জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধের দাবিতে নিউইয়র্কে আন্দোলনে নামলেন ৭৫ হাজার বিক্ষোভকারী
টিডিএন বাংলা ডেস্ক: জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার বন্ধের দাবিতে নিউইয়র্কের ম্যানহাটানের রাস্তায় প্রায় ৭৫ হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) থেকে শুরু হতে যাওয়া জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে যোগ দিতে বিশ্ব নেতারা নিউইয়র্কে পৌঁছাতে শুরু করেছেন। ডয়চেভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতিসংঘের সম্মেলন ঘিরে ‘ক্লাইমেট গ্রুপ’ সারা বিশ্বে সপ্তাহব্যাপী ৫০০র বেশি বিক্ষোভের পরিকল্পনা করেছে বিক্ষোভকারীরা। যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া ও ভারতসহ ৫৪ দেশে এসব বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হবে। রোববারের বিক্ষোভটি তার সূচনা ছিল। সারা বিশ্বের প্রায় ৭০০ সংগঠনের কর্মীরাও বিক্ষোভে উপস্থিত হয়েছিলেন।
১৭ বছর বয়সি মার্কিন বিক্ষোভকারী এমা বারেত্তা মার্কিন নেতৃবৃন্দদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে জনগণের শক্তি আছে, যে শক্তিটা আপনাদের আগামী নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য প্রয়োজন। আপনারা যদি ২০২৪ সালের নির্বাচনে জিততে চান, আপনারা যদি আমাদের প্রজন্মের রক্ত আপনাদের হাতে দেখতে না চান, তাহলে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধ করুন।’ সবুজ অবকাঠামো নির্মাণ ও ক্লিন এনার্জি খাতে প্রচুর অর্থ বরাদ্দ দিলেও জীবাশ্ম জ্বালানির উপর যুক্তরাষ্ট্রের নির্ভরতা কমাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন যথেষ্ট পদক্ষেপ নেননি বলে মনে করেন অনেক সমালোচক।
এদিকে, মার্কিন কংগ্রেসওম্যান আলেক্সান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্তেজ বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে বলেন, ‘যা আমাদের মেরে ফেলছে তা থামানোর দাবিতে সারা বিশ্বের মানুষেরা রাস্তায় নেমেছেন। আমাদের একটা শক্ত বার্তা পাঠাতে হবে, সেটা হচ্ছে, আমাদের মধ্যে অনেকে এখন থেকে ৩০, ৪০, ৫০ বছর পরও এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকবেন। তাই আমরা উত্তর হিসেবে না শুনতে চাই না।’
ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত অ্যামেরিকান ইউনিভার্সিটির সমাজবিজ্ঞানী ডানা ফিশার পরিবেশ আন্দোলন নিয়ে গবেষণা করেন। তিনি রোববারের বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে জরিপ চালিয়ে দেখেছেন, জরিপে অংশ নেয়া ৮৬ শতাংশ বিক্ষোভকারী সাম্প্রতিক সময়ে তাপদাহের শিকার হয়েছেন, ২১ শতাংশ বন্যাকবলিত হয়েছেন আর ১৮ শতাংশ খরা দেখেছেন। অনেক বিজ্ঞানী বলছেন, জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর কারণে যে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত হয় তা বিশ্বের তাপমাত্রা বাড়াচ্ছে। সে কারণে সারা বিশ্বে এখন হারিকেন, তাপদাহ, বন্যা, দাবানল ও খরা দেখা যাচ্ছে। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে বিশ্ব অভাবনীয় রকমের উচ্চ তাপমাত্রার সাক্ষী হতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন। সূত্র – দৈনিক ইত্তেফাক