টিডিএন বাংলা ডেস্ক: রেড রোজ মামলায় পাঞ্জাবের প্রাক্তন কংগ্রেস প্রধান নবজ্যোত সিং সিধুকে বৃহস্পতিবার এক বছরের সশ্রম কারাবাসের রায় শুনিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এরপর শারীরিক অসুস্থতার কারণে কিছুদিন সময় চেয়ে শীর্ষ আদালতের কাছে আর্জি জানান সিধু। কিন্তু, পাঞ্জাবের প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতির সেই আবেদন অবিলম্বে কিউরেটিভ পিটিশনের শুনানিতে অস্বীকার করে শীর্ষ আদালত। সিধুকে আজই আত্মসমর্পণ করতে হবে না হলে পাঞ্জাব পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করবে। এর আগে, সিধুর আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভির আবেদনে বিচারপতি এ এম খানউইলকর জানান, আমরা বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠাচ্ছি, তিনি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। অসুস্থতার কারণে আত্মসমর্পণের জন্য আদালতের কাছে এক সপ্তাহের সময় চেয়েছিলেন সিধু।
প্রসঙ্গত, আজ সিধুর আবেদনের শুনানি না হলে ১০ জুলাই পর্যন্ত তিনি স্বস্তি পাবেন না। কারণ, আদালতে ২৩ মে থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত গ্রীষ্মকালীন ছুটি রয়েছে। এই পর্যায়ে শুধুমাত্র জরুরি মামলার শুনানি হয়।
উল্লেখ্য, সিধুকে এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ প্রথমে পৌছবে পাঞ্জাব-হরিয়ানা হাইকোর্টে। সেখান থেকে সেই নির্দেশ পাঠানো হবে পাতিয়ালার জেলা ও দায়রা আদালতে। সিধু নিজে আত্মসমর্পণ করলে জরিমানা, অন্যথায় সংশ্লিষ্ট থানাকে তাঁকে গ্রেফতার করতে বলা হবে।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালের ২৭ ডিসেম্বর সিধু পাতিয়ালায় পার্কিং নিয়ে ৬৫ বছর বয়সী গুরনাম সিংয়ের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। অভিযোগ সিধু তাঁকে ঘুষি মারেন এবং পরে গুরনাম সিং মারা যান। এর পর সিধু এবং তাঁর বন্ধু উপেন্দ্র সিং-এর বিরুদ্ধে অপরাধমূলক হত্যার মামলা দায়ের করা হয়। ১৯৯৯ সালে এই মামলায় দায়রা আদালতে প্রমাণের অভাবে বেকসুর খালাস পান সিধু। এরপর পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টে মৃত গুরনাম সিংয়ের পরিবারের তরফ থেকে ফের আবেদন করা হয়। ২০০৬ সালে হাইকোর্ট সিধুকে তিন বছরের কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। ২০০৭ সালের জানুয়ারিতে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন সিধু। এরপর কারাগারে পাঠানো হলে সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানান সিধু। ১৬ মে ২০১৮-তে সুপ্রিম কোর্ট সিধুকে আইপিসিসির ৩০৪ ধারার অধীনে কোনরকম উদ্দেশ্য ছাড়া অপরাধমূলক হত্যার অভিযোগে খালাস দেয়। তবে, আইপিসির ধারা ৩২৩-এর অধীনে আঘাত দেওয়ার জন্য এক হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এর বিরুদ্ধে আদালতে রিভিউ আবেদন করেন নির্যাতিতর পরিবার। ১৯ মে ২০২২-এ সুপ্রিম কোর্ট সিধুর বিষয়ে তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে এবং সিধুকে আইপিসি ৩২৩ ধারার অধীনে আঘাত করার জন্য এক বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়।