রাজ্য

ফের জাতীয় সড়কের উপর ব্রিজে ফাটল, ডেউচা দ্বারকা নদীর ব্রিজে বন্ধ পণ্যবাহী ভারী যান চলাচল

কৌশিক সালুই, টিডিএন বাংলা, বীরভূম: ফের জাতীয় সড়কের উপর ব্রিজে ফাটল। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার বীরভূমের ১৪ নাম্বার জাতীয় সড়কের ডেউচা দ্বারকা নদীর ব্রিজে । দীর্ঘদিন ধরে রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় অভাব এই ঘটনা বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। ভাঙা অংশে মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে বলে দাবি জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের। পণ্যবাহী ভারী যান চলাচল সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে মহম্মদ বাজার থানার ডেউচার দ্বারকা নদীর উপর সেতুতে ফাটল দেখা গিয়েছে। এদিন সকাল থেকেই পণ্যবাহী ভারী যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ওই রাস্তার উপর। মল্লারপুর সাঁইথিয়া হয়ে সেই সমস্ত গাড়ি চলাচল করছে। যদিও ছোট গাড়ি বা যাত্রীবাহী বাস চলাচল করছে সেতুর ওপর দিয়ে। উত্তরবঙ্গের সঙ্গে রাঢ় বঙ্গের যোগাযোগের এটি একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সেতু। এছাড়া সামরিক দিক থেকেও খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি। উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে অন্যান্য অংশের যোগাযোগ এর মাধ্যমে।

দ্বারকা নদীর উপর ১৯৫২সালে জলাধার সহ সেতুটি জেসপ কোম্পানি নির্মাণ করে। নদীর ওই জলাধারে মোট দশটি গেট আছে। এদিন সকালে স্থানীয় বাসিন্দাদের নজরে আসে ভাঙ্গা অংশটি। বিষয়টি নজরে আসার পর এলাকায় কর্তব্যরত সিভিক ভলেন্টিয়াররা ওই জায়গাটি ব্যারিকেড দিয়ে দেয়। মহম্মদ বাজার থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে এবং যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে। ঘটনাস্থলে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের আধিকারিকরা গিয়ে পর্যবেক্ষণ করেন। সম্প্রতি বেহাল জাতীয় সড়কের মেরামত কাজ শুরু করেছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। জাতীয় সড়কের উপর অবস্থিত সেতু গুলি থেকে পিচ এর স্তর তুলে ফেলা হয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করা হলেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। গত ফেব্রুয়ারি মাসে এই সেতুর অন্য স্থানে ফাটল দেখা গিয়েছিল। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সেতুর ওপর লোহার পাত দিয়ে তার উপরে পিচ দিয়ে মেরামত করে দিয়েছিল। বারবার একই সেতুর উপর ফাটল দেখা দেওয়াতে উদ্বিগ্ন স্থানীয় মানুষজন। যেকোনো ধরনের কংক্রিট ঢালাই সচরাচর 50 বছর মজবুত থাকে। তারপর তার আয়ু শেষ হয়ে যায়। এই সেতু ভারতবর্ষের স্বাধীনতার পর ১৯৫২ সালে নির্মিত হয়। এই সেতুর বয়স প্রায় ৬৮ বছর। ফলে বহু আগেই এই সেতুর বিকল্প সেতু তৈরি করা উচিত ছিল জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের।
স্থানীয় বাসিন্দা শুভাশিস রজক, রঞ্জিত কর্মকাররা অভিযোগ করেন ,” ভারী যান চলাচল করলেও জাতীয় সড়কের উপরে সেতুটি কে সেই ভাবে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কোনো উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। তার ফলেই এই বিপত্তি। দ্রুত সংস্কার করা না হলে যেকোনো মুহূর্তে পুরো ব্রিজ ভেঙে পড়ে যেতে পারে। আর জাতীয় সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু হলেও তা চলছে খুব ধীরগতিতে। জাতীয় সড়কে ও সাধারণ মানুষের চলাফেরা খুব সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি করছি দ্রুত সেই বিষয়েও পদক্ষেপ নেওয়া হোক। বীরভূমের জাতীয় সড়কের ভারপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার নিশিকান্ত সিং বলেন,” সেতুর ফাটল নজরে আসতে দ্রুত মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে। এই সেতুর বিকল্প হিসাবে কর্তৃপক্ষের কাছে আর একটি সেতু নির্মাণ করার জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছি। অনুমতি মেলে দ্রুত নির্মাণ করা হবে”।

Related Articles

Back to top button
error: