HighlightNewsরাজ্য

সারের কালোবাজারি ও অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে মাথায় হাত চাষির, কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি নবান্নের 

আব্দুস সালাম, টিডিএন বাংলা: ক্রমবর্ধমান সারের কালোবাজারি ও অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে মাথায় হাত পড়েছে চাষিদের। সারা রাজ্যে বিভিন্ন জায়গা থেকে অভিযোগ উঠেছে, পরিকল্পিত ভাবে গোডাউনে সার মজুত রেখে কৃত্রিম উপায়ে চাহিদা তৈরি করা হচ্ছে তারপর সারের দাম বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এছাড়াও সারের কালোবাজারি নিয়ে, সরকার নির্ধারিত মূল্যের তুলনায়ভূরিভূরি অভিযোগ জমা পড়েছে কৃষি দফতরে। এমতাবস্থায় সারের কালোবাজারি বন্ধ করতে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে নবান্ন। এই রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভেনদেব চট্টোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন, কালোবাজারি রুখতে প্রয়োজনে দোষী ডিলারদের কালো তালিকা ভুক্ত করা হবে।

কৃষি দফতর ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নির্ধারিত মূল্যের তুলনায় বেশি দামে যাতে সার বিক্রি করা না হয় তা নিশ্চিত করতে দোকানে দোকানে হানা দিচ্ছে পুলিশ ও প্রশাসন। সারের দাম কত আছে ও কোনো গোডাউনে সার মজুত করে রাখা হচ্ছে কিনা খতিয়ে দেখছে প্রশাসন। এই প্রসঙ্গে রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘কালোবাজারি রুখতে আমরা একাধিক ব্যবস্থা নিতে পারি। প্রয়োজনে ডিলারদের কালো তালিকা ভুক্ত করা হবে। লাইসেন্স সাসপেন্ড করা হতে পারে।’ পাশাপাশি কালোবাজারি রুখতে কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে। যেসব জায়গা থেকে অভিযোগ বেশি আসছে, সেইসব জায়গার দোকানগুলিতে হানা দেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

বর্তমানে সারের দাম কেমন চলছে? কালোবাজারি বা অবৈধ মজুতদারির অভিযোগও উঠেছে এই বিষয়ে আপনার মতামত কি! এমন প্রশ্নের উত্তরে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বসিরহাট এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, “কালোবাজারি বা অবৈধ মজুতদারি করা হচ্ছে কিনা সেটাতো আমি জানিনা। কিন্তু সমস্ত সারের দাম অনেকটাই বেড়েছে। শুধু এই বছরই নয় প্রতি বছরই পূর্বের তুলনায় দাম অনেকটাই বৃদ্ধি পাচ্ছে।” এই ভাবে চললে তাদের পক্ষে আর চাষাবাদ করা সম্ভব হবে না বলেও তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করেন। অনেকেই জানিয়েছেন, সারের কালোবাজারি ও সার-বিষতেল-বিচ-চারা গাছ সব কিছুরই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে তারা নাজেহাল হচ্ছেন। তার উপরে বাজারে গিয়ে ফসলের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় তারা চরম দুর্ভোগে পড়ছেন। এমনকি অনেক সময় লাভ তো দূরের কথা চাষের খরচ টুকু তুলতেই তারা হিমসিম খাচ্ছেন। সেই কারণেই অনেকেই কৃষিকাজ ছেড়ে অন্য পেশায় যোগ দিচ্ছেন।

তবে শুধু কালোবাজারি বা অবৈধ মজুতদারই মূল সমস্যা নয় একই সঙ্গে সারের জোগানও রাজ্যে খুব কমই আছে বলে জানা গিয়েছে। আর সেই কারণেই সারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ঘটছে। এই প্রসঙ্গে নবান্ন ও কৃষি দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, এখনও পটাশ সারের যা প্রয়োজন তার থেকে অনেক কম সরবরাহ করা হয়েছে। আগামী দিনে ঘাটতি মেটাতে কেন্দ্র-সহ সার সংস্থাগুলিকে অনুরোধ করেছে রাজ্য।

প্রয়োজন অনুযায়ী সারের জোগান না মেলায় ও সারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির জন্য কেন্দ্র সরকারকে দায়ী করেছে রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, আগে ওই সারে কেজি প্রতি ভর্তুকি ছিল প্রায় ২২ টাকা। এখন তা কমিয়ে দু’টাকার কিছু বেশি করা হয়েছে। এর ফলে কৃষকরা ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে।

Related Articles

Back to top button
error: