত করে , কোনো কিছুর পরোয়া না করে অবিরাম গতিতে এগিয়ে চলে হুসেনের কারবালার দিকে।