HighlightNewsদেশ

রাষ্ট্রদ্রোহ আইন দরকার, জানাল আইন কমিশন: বাড়াতে হবে শাস্তিও, অপব্যবহারের অভিযোগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল সুপ্রিম কোর্ট

টিডিএন বাংলা ডেস্কঃ ১৫২ বছরের পুরনো রাষ্ট্রদ্রোহ আইন নিয়ে সরকারের কাছে রিপোর্ট পেশ করেছে আইন কমিশন। ওই রিপোর্টে কমিশন জানিয়েছে, আইপিসি-তে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪-এ ধারা বজায় রাখা দরকার। এটি অপসারণের কোন বৈধ কারণ নেই। তবে, আইনের প্রয়োগে আরও স্বচ্ছতার জন্য কিছু সংশোধন করা যেতে পারে।

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে, সুপ্রিম কোর্ট ব্রিটিশ আমল থেকে চলে আসা রাষ্ট্রদ্রোহ আইন স্থগিত করেছিল। আদালত সেসময় নির্দেশ দিয়েছিল যে পুনঃপরীক্ষা প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত আইপিসি-এর ১২৪-এ ধারার অধীনে কোনও মামলা নথিভুক্ত করা হবে না।

আইন কমিশন সরকারের কাছে পেশ করা প্রতিবেদনে বলেছে, আমরা সুপারিশ করছি যে ধারা ১২৪-এ-এর অধীনে শাস্তিকে আইপিসির ৬ ধারার অধীনে অন্যান্য অপরাধের সাথে সমতায় আনতে হবে। একইসঙ্গে, রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের অপব্যবহার সম্পর্কিত মতামত বিবেচনায় নিয়ে কমিশন সুপারিশ করেছে যে এটি প্রতিরোধ করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা জারি করবে।

ভারতের ২২তম আইন কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি ঋতু রাজ অবস্থি, রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের প্রয়োগের ভিত্তিতে প্রতিবেদনে বলেছেন, আমরা রাষ্ট্রদ্রোহ সংক্রান্ত আইন অধ্যয়ন করেছি এবং ভারতে এর ব্যবহারের উৎস খুঁজে বার করেছি। কমিশন প্রাক-স্বাধীনতা এবং স্বাধীন ভারত উভয়ের রাষ্ট্রদ্রোহের ইতিহাস, বিভিন্ন এখতিয়ারে রাষ্ট্রদ্রোহ সংক্রান্ত আইন এবং বিষয়টিতে সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের বিভিন্ন রায় বিশ্লেষণ করেছে।

গত ১ মে, কেন্দ্র সরকার রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের বিরুদ্ধে দায়ের করা পিটিশনে সুপ্রিম কোর্টে জানায় যে সংসদের বর্ষা অধিবেশনে বিল আনা হতে পারে। আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে এই বিষয়ে শুনানি করবে সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্ট সিদ্ধান্ত নেবে যে ১৯৬২ সালের রাষ্ট্রদ্রোহ সংক্রান্ত পাঁচ বিচারপতির রায় পর্যালোচনার জন্য সাত বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে পাঠানো হবে কিনা। সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারকে এই বিষয়ে তাদের অবস্থান কি তাও জানতে চেয়েছিল।

২০২২ সালে সুপ্রিম কোর্ট আদেশ দিয়েছিল যে, আইপিসি-এর ১২৪-এ ধারার পুনঃপরীক্ষা প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত এর অধীনে কোনও মামলা নথিভুক্ত করা হবে না। একইসঙ্গে, ইতিমধ্যেই নথিভুক্ত করা মামলার কার্যক্রমও স্থগিত করে আদালত। শুধু তাই নয়, এই ধারায় কারাগারে থাকা অভিযুক্তরাও জামিনের আবেদন করতে পারবেন বলে জানায় আদালত। আদালতের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই কড়া প্রতিক্রিয়া জানান কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী।

প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রদ্রোহ আইনকে চ্যালেঞ্জ করে একটি পিটিশন দায়ের করেছিল এডিটরস গিল্ড অফ ইন্ডিয়া এবং তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র সহ পাঁচটি পক্ষ। মামলার আবেদনকারীরা বলেন, আজকের সময়ে এই আইনের প্রয়োজন নেই। প্রধান বিচারপতি এনভি রমনার নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হচ্ছে। এই বেঞ্চে রয়েছেন বিচারপতি সূর্যকান্ত ত্রিপাঠি ও বিচারপতি হিমা কোহলিও।

Related Articles

Back to top button
error: