অবশেষে থামল জাহাঙ্গীরপুরির ধ্বংসযজ্ঞ, ভেঙে ফেলা হয়েছে মসজিদ সংলগ্ন বেশ কয়েকটি বাড়ি

টিডিএন বাংলা ডেস্ক: অবশেষে থামল জাহাঙ্গীরপুরিতে বিজেপি নিয়ন্ত্রিত উত্তর-দিল্লি মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের “বুলডোজার ড্রাইভ”। শনিবার হনুমান জয়ন্তি মিছিলের সময় যে মসজিদের কাছে দু’টি দলের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়েছিল সেই মসজিদ সংলগ্ন বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাঙার পর অবশেষে থামল পুরসভার চালিত দখল বিরোধী অভিযান।
সকাল থেকে মোট ন’টি বুলডোজার চালিয়ে বেআইনি নির্মাণের নামে ভেঙে ফেলা হয়েছে একাধিক দোকান, ঠেলাগাড়ি এবং বাড়ি। এমনকি সুপ্রিমকোর্ট জাহাঙ্গীরপুরীতে ধ্বংস অভিযান স্থগিত রাখার নির্দেশ দিলেও অব্যাহত থাকে ধ্বংস প্রক্রিয়া। এ বিষয়ে ইতিমধ্যেই শীর্ষ আদালতে অভিযোগ জানানো হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট অবিলম্বে এনডিএমসি মেয়র, কমিশনার এবং দিল্লি পুলিশ কমিশনারকে অভিযান বন্ধ করার আদেশ সম্পর্কে অবহিত করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে। বরিষ্ঠ আইনজীবী দুষ্যন্ত দাভে এদিন আদালতকে জানান আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও অভিযান বন্ধ না করা সমাজকে একটা ভুল বার্তা দেয়।
দিল্লির ওই এলাকায় আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা বজায় রাখতে মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী। তবে আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও কেন ধ্বংসযজ্ঞ অব্যাহত আছে সে সম্পর্কে পুলিশ আধিকারিকরা স্পষ্ট কোনো জবাব দেননি। যদিও পুরসভার এক কর্মকর্তা জানান,”আমরা লিখিত নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত প্রক্রিয়া চলবে।”
এর আগে দিল্লির বিজেপি প্রধান আদেশ গুপ্তা সংবাদমাধ্যমকে জানান, দিল্লি পুরসভার এহেন ধ্বংস অভিযান শহরের অন্যান্য জায়গাতে অব্যাহত থাকবে যেখানে বাংলাদেশের রোহিঙ্গারা সরকারি জমিতে দখলদারি চালিয়ে বাড়িঘর তৈরি করে রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, এদিন সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশের নির্দেশ পাওয়ার পর প্রাথমিকভাবে ১৫ থেকে ২০ মিনিটের জন্য ধ্বংসলীলা স্তব্ধ হলেও ফের নতুন উদ্যমে বিজেপি নিয়ন্ত্রিত উত্তর দিল্লির পুরসভার ধ্বংসযজ্ঞ শুরু হয় দিল্লি জাহাঙ্গীরপুরিতে। এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে উত্তর-দিল্লির মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের মেয়র জানান, আদালতের নির্দেশের অনুলিপি এখনও তারা পাননি এতে কয়েক ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। এনডিএমসি মেয়র রাজা ইকবাল সিং বলেন,”আমরা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে চলব এবং সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করব।”
এরপর শীর্ষ আদালতের কাছে ফের নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগ জানানো হলে তড়িঘড়ি সেই নির্দেশের অনুলিপি পাঠানো হয় সংশ্লিষ্ট দফতর গুলিতে। বন্ধ করা হয় জাহাঙ্গীরপুরিতে দখল বিরোধী অভিযান। তবে, হনুমান জয়ন্তি মিছিলের সময় যে এলাকায় সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ হয়, সেই এলাকায় জেসিবি চালিয়ে এহেন দখল বিরোধী অভিযান কেন করা হলো তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। এর পেছনে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার মনোভাব রয়েছে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে।