পরপারে পাড়ি দিলেন প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, গবেষক এবং চতুরঙ্গ পত্রিকার সম্পাদক আব্দুর রাউফ

টিডিএন বাংলা ডেস্ক : চির ঘুমের‌ দেশে চলে গেলেন কলকাতার বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, সুবক্তা, চতুরঙ্গ পত্রিকার সম্পাদক, বহু গ্রন্হ প্রণেতা ও কলামনিষ্ট আব্দুর রাউফ। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটায় ইহকাল ত্যাগ করে পরপারে পাড়ি দেন তিনি। কলকাতার পার্কসার্কাস এলাকার ৭ মেহের আলি রোডের বাড়িতেই। হুগলির তারকেশ্বর থানা গয়েশপুর গ্রামের ভূমিপুত্র ছিলেন আব্দুর রাউফ। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল প্রায় ৭৬। জানা গেছে এবছরের এপ্রিল মাস থেকেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। মেহের আলি রোডের বাড়িতেই তাঁর চিকিৎসা চলছিল। এক সময় আনন্দবাজার পত্রিকাতেও কিছু দিনের জন্য চাকুরি করেন তিনি। খুব বেশিদিন নয় তবে রাউফ সাহেবকে জনপ্রিয় করে তোলে‌ সংবাদ প্রতিদিন পত্রিকার উপসম্পাদকীর পাতা। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে তিনি চতুরঙ্গ পত্রকার সম্পাদক ছিলেন। চতুরঙ্গ পত্রিকার সম্পাদনা করেছিলেন ২৬ বছর। একসময় কলকাতার পার্কসার্কাস এলাকার ব্রাইট স্ট্রিট থেকে দিনকাল নামে একটা সাময়িক বাংলা ম্যাগাজিন বের হত, বিশিষ্ট সমাজসেবী ও আমানত ফাউণ্ডেশন-এর কর্ণধার মহম্মদ শাহ আলমের পৃষ্ঠপোষকতায়। ঐ সময় পত্রিকার প্রধান সম্পাদক ছিলেন আব্দুর রাউফ, সম্পাদক ছিলেন কবি সৈয়দ হাসমত‌ জালাল, সাংবাদিক সাদউদ্দিন ছিলেন সহ সম্পাদক। তিনি মৌলানা আজাদ কলেজ ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী ছাত্র ছিলেন।

কালান্তর পত্রিকার সাংবাদিক মুহাম্মদ সাদউদ্দিন তিনি তার ফেসবুকে লেখেন, ” আব্দুর রাউফের সঙ্গে আমার শেষ দেখা কলকাতার পার্কসার্কাস ময়দানে এন আর সি বিরোধী প্রতিবাদ সভায়। অনেক মত বিনিময় হয় সেদিন। মাঝেমাঝে খোঁজ পেতাম ঘনিষ্ঠ জনদের কাছ থেকে। অসুস্হতার কথা শুনে একদিন গিয়েছিলাম। তখন মোটেই ভালো লাগেনি। না, সব সত্যির বড় সত্যি হল, আজ তিনি একেবারেই আমাদের‌ ছেড়ে গেলেন(৯.০৬.২০২২)। তিনি অনেক গ্রন্থ লিখেছেন। বেশ‌কিছু পড়েছি। তাঁর এই মৃত্যুতে একটি যুগের অবসান‌ হল। মৌলানা আজাদ কলেজ ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী ছাত্র আব্দুর রাউফের এই চলে যাওয়াটা আমাদের কাছে একটা শূণ্যতা তৈরি করল।”

আব্দুর রাউফ রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থে কয়েকটি হল, স্বাধীনতা-উত্তর পর্বে পশ্চিমবঙ্গের মুসলমান, মুক্তমনের সঙ্কট, বহুমাত্রিক নজরুল, ভারতের বাংলাভাষী মুসলমান, গণতন্ত্র ও সংখ্যালঘু সমস্যা। সরকারি-বেসরকারি নানা পুরস্কারে তিনি ভূষিত হন। সতন্ত্র চিন্তার অধিকারী ছিলেন আব্দুর রউফ।