HighlightNewsরাজ্যশিক্ষা ও স্বাস্থ্য

যাদবপুরে পড়ুয়ার রহস্য মৃত্যু কান্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যপাল, উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন

নিজস্ব সংবাদ, টিডিএন বাংলা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র স্বপ্নদ্বীপের রহস্য মৃত্যু কান্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন হোস্টেলে সরেজমিনে ঘুরে দেখলেন রাজ্যপাল সিভি আনান্দ বোস। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসরদের সঙ্গে এই নিয়ে কথা বলেন রাজ্যপাল। তিনি মনে করেন, কোনওভাবে ভয় দেখানো এবং হুমকি দেওয়া হয়েছিল স্বপ্নদীপকে, যার ফলে প্রবল মানসিক চাপের মধ্যে ছিলেন তিনি। রাজ্যপাল আশ্বাস দিয়েছেন, তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উঠে আসবে।

হোস্টেলের ছাদ থেকে ‘পড়ে গিয়ে’ স্বপ্নদ্বীপের রহস্য মৃত্যুর ঘটনায় র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ তুলেছেন তার পরিবার। এই মৃত্যু কেবল আত্মহত্যা নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছে এই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। এই মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের পাশাপাশি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ডিন অফ সাইন্স সুবিনয় চক্রবর্তীকে এই কমিটিতে চেয়ারম্যান করা হয়েছে। এই কমিটিতে মোট আটজনের সদস্য রয়েছে। এই কমিটি গঠন হওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গেই তৎপর হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ছাত্রের মৃত্যুর পর, আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার দুপুর ৩:৩০ নাগাদ এই কমিটি একেবারে মূল ঘটনাস্থলে অর্থাৎ যেখান থেকে স্বপ্নদ্বীপ পড়ে গিয়ে নিহত হয় সেই জায়গা পরিদর্শন করলেন তারা। সকাল থেকে এই জায়গাতে সংবাদ মাধ্যমকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।

পরিবারের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়ে যাদবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে স্বপ্নদীপের মৃত্যুর ঘটনায় খুনের অভিযোগ দায়ের করলেন স্বপ্নদীপের বাবা রামপ্রসাদ কুণ্ডু। যাদবপুর থানায় ৩০২ ধারায় খুনের মামলা দায়ের হল একাধিকজনের বিরুদ্ধে। পুলিশসূত্রে খবর, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের আবাসিক ১০ থেকে ১২ জন ছাত্রকে তুলে নিয়ে গিয়ে জেরা করছে পুলিশ। অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে ‘বেআইনি ভাবে’ থেকে যাওয়া প্রাক্তনীদের দিকে। ছাত্রদের একাংশের দাবি, হোস্টেলে ‘র‌্যাগিং’-এর নেপথ্যে রয়েছেন মূলত তাঁরাই। এই প্রাক্তনীরা প্রায়ই হস্টেলে মত্ত অবস্থায় ঝামেলা করেন বলেও অভিযোগ উঠছে।

জানা গিয়েছে, সোমবার থেকে বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু হয়েছে। হস্টেলে জায়গা পাননি স্বপ্নদীপ। এক বন্ধুর সঙ্গে থাকছিলেন। সেখানেই এই ঘটনা। গত বুধবার রাত ১১ টা ৪৫ মিনিট নাগাদ ভারী কিছু পরার শব্দ পেয়ে ছুটে আসেন আবাসিকের অন্যান্য ছাত্ররা। স্বপ্নদীপকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন তারা। ঠিক কি হয়ে ছিল সেদিন স্বপ্নদীপের সঙ্গে? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে ওই হোস্টেলের ছাত্রদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে। ছাত্রদের অনেকেই পুলিশকে জানিয়েছেন, মৃত্যুর আগে স্বপ্নদীপ উদ্ভ্রান্তের মতো আচরণ করছিলেন। বারবার বলছিলেন, ‘আমি সমকামী নই!’ এমনকী, ফোনে নিজের মাকেও বলেছিলেন সেকথা। সেদিন বারবার শৌচাগারে যাচ্ছিলেন ওই ছাত্র। সেই কারণেই গামছা পরে ছিলেন তিনি। তাঁর আচরণে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন অনান্য ছাত্ররাও।

Related Articles

Back to top button
error: