Highlightরাজ্য

“নৈরাজ্য চলছে, পুলিশ-প্রশাসন নীরব”; নিজাম প্যালেসের বাইরে ধুন্ধুমার কাণ্ড নিয়ে টুইট রাজ্যপালের

টিডিএন বাংলা ডেস্ক: নারদা কান্ডে রাজ্যের চার নেতা-মন্ত্রীকে গ্রেফতারের ঘটনা নিয়ে দফায় দফায় রণক্ষেত্রের আকার নিয়েছে নিজাম প্যালেস। নিজাম প্যালেস ঘিরে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ নিয়ে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করে একাধিক টুইট করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। টুইটারে তিনি লেখেন, উদ্বেগজনক পরিস্থিতি। মুখ্যমন্ত্রীকে বলব, সাংবিধানিক রীতি অনুসরণ করুন ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করুন। আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ায় পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যেতে দেওয়া হচ্ছে। দুঃখজনক।

এরপর দ্বিতীয় টুইটে রাজ্যপাল লেখেন, সম্পূর্ণ অরাজকতা ও নৈরাজ্য। পুলিশ-প্রশাসন চুপ। আশা করি এই অরাজকতা ও সাংবিধানিক কাটামোর ব্যর্থতার কী প্রভাব হতে পারে, আপনি উপলব্ধি করতে পারছেন। প্রতি মিনিটে পরিস্থিতি বিস্ফোরক হয়ে উঠছে। এখন সময় হয়েছে এই পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণ করা।

এখানেই থেমে যাননি রাজ্যপাল। তৃতীয় টুইটে তিনি লেখেন, সংবাদমাধ্যম ও পাবলিক ডোমেনে দেখতে পেলাম, সিবিআই দফতরে ইট ছোড়াছুড়ি হচ্ছে। করুণা হচ্ছে এটা দেখে যে পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকায়। আইনশৃঙ্খলা পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করতে আপনাকে অনুরোধ করছি।

প্রসঙ্গত, এদিন সকালে নারদ মামলায় ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়কে নিজাম প্যালেসে তুলে নিয়ে গিয়ে অ্যারেস্ট মেমোতে সই করানো হয়। এরপরই নিজাম প্যালেসে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিন ঘন্টা ধরে নিজাম প্যালেসের ভেতরেই থাকেন মুখ্যমন্ত্রী।সূত্রের খবর অনুযায়ী সিবিআইকে তিনি হুঁশিয়ারি দেন, তাঁকে গ্রেফতার করা হোক, তা না হলে তিনি নিজাম প্যালেস ছেড়ে যাবেন না। এদিকে ততক্ষনে নিজাম প্যালেস এর বাইরে ভিড় জমাতে শুরু করেন তৃণমূলের নেতা কর্মী সমর্থকরা। দলীয় পতাকা নিয়ে শুরু হয় স্লোগান।কাতারে কাতারে ভিড় জমা হতে থাকে নিজাম প্যালেসের বাইরে। বাধ্য হয়ে নিজাম প্যালেস এর সামনের রাস্তা বন্ধ করে দেয় পুলিশ। এর ফলে বাইরে উপস্থিত নেতাকর্মীদের সঙ্গে বচসা শুরু হয় উপস্থিত নিরাপত্তা বাহিনীর।

উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা নিজাম প্যালেস চত্বর। অবরুদ্ধ করে দেওয়া হয় এজেসি বোস রোড। নিজাম প্যালেসের গেটের কাছে পরপর ব্যারিকেড বসিয়ে দেওয়া হয়। এতে তৃনমূলের কর্মী-সমর্থকরা এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠেন যে রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁরা। ঘন্টার পর ঘন্টা অবস্থান-বিক্ষোভ এরপর নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বচসা এবং ধাক্কাধাক্কি শুরু হয় তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের। অভিযোগ, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাধ্য হয়ে লাঠিচার্জ করে বাহিনী। এতে আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পাল্টা বাহিনীকে লক্ষ করে ইট-বৃষ্টি শুরু করে তৃণমূল সমর্থকরা। নিজাম প্যালেস এর ভেতরে ছোঁড়া হয় পাথর, বোতল, জুতো। নিজাম প্যালেসের গেট ধরে টানাটানি করে, লাথি মেরে ভেঙে ফেলার চেষ্টা করেন তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা। হামলার মুখে কার্যত পিছু হটতে হয় নিজাম প্যালেসের গেটে মোতায়েন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে রাজ্য ও কলকাতা পুলিশ। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে ধৃত নেতা-মন্ত্রীদের আদালতে পেশ করার জন্য বাইরে নিয়ে আসা অসম্ভব হয়ে পড়ে। বাধ্য হয়ে ভার্চুয়ালি শুনানির জন্য আবেদন জানায় সিবিআই।

Related Articles

Back to top button
error: