HighlightNewsআন্তর্জাতিক

ফিলিস্তিনের বদলে ইসরাইলকে রক্ষায় ব্যস্ত আরবরা, চলছে যুদ্ধ বন্ধের নাটক! যুদ্ধ বিরতির আহব্বান প্রত্যাখ্যান ইসরাইলের 

টিডিএন বাংলা ডেস্ক: ইসরাইলের সামরিক বাহিনীর চতুর্মুখী হামলায় বিধ্বস্ত গাজাকে বা তার অধিবাসী ফিলিস্তিনিদের রক্ষা করার পরিবর্তে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে আরব দেশগুলো থেকে ইসরাইলকে লক্ষ করে চালানো বিভিন্ন প্রতিরোধ সংগঠনের হামলাকেই বানচাল করছে আরব দেশগুলো। অর্থাৎ ফিলিস্তিকে রক্ষা করার বদলে ইসরাইলকেই রক্ষা করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে আরব দেশগুলো এবং এই বিষয়ে রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র সহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চলছে যুদ্ধ বন্ধ করা নিয়ে ধারাবাহিক আলোচনা। কিন্তু অনেকেই এই যুদ্ধ বন্ধ করার আলোচনাকে আসলে লোক দেখানো নাটক বলে অভিহিত করেছেন। কারণ এই নিয়ে ২ বার যুদ্ধ বিরতির আহব্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদে বিশাল ভোটে যুদ্ধ বন্ধের প্রস্তাব পাশ হলেও যুদ্ধের নামে ফিলিস্তিনে ভয়ঙ্কর হত্যালীলা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। বিশ্বের অধিকাংশ দেশ যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে। কোটি কোটি সাধারণ জনতা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছে ইসরাইলি গণহত্যার বিরুদ্ধে। এই নিয়ে ২ বার যুদ্ধ বিরতির আহব্বান প্রত্যাখ্যান করে ইসরাইলের নেতানিয়াহু সরকার স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছে তারা গাজা শহর দখল না করা পর্যন্ত কোনো অবস্থায় থামবে না। তারপরেও ইসরাইলের উপরে সর্বাত্মক চাপ সৃষ্টির পরিবর্তে অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা আসলে যুদ্ধ বন্ধের প্রহসন বা নাটক বলে মনে করছেন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।

ফিলিস্তিনের বদলে ইসরাইলকে রক্ষায় ব্যস্ত আরব দেশগুলো!

মার্কিন দৈনিক পত্রিকা ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলীয় ইলাত শহর লক্ষ্য করে ইয়েমেনের হুথি আনসারুল্লাহ যোদ্ধাদের নিক্ষিপ্ত একটি ক্ষেপণাস্ত্র সৌদি আরব ভূপাতিত করেছে। প্রাথমিক ভাবে দাবি করা হয়েছিল পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্র লোহিত সাগরে মোতায়েন মার্কিন সেনারা গুলি করে নামিয়েছে। কিন্তু ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এখন বলছে, পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্রের চারটি মার্কিন সেনারা ভূপাতিত করলেও পঞ্চম ক্ষেপণাস্ত্রটি নামিয়েছে সৌদি আরব। ইয়েমেন থেকে ইসরাইলের সরাসরি দূরত্ব প্রায় ২,২০০ কিলোমিটার এবং হুথি যোদ্ধারা ইসরাইলে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করলে সেটিকে সৌদি আরব ও জর্দানের  আকাশসীমা অতিক্রম করতে হয়।

তবে শুধু সৌদি আরবই নয় জর্দান ও মিশর সৌদি আরবের পূর্বেই এই কাজ শুরু করেছে। সম্প্রতি সিরিয়া থেকে ইসরাইলে নিক্ষিপ্ত বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ভূপাতিত করেছে জর্দান। এছাড়া, গত সপ্তাহে মিশরের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা ইয়েমেন থেকে ইসরাইলে নিক্ষিপ্ত দু’টি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে। এরকম একটি ড্রোন মিশরের তাবা এলাকায় বিধ্বস্ত হলে পাঁচ মিশরীয় নাগরিক আহত হয়। আরব আমিরাত ইসরাইলে হামলা চালানোর জন্য হামাসের সমালোচনা করে ছিল। বেশ কিছু দেশ এখনও পর্যন্ত ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে মরিয়া।এছাড়াও যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরপরই মিশর দাবি করে ছিল তারা ইসরাইলকে আগেই সতর্ক করে দিয়ে ছিল এমন হামলা প্রসঙ্গে। পাশাপাশি কোনো আরব দেশই যাতে এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ না করে তা নিশ্চিত করতে ব্যাপক কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছে ইসরাইল ও তার মিত্ররা।

উল্লেখ্য যে, গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের হামাস যোদ্ধারা ইসরাইলের অভ্যন্তরে ‘আল-আকসা তুফান’ অভিযান চালানোর পর থেকে ইহুদিবাদী সেনারা গাজা উপত্যকার আবাসিক অবস্থানগুলোতে নির্বিচারে পাশবিক বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি স্থলপথে গাজায় অনুপ্রবেশ করেছে ইসরাইলি বাহিনী। এখনও পর্যন্ত ইসরাইলি হামলায় ফিলিস্তিনের প্রায় ১০ হাজার নাগরিক নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ। তবে মনে রাখতে হবে এটা প্রকৃত সংখ্যা নয়। কারণ গাজা শহর প্রায় সম্পূর্ণ ধ্বংস প্রাপ্ত হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে কত মানুষ কত লাশ চাপা পড়ে আছে তার কোনো হিসাব নেই। আর ইসরাইলি হামলা ও অবরোধের কারণে তাদের উদ্ধার করাও সম্ভব হচ্ছে না।

এক দিকে মূহুর্মূহু হামলা অন্যদিকে খাদ্য, পানী, বিদ্যুত, ঔষধ, চিকিৎসা সামগ্ৰীর অভাবে ক্রমাগত মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে গাজার অধিবাসী ফিলিস্তিনিরা। এমতাবস্থায় দাঁড়িয়ে মুসলিম দেশ গুলোর ভূমিকায় সম্পূর্ণ হতাশ হয়ে পড়েছে ফিলিস্তিনিরা। অনেক ফিলিস্তিনিই আরব দেশগুলোর এই ভূমিকাকে বিশ্বাস ঘাতকতা হিসাবে দেখছেন।

 

Related Articles

Back to top button
error: