রাজ্য

মাত্র চার ঘন্টায় তুলে দেওয়া হল স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের কার্ড, চিকিৎসা শুরু হল আদিবাসী মহিলার

কৌশিক সালুই, টিডিএন বাংলা, বীরভূম: নুন আনতে পান্তা ফুরায় দিনমজুর আদিবাসী পরিবার। প্রায় দিন কুড়ি আগে বাড়িতে পা পিছলে পড়ে গিয়ে বাঁ পায়ের হাড় ভেঙে যায় এক গৃহবধুর। বেসরকারি নার্সিংহোমে চিকিৎসা করাতে এলে চিকিৎসক প্রায় এক লক্ষ টাকা খরচের কথা শোনায়। কার্যত মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে হতদরিদ্র ওই পরিবারের। প্রশাসনের তৎপরতায় মাত্র চার ঘন্টায় “স্বাস্থ্য সাথী” প্রকল্পে নথিভূক্ত করা হয়। দ্রুত চিকিৎসা শুরু হয় ওই গৃহবধূর।

রীনা মুরমু বয়স ২৬ বছর। বাড়ি বীরভুম জেলার মহম্মদ বাজার ব্লকের হিংলো গ্রাম পঞ্চায়েতের কেন্দ্র পাহাড়ি গ্রামে। দিন কুড়ি আগে বাড়িতেই পা পিছলে পড়ে যান। দিনমজুর পরিবার। সামান্য টাকা জোগাড় করে বৃহস্পতিবার সিউড়ির এক বেসরকারি নার্সিংহোমে চিকিৎসা করানোর জন্য আসেন। সেখানে চিকিৎসক পরীক্ষা করে দেখেন অপারেশন করে ওই মহিলার পায়ের হাড় জোড়া লাগাতে হবে। খরচ প্রায় এক লক্ষ টাকার কাছাকাছি। খরচের পরিমাণ শুনে কার্যত হতভম্ব হয়ে যায় আদিবাসী ওই পরিবার। ওই পরিবার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের “স্বাস্থ্য সাথী” প্রকল্পে নথিভূক্ত ছিল না। ইতিমধ্যেই এদিন বেলা দুটো নাগাদ স্থানীয় তৃণমূল নেতা কালি প্রসাদ বন্দোপাধ্যায় এর মাধ্যমে মন্ত্রী আসিস বন্দোপাধ্যায় এর কাছে বিষয়টির খবর যায়। মন্ত্রী তৎক্ষণাৎ স্থানীয় বিডিও অর্ঘ্য গুহকে জানান। বিডিও তৎক্ষণাৎ গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহ করেন।

ইতিমধ্যে বিষয়টি স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের জেলার আধিকারিকদের কাছে পৌঁছায়। দ্রুত রাজ্যের অনুমোদন নেওয়া হয়। সন্ধ্যেবেলায় বেসরকারি নার্সিংহোমে গিয়ে মহিলার ছবি তুলে বায়োমেট্রিক ছাপ নেওয়া হয়। পুরো বিষয়টি বিডিও তদারকি করেন। সন্ধ্যা ছটা নাগাদ ওই মহিলার হাতে “স্বাস্থ্য সাথী” কার্ড তুলে দেওয়া হয়। আগামী সোমবার ওই মহিলার অপারেশন হবে বেসরকারি হাসপাতালে। রীনা মুরমু বলেন,” স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে আমাদের পরিবারের নাম নথিভুক্ত ছিল না। তাই আমার ভাঙা পায়ের চিকিৎসা করাতে পারছিলাম না। প্রশাসন দ্রুত বিষয়টি জানার পর কয়েক ঘন্টার মধ্যেই স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড এর ব্যবস্থা করে দিয়েছে এবং আমার তাতে চিকিৎসা হবে”।

মহম্মদ বাজার ব্লকের বিডিও অর্ঘ্য গুহ বলেন,” মন্ত্রী আসিস বন্দ্যোপাধ্যায় এর মাধ্যমে বিষয়টি জানার পর মাত্র চার ঘণ্টার মধ্যেই মহিলার হাতে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের আমরা কার্ড তুলে দিয়েছি”।

Related Articles

Back to top button
error: