মুসলিমদের রক্ষা করতে না পারলে ভাঙতে পারে ভারত! মোদি সরকারকে সতর্ক করলেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা
টিডিএন বাংলা ডেস্ক: ‘দেশের সংখ্যালঘু বিশেষত মুসলিমদের রক্ষা করতে না পারলে অচীরেই ভাঙতে পারে ভারত!’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যৌথ প্রেস বিবৃতির কয়েক ঘণ্টা আগে, বৃহস্পতিবার (মার্কিন স্থানীয় সময়) এক সাক্ষাৎকারে মোদি সরকারের উদ্দেশ্যে এই ভাষাতেই সতর্কবানী শোনালেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। তিনি বলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তার আলোচনার সময় জো বিডেনের উচিত “মুসলিম সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা” সংক্রান্ত ইস্যুটি উল্লেখ করা। এমন সময় তিনি এই মন্তব্য করলেন যখন বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সাংবাদিকদের সামনে বলেন, ‘ভারতের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হল তার ধর্মীয় বৈচিত্র্য।’
রাষ্ট্রীয় সফরে বর্তমানে আমেরিকায় আছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। হোয়াইট হাউস থেকে শুরু করে মার্কিন কংগ্রেস-সর্বত্রই সাড়ম্বরে অভ্যর্থনা পেয়েছেন তিনি। তিনি প্রবাসী ভারতীয়দের কাছ থেকেও উষ্ণ অভ্যর্থন পেয়েছেন। যৌথভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বক্তব্যও রেখেছেন। তবে মোদির সফরের মধ্যেই একাধিকবার অস্বস্তি বাড়িয়েছে ভারতের মানবাধিকার প্রশ্ন। মার্কিন সেনেট ও কংগ্রেসের সদস্যদের ৭৫ জন মিলে ভারতের গণতন্ত্র, ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বাইডেনকে চিঠি দিয়েছিলেন। যদিও বাইডেন বলেছেন, ভারত ও আমেরিকার একটাই বৈশিষ্ট্য- ধর্মীয় বৈচিত্র্য।
মোদির সফর চলাকালীনই সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বারাক ওবামা বলেন, “মোদিকে আমি খুব ভাল করে চিনি। এখন যদি তার সঙ্গে কথা হয়, তাহলে ভারতের সংখ্যালঘুদের অধিকার প্রসঙ্গে আলোচনা করবই। এখন যদি সরকার তাদের অধিকার রক্ষা না করে তাহলে যেকোনোও সময়ে ভারতে ভাঙন ধরতে পারে। দেশের মধ্যে এইরকম বিভেদ হলে তার ফল কী হতে পারে তা সকলেই আন্দাজ করতে পারেন। ভারতের জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষিত রাখতে সংখ্যালঘুদের অধিকার বজায় রাখতেই হবে।”
এদিকে মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের অধিকার প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতি জো বিডেনের সাথে একটি যৌথ প্রেস বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, ” আমরা একটি গণতন্ত্র… ভারত এবং আমেরিকা উভয়েরই আমাদের ডিএনএতে গণতন্ত্র রয়েছে। গণতন্ত্র আমাদের চেতনায় রয়েছে এবং আমরা তা লালন করি। এখানে জাতি বা ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্যের একেবারেই কোনও স্থান নেই।”
উল্লেখ্য যে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার কার্যকালে যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে মোদিজী ওবামাকে নিজের ‘বন্ধু’ বলে পরিচয় দিয়েছিলেন। সেই ‘বন্ধু’র মন্তব্যকে হাতিয়ার করে মোদির বিরোধিতায় সরব হয়েছে বিরোধীরা। কারণ বর্তমান মোদী সরকারের আমলে ভারতে সংখ্যালঘু বিশেষত মুসলিমরা ধর্মীয় বৈষ্যম্যের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে বার বার। এবার বারাক ওবামার এমন মন্তব্যে আবারও আলোচনায় উঠে এসেছে ভারতের ধর্মীয় বৈচিত্র্য ও ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রসঙ্গ।