HighlightNewsসম্পাদকীয়

ভিএইচপির হুমকিতে দিল্লি পুলিশের অবস্থান বদল ভয়ঙ্কর ইঙ্গিত

মুহাম্মাদ নূরুদ্দীন

বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে হুমকি দিয়ে বলেছে, যদি দিল্লি পুলিশ জাহাঙ্গীরপুরা সংঘর্ষের ঘটনায় হনুমান জয়ন্তীতে অংশগ্রহণকারী তাদের কোনো কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে তাহলে তারা দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধ’ ঘোষণা করবে।

এই হুমকি তখন আসে যখন পুলিশ জানায় যে তারা সেই সংগঠনের বিরুদ্ধে এফআইআর করবে যারা কোনো অনুমতি ছাড়া হনুমান জয়ন্তী উপলক্ষে মিছিল বের করে ছিল। শুধু তাই নয় তারা এজন্য প্রেম শর্মা নামে স্থানীয় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা কে চিহ্নিত করেছিল। কিন্তু বিশ্ব হিন্দু পরিষদের হুমকিতে পুলিশ তাদের অবস্থান বদল করে। শেষ পর্যন্ত এফআইআর-এ বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বজরং দলের নাম বাদ দেওয়া হয়।

নর্থ ওয়েস্ট ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ (ডিসিপি) ঊষা রানী বলেন, যারা অনুমতি ছাড়া হনুমান জয়ন্তী মিছিল বের করেছিল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তার উত্তরে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মুখপাত্র বিনোদ বানসাল পিটিআইকে বলেন, ‘পুলিশ বড় ভুল করছে।’ তিনি আরো হুমকি দিয়ে বলেন, পুলিশ জেহাদিদের কাছে মাথা নত করেছে। অনুমতি ছাড়া মিছিল বের করার অভিযোগ বাহানা মাত্র।

ভিএইচপির এই হুমকি ও পুলিশের ভোলবদল এক ভয়ঙ্কর দিনের ইঙ্গিত বহন করে। শান্তি-শৃঙ্খলার দায়িত্ব পুলিশের। যারা আইন হাতে তুলে নেয় তাদের নিয়ন্ত্রণ করা ও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা পুলিশের দায়িত্ব। কিন্তু পুলিশ তার কাজ করতে যদি বাধা পায় এবং কারো হুমকিতে যদি পুলিশ নিজেকে অসহায় বোধ করে তাহলে তা দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য ভয়ঙ্কর হুমকি।

উন্নতি ও অগ্রগতির জন্য শান্তি ও স্থিতিশীলতা একান্ত অপরিহার্য। দাঙ্গা-হাঙ্গামার পরিবেশ সকলকে ক্ষতিগ্রস্থ করে। হিংসা ঘৃণা-বিদ্বেষ প্রচার করে কেউ লাভবান হতে পারে না। যারা নিজেদেরকে দেশ প্রেমিক বলে দাবি করে তারা কখনোই দেশের আইন-শৃঙ্খলাকে পদদলিত করতে পারেনা। রাষ্ট্র যদি অপরাধীর বর্ণ বিচার ও জাত বিচার করতে শুরু করে তাহলে তা গোটা রাষ্ট্রব্যবস্থাকে ধ্বংসের কিনারে ঠেলে দেয়। কেউ যদি পুলিশ প্রশাসনের আইন-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার কাজে বাধা দেয় তাহলে সে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে নিজেকে। হিংসা, বিভেদ, মিথ্যা, সঠতা দিয়ে কখনো কল্যাণ আশা করা যায় না। এই ধরনের চিন্তা ও কর্মসূচি আত্মহননের পথে এগিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কিছুই নয়। যারা দেশজুড়ে ধর্মের নামে হিংসা ছড়াচ্ছে তাদের উচিত নিরপেক্ষ মনে আত্মবিশ্লেষণ করা। কোন ধর্ম মিথ্যাকে সমর্থন করে না। মিথ্যাকে আশ্রয় করে কেউ কখনো স্থায়ী সাফল্য লাভ করতে পারে না।

Related Articles

Back to top button
error: