HighlightNewsদেশ

আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কেরলের মন্দিরে প্রাচীন প্রথায় শিশুর রক্তে পুজো!

টিডিএন বাংলা ডেস্ক : আদালত নিষদ্ধ ঘোষণা করেছে অনেক আগেই। কিন্তু আদালতের সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কেরলের মেভেলিক্কারার ছেত্তিকুলাঙ্গারা মন্দিরে ২৫০ বছর ধরে চলে আসা প্রাচীন প্রথা মেনে শিশুর রক্তে অনুষ্টিত হল পুজো! বিগ্রহ ভদ্রকালীর উদ্দেশ্যে আয়োজিত এই বিশেষ পূজানুষ্টান চুরাল মুরিয়াল নামে পরিচিত। কেরলের মত রাজ্যে ধর্মের নামে এই ধরনের জঘন্য কুসংস্কার, বর্বরতা আর অসভ্যতার ধর্মীয় অনুষ্টানে হতভম্ব গোটা দেশ। জানা যাচ্ছে ওই মন্দিরে মার্চ মাস নাগাদ অনুষ্ঠিত হয় কুম্বাভারানি উৎসব। সেই উৎসবের অঙ্গ হিসাবেই গত ২৫০ বছর ধরে চলে আসছে চুরাল মুরিয়াল প্রথাটি।

এই রীতি অনুযায়ী ১০ বছরের কম বয়সি বাচ্চা ছেলেদের বলি দেওয়া হয় মন্দিরের ভগবানের কাছে। তাদের গায়ে ফোটানো হয় সূচ তাতে পড়ানো থাকে সোনার সুতো। যার ফলে ক্ষত-বিক্ষত হয় তাদের দেহ। বাচ্চাদের আর্তনাদ, চিৎকার, বাঁচার আকুতি ঢেকে যায় ‘ভক্ত’দের শ্লোগান আর বাঁশির আওয়াজে। তাদের শরীর থেকে বেরিয়ে আসা রক্ত উৎসর্গ করা হয় ভদ্রকালীর সামনে। এই শিশুদের রক্তে নাকি তুষ্ট হন দেবতা! যে পরিবার এই প্রথা মেনে পুজো দিচ্ছে তাঁদের উপর নাকি বর্ষণ করেন আশীর্বাদ! এই পুজো সাধারণত করে থাকেন ধনী পরিবারগুলি। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, তাঁরা নিজের পরিবারের কাউকে এই বলির জন্য পাঠায় না। অভিযোগ, ‘দেবী’র আশীর্বাদ লাভের আশায় গরিব পরিবারের কাছ থেকে বাচ্চাদের কিনে নেয় অর্থবানরা। প্রায় ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকায় এই কেনাবেচা চলে।

এই বর্বর প্রথা বন্ধ করার জন্য শুরু হয় প্রতিবাদ-আন্দোলন। অবশেষে ২০১৬ সালে চুরাল মুরিয়ালকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে কেরালা স্টেট কমিশন ফর প্রোটেকশন অফ চাইল্ডস। এ নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলাও শুরু হয়। সেই মামলায় গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে কেরালা হাইকোর্টও এই প্রথাকে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। তবে বাস্তবে সে নিয়মে কিছুই এসে যাচ্ছে না ‘অতি ধর্মপ্রাণ’ কিছু মানুষের! আদালতের নিষেধাজ্ঞাকে কোনো পাত্তাই দিতে নারাজ মন্দির কর্তৃপক্ষও। ২৫০ বছরের এই প্রথা বন্ধ হয়ে গেলে যদি দেবী রুষ্ট হন, এই আশঙ্কায় হাইকোর্টের সেই নির্দেশকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে তারা আজও পালন করে আসছে সেই প্রথা! অভিযোগ মন্দির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জড়িয়ে আছে রাজনৈতিক দলের নেতারাও। ২০১৭ সালে রাজ্যসভার এক সাংসদ সুরেশ গোপীও এই প্রথা পালন করেছেন। শিশু নির্যাতন রোধে যখন সারা দেশ জুড়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ করা হচ্ছে তখন এই প্রথায় হতবাক সকলেই।

Related Articles

Back to top button
error: