HighlightNewsরাজ্য

নন্দীগ্রামে ১৯৫৬ ভোটে জয়ী শুভেন্দুই, তৃণমূলের পুনর্গণনার আর্জি খারিজ করল কমিশন

টিডিএন বাংলা ডেস্ক: রবিবার ভোট গণনার সকাল থেকেই নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্র নিয়ে টানটান উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল। প্রথমের দিকের সব রাউন্ডেই এগিয়ে ছিলেন শুভেন্দু। তবে ষোলো রাউন্ডের শেষে ৮২০ ভোট এগিয়ে যান তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এরপরেই এক সর্ব ভারতীয় সংবাদ সংস্থার খবর প্রকাশিত হয় শেষ রাউন্ডে শেষে ১২০০ ভোটে শুভেন্দু অধিকারী কে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ততক্ষনে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সবুজ আবিরের খেলা হয়ে গেছে। এবার নন্দীগ্রামে সবুজ আবির খেলার পালা। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই জানা যায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নয় বরং জয়ী হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। কালীঘাটে নিজের বাড়ি থেকে সেই হারের কথা সাংবাদিক সম্মেলনে স্বীকার করে নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। যদিওভোটে কারচুপির অভিযোগ নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার হুমকি দেন তিনি। তবে ঠিক কত ভোটে তিনি হেরেছেন তা জানা যায়নি রাত পর্যন্ত। পরে ইলেকশন কমিশনের তরফ থেকে জানানো হয় নন্দীগ্রামে ১৯৫৬ ভোটে জয়লাভ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। এরপরেই পুনর্গণনার দাবি তুলে ইলেকশন কমিশনের দ্বারস্থ হয় তৃণমূল।

তৃণমূলের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়, ভোটে কারচুপি করা হয়েছে। তৃণমূলের পক্ষে থাকা বহু বৈধ ভোট গণনা করা হয়নি। অথচ বিজেপির পক্ষে থাকা অবৈধ ভোটও গণনা করা হয়েছে। তৃণমূলের দাবি, গণনার সময় বেশ কিছুক্ষণ সার্ভার বন্ধ ছিল সেই সময়েই ওই কারচুপি করা হয়েছে।

অপরদিকে, কমিশনের তরফ থেকে রিটার্নিং অফিসার জানিয়ে দেন গণনার প্রতিটি রাউন্ডে তৃণমূল প্রার্থীর এজেন্ট সই করে সম্মতি জানিয়েছেন। কারচুপি হয়ে থাকলে তাঁরা সই করলেন কেন? কমিশনের তরফ থেকে বলা হয়েছে শুভেন্দু অধিকারী ইভিএম এবং পোস্টাল ব্যালট মিলিয়ে মোট ভোট পেয়েছেন ১১০৭৬৪ এবং তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মোট ভোট পেয়েছেন ১০৮৮০৮। তৃণমূলের তরফে পোস্টাল ব্যালটে কারচুপির যে অভিযোগ তোলা হয়েছিল তার জবাবে কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে মোট ২,৪৮৬টি পোস্টাল ব্যালট রয়েছে। ওই ব্যালট পুনর্গণনা করলে ফলে ফারাক হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

ইলেকশন কমিশনের এই সিদ্ধান্তের পর নন্দীগ্রামে শুভেন্দু জয়ধ্বজ উরতে আর কোন বাধা রইলো না। যদিও রাজ্য রাজনীতি জনপ্রিয়তম নেতাকে নিজের কেন্দ্রে হারিয়েও পূর্ব মেদিনীপুরে অধিকারীদের “গড়” ধরে রাখতে পারলেন না শুভেন্দু। ভোটের ফলাফল অনুযায়ী, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ১৬ টি আসনের মধ্যে তৃণমূল জিতেছে ১০ টি আসন। অর্থাৎ বিজেপির কাছে রয়েছে মাত্র ৬ টি আসন। ২০০৯ এবং ২০১৪ সালে যে তমলুক লোকসভা কেন্দ্র থেকে দু-দুবার জিতেছিলেন শুভেন্দু,সেই লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ৭টি বিধানসভা আসনের মধ্যে শুধুমাত্র নন্দীগ্রাম এবং হলদিয়ায় বিজেপি জিতেছে। তমলুকের বর্তমান সাংসদ এখন শুভেন্দু অধিকারীর ভাই দিব্যেন্দু অধিকারী।

অন্যদিকে, শুভেন্দু অধিকারীর বাবা শিশির অধিকারীর লোকসভা কেন্দ্র কাঁথির অন্তর্গত ৭টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ৪টি তে জিতেছে বিজেপি। ওই ৪ টি বিধানসভা কেন্দ্র হল, কাঁথি-উত্তর, কাঁথি-দক্ষিণ, ভগবানপুর এবং খেজুরি। এ ছাড়া মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত এগরা এবং ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত পাঁশকুড়া-পশ্চিম কেন্দ্রেও জিতেছে তৃণমূল।

Related Articles

Back to top button
error: