টিডিএন বাংলা ডেস্ক: রবিবার ব্রিগেডের মঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি যখন একাধিক ইস্যুতে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একের পর এক আক্রমণ করে যাচ্ছেন, কটাক্ষ করে যাচ্ছেন প্রায় সেই সময়ে শিলিগুড়ির সভা থেকে মোদির আক্রমণের পাল্টা জবাব দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মোদীর ব্রিগেড নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি মমতা। তিনি বলেন,”মোদী যখন ফাঁকা ব্রিগেডে, আমি তখন রাস্তায়। কারণ রাস্তাই আমাকে রাস্তা দেখায়।” শুধু তাই নয়, ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রীর করার সমস্ত প্রতিশ্রুতি নিছক মিথ্যে বলে কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন,”মোদীর ভোটের আগে উজ্জ্বলা, ভোটের পরে জুমলা।”
রবিবার পেট্রোপণ্যের তথা রান্নার গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে মিমি চক্রবর্তী, নুসরত জাহান, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, দোলা সেন-দের পাশে নিয়ে হাজার হাজার সমর্থকদের সাথে পদযাত্রা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর শিলিগুড়ির সফদর হাসমি চকে আয়োজিত সভা থেকে নির্বাচনী লড়াই প্রসঙ্গে বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন,”এ বারের নির্বাচন অস্তিত্ব রক্ষার নির্বাচন। অস্তিত্ব রক্ষা করতে না পারলে বাংলা ভাগ করবে বিজেপি।” পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর বঙ্গ সফর নিয়ে কটাক্ষ করে মমতা বলেন,”প্রধানমন্ত্রী রাজ্যে শুধু কুৎসা করতে আসেন। ব্রিগেডে বাংলা নিয়ে কথা বলার আগে ওঁর উচিত রান্নার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে জবাব দেওয়া। কেন গ্যাসের দাম বাড়ছে? পেট্রল-ডিজেলের দাম বাড়ছে? মোদীকে আগে সেই জবাব দিতে হবে। রান্না ঘরে আগুন লাগালে মা-বোনেরা ছেড়ে কথা বলবেন না।”
একদিকে যখন ব্রিগেডের সভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলায় আসল পরিবর্তন আনার কথা বলছেন ঠিক সেইসময় শিলিগুড়ির সভা থেকে তার জবাব দিয়ে মমতা বলেন,”বাংলায় পরিবর্তন করতে পারবেন না। এ রাজ্যে তৃণমূল সরকারই থাকবে। তার আগে দিল্লিতে পরিবর্তন হয়ে যাবে।” তিনি আরো বলেন,”যখন করোনার প্রকোপ চলছিল, তখন ভয়ে ঘরে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। আমি তখন সারা রাজ্যে ঘুরেছি, হাসপাতালে গিয়েছি। আর এখন কোভিডের টিকায় মোদীর বড় বড় মুখ দেওয়া হচ্ছে। আসলে সবই জুমলা। একদিকে রেল, এয়ার ইন্ডিয়া, কোল ইন্ডিয়া বিক্রি হয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে উজ্জ্বলা যোজনায় দুর্নীতি হচ্ছে। মোদীর ভোটের আগে উজ্জ্বলা, ভোটের পরে জুমলা।”
একদিকে ব্রিগেডের সভায় যখন বারবার রাজ্যের নারী নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে তখন শিলিগুড়ির সভা থেকে তার জবাব দিয়ে মমতা বলেন,”বিহার, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশের থেকে অনেক বেশি সুরক্ষিত বাংলার মহিলারা।”
শুধু তাই নয়, কেন্দ্রের কিষান নিধি প্রকল্প, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা ইত্যাদি নিয়ে যখন বিজেপি নেতা নেত্রীরা রাজ্যের শাসক দলকে আক্রমণ করে, তখন এর জবাবে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন,”কন্যাশ্রী, রূপশ্রী রাজ্য সরকার দিয়েছে। দরকার হলে এ বার পাকাবাড়িও বানিয়ে দেবে। আপনার দেওয়া পাকাবাড়ির দরকার নেই।”
প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করার পর এদিন প্রথমবার উত্তরবঙ্গ সফরে এসে লোকসভা নির্বাচনের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন মূল নেত্রী বলেন,”লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি বলেছিল, সব চা বাগান খুলে দেবে। আপনারা ভোট দিয়েছেন। কিন্তু একটাও চা বাগান খোলেনি। এখন রাস্তা তৈরি করতে এসেছে। রাস্তা তো তৈরি হয়েই গিয়েছে, নতুন করে কী রাস্তা তৈরি করবে?”
