রাজ্য

আশ্বাস দিয়েও তৈরি হয়নি ব্রিজ, দূর্ভোগে ভবানীপুর দ্বীপবাসী

আব্দুস সালাম, টিডিএন বাংলা, সুন্দরবন : ১৫ই মে ২০২১: দক্ষিণ ২৪ পরগণার সুন্দরবন এলাকায় নদী দিয়ে ঘেরা ভবানীপুর মডেল বাজারের এক মনোরম ছোট্ট দ্বীপ, ভবানীপুর দ্বীপ। যেখানে অল্প কিছু গ্ৰাম নিয়ে দুটি পঞ্চায়েত আছে। এই দ্বীপে যাওয়ার নেই কোনো ব্রিজ। তাই প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়েই নৌকায় করেই চলে মানুষ ও গাড়ি পারাপার। প্রায়ই মটরসাইকেল ও অন্যান্য মালপত্র বোডঘাটে উঠতে গিয়ে নদীর জলে পড়ে যায়। ফলে এখানকার জনসাধারণের ভোগান্তির শেষ নেই।

ভবানীপুর ফেরিঘাট
দূর দুরান্ত থেকে এসে জল নিয়ে জান এই টাইমকল থেকে দ্বীপবাসীরা

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বাসিন্দা জানান ‘ব্রিজ না থাকার ফলে ঘরবাড়ি তৈরির মালপত্র নৌকায় করে নিয়ে যেতে হয় এপার থেকে ওপারে । ফলে যে কোনো মালপত্রের দাম দ্বিগুণ হয়ে যায়। তাছাড়া যে কোনো প্রয়োজনে নদী পার হতে গেলেই দিতে হয় নৌকা ও ঘাটের ভাড়া। অনেক নেতাই প্রতিস্রুতি দিলেও আজও পর্যন্ত এলাকার মানুষের দীর্ঘ দিনের দাবি “ব্রিজ” তৈরী হয়নি। তার দাবি ইতিপূর্বেও ব্রিজ তৈরির কথা হয়েছে। সরকারি লোকজন এসেছে, কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তা বাস্তবায়ন হয়নি”। এবারের পুনর্নির্বাচিত বিধায়ক দেবেশ মন্ডল ‘ব্রিজ’ তৈরির আশ্বাস দিয়েছেন, তাই স্থানীয় লোকজন আবারও আশায় বুক বাঁধছে।

ভবানীপুর হাই স্কুল

এলাকার বাসিন্দা আজিজ মোল্লা সাহেব বলেন “এখানে একটি বড়ো হাসপাতাল আছে। কিন্তু সেটা ডাক্তারের অভাবে প্রায় বন্ধ। সপ্তাহে একদিন একজন ডাক্তার আসেন, তাও আবার ঘন্টাখানেকের জন‍্য। ফলে এখানে কেউ অসুস্থ হলে তাকে নিয়ে দৌড়াতে হয় নদীর ওপারে। কখনো বা নৌকার অপেক্ষায় ঠাঁয় দাঁড়িয়ে চলে যায় দীর্ঘ সময়। এমনকি এখানে নেই কোনো পাশকরা ডাক্তারও।

স্থানীয়দের থেকে জানা গেল ,এখানকার আরও একটি সমস্যা হচ্ছে স্কুল। তারা জানান পুরো দ্বীপে একটি মাত্র হাইস্কুল আছে। ফলে দূরের ছাত্র-ছাত্রীরা যাতায়াতের সমস্যার কারণে পড়াশোনা ছাড়তে বাধ্য হয়। তারা আক্ষেপ করে বলেন, বিশেষ করে লকডাউনে যখন স্কুল বন্ধ তখন অন্যান্য জায়গায় ছাত্র-ছাত্রীরা প্রাইভেটে পড়াশোনা করেছে। কিন্তু এখানে অনুন্নত শিক্ষাব‍্যবস্থার কারণে শিক্ষিত মানুষ খুঁজে পাওয়া দুস্কর, তাই প্রাইভেটও তারা পড়তে পারছেনা।

ভবানীপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র

এলাকারই ছাত্রী আসমা খাতুন এবার মাধ্যমিক দেবে। সে জানায়, “ছোটবেলা থেকেই স্কুলে যাওয়া ছিল খুবই কষ্টকর। বড়ো দাদা বা দিদির সঙ্গে হেঁটে হেঁটে স্কুলে যেতে হতো। কারণ এখানে যাত্রীবাহি গাড়ি চলে খুবই কম। ফলে মানুষ বিভিন্ন প্রয়োজনে যাতায়াতের ক্ষেত্রে দূর্ভোগের শিকার হয়। বিশেষ করে বর্ষার সময় ভিজে ভিজে স্কুলে যেতে হয়, ভিজে ব‍্যাগ-বই সহ। এ’কারণে এখানকার ছেলে মেয়েরা বাইরে হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করে।”

স্থানীয় মানুষদের কাছ থেকে আরও জানা গেল, এখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় থাকে। হিন্দ-মুসলিম সবাই এখানে মিলে মিশে ভাই ভাইয়ের মতো থাকে।

Related Articles

Back to top button
error: