HighlightNewsরাজ্য

কবরস্থানের জমিতে দীজেন্দ্রলাল কলেজের ক্যাম্পাস: সমস্ত কাজ বন্ধের নির্দেশ ট্রাইব্যুনালের

টিডিএন বাংলা ডেস্কঃ নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর শহরের গোদাডাঙ্গা কবরস্থানের একটি অংশে গড়ে উঠেছে নদীয়ার দ্বিজেন্দ্রলাল কলেজের একটি ক্যাম্পাস। যা রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডের সম্পত্তি। ফলে কিভাবে রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডের সম্পত্তিতে অবৈধভাবে গড়ে উঠলো দ্বিজেন্দ্রলাল কলেজের ক্যাম্পাস তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এবার সেই ক্যাম্পাস বন্ধ করার নির্দেশ দিল রাজ্য ওয়াকফ ট্রাইবুনাল। উল্লেখ্য যে, গত ৮ ফেব্রুয়ারি ওই ক্যাম্পাসের উদ্বোধন করেন নদীয়ার জেলাশাসক পার্থ ঘোষ, পরিচালন কমিটির সভাপতি অসীম সাহা, কৃষ্ণনগর শহরের এসডিও চিত্রদীপ সেন, কলেজের অধ্যক্ষ শাজাহান আলী। ওয়াকফ সম্পত্তিতে বিশেষত কবরস্থানের জমিতে কলেজের ক্যাম্পাস তৈরি নিয়ে স্থানীয় মানুষের মধ্যে তৈরি হয় ক্ষোভ। ওয়াকফ সম্পত্তিটির ইসি নাম্বার ১৫৬৯৩। মোতাওয়াল্লি হলেন নাজিম উদ্দিন আহমেদ। সূত্রের খবর, গোদা ডাঙ্গায় ওয়াকফ স্টেট এর ১৫ একর কবরস্থান রয়েছে কৃষ্ণনগর মাজদিয়া রোডে। এই জমিটির মাঝ বরাবর একটি রাস্তা যার দুই পাশে রয়েছে ওয়াফফ সম্পত্তি। রাস্তার একপাশের সম্পত্তিটি কবরস্থান হিসেবে ব্যবহৃত হলেও অন্য অংশটি ফাঁকা রয়েছে। ওয়াকফ সম্পত্তিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ বেআইনিভাবে ক্যাম্পাস নির্মাণ করায় তা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে অর্ডার দিয়েছে ওয়াকফ ট্রাইবুনাল।
এই মামলার আইনজীবী আব্দুর রাকিব মোল্লা জানান, গত ২১ সেপ্টেম্বর ওয়াকফ ট্রাইবুনাল জানিয়ে দিয়েছে কৃষ্ণনগরের গোদাডাঙ্গা কবরস্থানের ওয়াকফ স্টেটে অবৈধভাবে কলেজের ক্যাম্পাস নির্মিত হয়েছে। তাই স্থানীয় পুরসভা এবং কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনো ভাবেই মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কোনো নির্মাণ বা অন্য কোন কাজ করতে পারবে না। আদালত তার রায়ে আরও জানিয়েছে, স্থানীয় এডিএলআরও এবং বিএলআরও কোনরকম নথি পরিবর্তন করতে পারবে না। যদি কেউ এই কাজ করে তাহলে ট্রাইবুনাল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আইনজীবী আব্দুর রাকিব মোল্লা জানান কৃষ্ণনগর শহর লাগোয়া এই মুসলিম কবরস্থানটি ১৮২৮ সালে থেকেই কবরস্থান হিসাবে উল্লেখ আছে। একটি অংশে প্রাচীর দেয়া হয়েছে। ১৫-১৬ সালে নদীয়া জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে কবরস্থানের একটি অংশে প্রাচীর দেওয়া হয়। তাঁর দাবি, “লকডাউনে ২০২০ এর মার্চ মাস থেকে এখানে অবৈধ নির্মাণ শুরু হয়। রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডকে এ ব্যাপারে অবগত করা হলে তৎকালীন চেয়ারম্যান আব্দুল গনি জেলাশাসককে চিঠি দিয়ে অবৈধ নির্মাণ বন্ধ করতে আবেদন করেন। এছাড়াও বিএলআরও এবং ডিএলআরওকে চিঠি দেয়া হয়। কিন্তু প্রশাসন কোনো গুরুত্ব দেয়নি।” এরপর আইনজীবী আব্দুর রাকিব মল্লিক জেলাশাসক পুলিশ সুপার এবং পুরসভাকে চিঠি দেয়। পুরসভা উকিল মারফত চিঠি দেয় তাকে, তাতে স্পষ্ট হয় যে এটি পুরসভার সম্পত্তি তার স্বপক্ষে কোন যুক্তি দেখাতে পারেনি। জুলাই মাসে আইনজীবী আব্দুর রাকিব পশ্চিমবঙ্গ ওয়াকফ ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। কৃষ্ণনগর পুরসভা কোন বৈধ কাগজ দেখাতে পারেনি। তারপরও পাঁচবার ট্রাইব্যুনালে শুনানি হয় শেষ পর্যন্ত ২১ সেপ্টেম্বর ওই সম্পত্তি নিয়ে রায় দেয়।

 

Related Articles

Back to top button
error: