রাজ্য

বাংলায় মদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে ফের হাজারো হাজী আক্তার হোসেনের প্রয়োজন

বিশেষ প্রতিবেদন, টিডিএন বাংলা: রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে লোকাল স্তরে পাউচ করে মদ বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। যেভাবে সরকার গ্রামে গ্রামে মদের কাউন্টার খুলে গোটা রাজ্যে মদের মতো একটা সর্বনাশা বস্তুকে বৈধ করে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে রাজস্ব বৃদ্ধির ভাবনাচিন্তা করছে আগামীতে তার ফলাফল অত্যন্ত ভয়াবহ। সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আবারও এক জোরদার গন আন্দোলন গড়ে তোলা খুবই জরুরী। এগিয়ে আসা দরকার সমাজের বিদ্দ্বজনদের। আলেম ওলামা , বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, ডাক্তার , পুরোহিত সকলের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন না হলে পাড়ায় পাড়ায় মদের আখড়ায় সমাজকে ধংস্ব স্তূপে পরিণত করবে। বাড়বে খুন, ধর্ষন, রাহাজানি। তাই সমস্ত পাপ কাজের মূল এই মদ কে নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গণ আন্দোলনে এই মহূর্তেই এক নয় , হাজারটা হাজী আখতার হোসেনের প্রয়োজন । যারা জীবন চলে গেলেও শাসকের অন্যায় সিদ্ধান্ত কোনোমতেই মেনে নিবে না ।

উল্লেখ্য , মদ বিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে গিয়ে সমাজবিরোধীদের হাতে নৃশংস ভাবে খুন হতে হয়েছিলো মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের প্রতিবাদী ব্যক্তিত্ব হাজি আখতার হোসেন কে। ২০১৩ সালের ১০ ই নভেম্বর নিজ বাড়ি থেকে আট কিলোমিটার দুরত্বে নিজের ফার্মেসি থেকে বাড়ি ফেরার পথে রাত দশটার সময় ৩৪ নং জাতীয় সড়কে খুন হন তিনি। মৃত্যু কালে তার বয়স হয়েছিলো মাত্র ৪৬ বছর।

আখতার হোসেন ততকালিন সময়ে সকলের কাছে একটি জনপ্রিয় ব্যক্তি হিসাবে পরিগণিত ছিলেন। গ্রামের অন্যায় কাজের বিরুদ্ধে তার গনপ্রতিরোধে সামিল হয়েছিলেন বহু মানুষ। নিজে একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হলেও তিনি এলাকায় জুয়া,লটারি মদের বিরুদ্ধে সচেতনতার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। সমাজের অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধ করার জন্য তিনি এলাকার শুভবুদ্ধি সম্পন্ন লোকদের নিয়ে গ্রাম্য কমিটি গঠন করে এলাকায় মদ জুয়া নিষিদ্ধ করেন। তার এই ফরমানে এলাকায় সেসময় শান্তির বাতাবরণ তৈরি হয়েছিলো। কিন্তু তার সেই শান্তির বার্তা কিংবা মদ বিরোধী অভিযান সহ্য হয়নি সমাজবিরোধীদের। ১০ ই নভেম্বর রাতে তারাপুরে থাকা নিজস্ব ফার্মেসি থেকে বাড়ি ফেরার পথে ৩৪ নং জাতীয় সড়কে রহস্যজনক ভাবে নৃশংস ভাবে খুন হন তিনি। রাতে আক্তার হোসেন খুনের খবর শুনে হাজারে হাজারে মানুষ ৩৪ নং জাতীয় সড়ক অবরোধ করে দেন। টানা তিনঘন্টা পর অবরোধ উঠলেও কিছু বিক্ষুব্ধ জনতার ইটপাটকেলে পুলিশের কর্মীরা জখম হন, ফলে নতুনভাবে ধরপাকড় শুরু করে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয় ৪৪ জন কে।তিনমাস জেল খাটার পর মুক্তি হয় তাদের । যদিও সেই আখতার হোসেনের খুনের কিনারা আজও হয় নি!

Related Articles

Back to top button
error: