দেবিকা মজুমদার, টিডিএন বাংলা: মুম্বাইয়ের বান্দ্রায় একটি মিষ্টির দোকানের নাম করাচি সুইট হওয়ায় এক শিবসেনার এতটাই আপত্তিকর মনে হয়েছে যে তিনি সরাসরি দোকানের মালিক কে এই নাম পরিবর্তন করে অন্য কিছুর রাখতে বলেছেন। নীতিন মধুকর নন্দগাঁওকার নামে ওই নেতা স্পষ্ট জানিয়েছেন এই নাম পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কিত হওয়ায় তিনি এই নাম একেবারেই পছন্দ করেন না। এই ঘটনার একটি ভিডিও ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ভিডিওয় দেখা যাচ্ছে বান্দ্রা ওয়েস্টের ঐ মিষ্টির দোকানে ওই শিবসেনা নেতা দোকানের মালিককে বলছেন যে এই নামটি তিনি ঘৃণা করেন কারণ এই নাম পাকিস্তান এবং সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে সম্পর্কিত। তাই এই নাম বদলে দোকানের মালিক যেন কোন মারাঠি নাম রাখেন।
দোকানের মালিককে শিবসেনা নেতা নন্দগাঁওকারকে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে তাঁর পূর্বপুরুষরা এই নামকরণ করেছিলেন কারণ তাঁরা করাচি থেকে দেশভাগের পরে এসেছিলেন। এমনকি ওই দোকানের মালিক একথাও বলেন যে আজ এই দোকানের সাথে বাই দোকানের নামের সাথে করাচির কোন যোগাযোগ নেই। যদিও দোকানের মালিকের এই যুক্তি কোনভাবেই মানতে রাজি হন না ওই শিবসেনা নেতা। পাল্টা দোকানের মালিককে তিনি বলেন, তিনি চাইলে যা ইচ্ছে দোকানের নাম রাখতে পারেন, চাইলে নিজের পূর্বপুরুষদের নাম রাখতে পারেন কিন্তু করাচি নাম বিলকুল যেন না রাখেন কারণ এইনাম সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে যুক্ত। শুধু তাই নয় তিনি দোকানের মালিককে বলেন,”আমি আপনাকে নাম দিচ্ছি, আপনাকে দোকানের নাম বদলাতেই হবে কারণ এটি পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত। এই নাম করাচি থেকে বদলে কোন মারাঠি নামের সাথে পরিবর্তন করুন।”
ওই ভিডিওর শেষে দেখা গেছে শেষ পর্যন্ত ওই শিবসেনা নেতা দোকানের মালিককে এই নাম পরিবর্তনের জন্য যাবতীয় সহায়তা করার কথাও বলেছেন কিন্তু তাঁর শর্ত একটাই এই নাম পরিবর্তন করতেই হবে এবং সেই পরিবর্তন শুধুমাত্র দোকানের গায়ে নয় সরকারি খাতাতেও হতে হবে।
এদিকে, করাচি সুইটের নাম পরিবর্তনের ঘটনা নিয়ে তৈরি হওয়া এই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই এই ঘটনার প্রতিবাদে একের পর এক টুইট ভেসে উঠতে শুরু করে হ্যাশট্যাগ করাচি সুইটস লিখে। শক্তি দত্তচৌধুরী নামে এক ভারতীয় মহিলা লাহোরের একটি কাপড়ের দোকানের ছবি শেয়ার করে টুইটারে লেখেন, প্রায় একমাস আগেই তাঁর এক প্রিয় বান্ধবীর লাহোর থেকে তাঁকে একটি দোকানের ছবি তুলে পাঠিয়ে ছিলেন যে দোকানের নাম “বোম্বে ক্লোথ সেল ডিপো”। সে সময় তারা ভার্চুয়ালি এই নিয়ে আনন্দ প্রকাশ করেছিলেন। তার একটাই প্রশ্ন,”নামে সমস্যা কোথায়? আবেগ ধরে রাখার মধ্যে ভুল কোথায়?”
My very good friend from Lahore sent me this photo months back and we virtually high fived to celebrate our shared heritage.
What’s wrong in names? What’s wrong in retaining emotions? #karachisweets pic.twitter.com/fYf8sYXNtJ
— Sukti Dutta Chowdhury (@sukti26) November 19, 2020
আরেকজন টুইটার ব্যবহারকারী এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করেওই দোকানের কয়েকটি ছবি শেয়ার করেছেন যেখানে দেখা যাচ্ছে করাচি নামের উপরে বেশ কয়েকটি খবরের কাগজ সেটা রেখে নামটি ঢাকা দিয়ে রাখা হয়েছে। ওই টুইটারেতির দাবি দোকানদার এতটাই ভিত এবং সন্ত্রস্ত হয়ে রয়েছেন এই ঘটনার পর যে এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাইছেন না।
If this is true sir then please send someone over to the bakery and remove the paper on the sign. The owner is so afraid to even speak. This is not how a city is in by spreading fear in tax paying businesses. Would love to see the board of #karachisweets proudly displayed https://t.co/Uup3j48Fxs pic.twitter.com/5IMabqy6Fw
— 𝕓𝕦𝕞𝕓𝕒𝕚 𝕜𝕚 𝕣𝕒𝕟𝕚 (@sapnabhavnani) November 19, 2020
একের পর এক এধরনের টুইটের পর নড়েচড়ে বসে শিবসেনা। তড়িঘড়ি এই ঘটনার সঙ্গে শিবসেনার কোনরকম যোগাযোগ নেই বলে টুইট করে জানান শিব সেনা মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত। একটি টুইট করে তিনি লেখেন,”করাচি বেকারি এবং করচি সুইটস গত ৬০ বছর ধরে মুম্বাইয়ে রয়েছে। তাদের পাকিস্তানের সাথে কোন সম্পর্ক নেই। এখন তাদের নাম পরিবর্তন করতে বলার মধ্যে কোন অর্থপূর্ণ কারণ নেই। তাদের নাম পরিবর্তন করার দাবি শিবসেনার সরকারি অবস্থান নয়।”
Karachi bakery and karachi sweets have been in mumbai since last 60 years. They have nothing to do with Pakistan . It makes no sense to ask for changing their names now.Demand for changing their name is not shivsena's official stance.
— Sanjay Raut (@rautsanjay61) November 19, 2020