কর্নাটকের মসনদে ‘লিঙ্গায়েত’ বাসবরাজ, এক ঢিলে ২ পাখি মারার পরিকল্পনা পদ্ম শিবিরের
টিডিএন বাংলা ডেস্ক : কর্ণাটকের নতুন মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন লিঙ্গায়েত নেতা বাসবরাজ বোম্বাই। বুধবার বেলা ১১টা নাগাদ রাজভবনে তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করান রাজ্যপাল থাওয়ার চন্দ গেহলট। শপথ গ্রহণের আগে ইয়েদুরাপ্পার পায়ে হাত দিয়ে প্রনামও করেন বাসবরাজ।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পার পরামর্শতেই সিলমোহর। রাজ্যের ২৩ তম মুখ্যমন্ত্রী হলেন বাসবরাজ বোম্বাই। মঙ্গলবার দলের তরফে নাম চূড়ান্ত হওয়ার পরই আজ শপথ নিলেন তিনি। বীরশৈব-লিঙ্গায়েত নেতা বাসবরাজ উত্তর কর্ণাটকের হাভেরির বিধায়ক। ২০০৮ সালে তিনি জনতা দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। বোম্বাই একজন লিঙ্গায়েত নেতা। তাঁর পেছনে জনসমর্থন মোটেও কম নয়। ফলে ইয়েড্ডির ইস্তাফার পরে লিঙ্গায়েতদের মধ্যে যে ক্ষোভ দানা বেঁধেছিল, তা অনেকটাই মেটানো গেল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
গত ২দিন ধরে কন্নড় রাজনীতির সবথেকে বড় প্রশ্ন ছিল, কে হবেন নয়া মুখ্যমন্ত্রী? এক্ষেত্রে কি লিঙ্গায়েত ভোটব্যাঙ্ককে মাথাই রেখে নাম ঘোষণা করা হবে? নাকি নতুন কোনও ফর্মূলায় চলবে গেরুয়া শিবির? ‘নানা মুনির নানা মত’-এর মতো উঠে আসছিল নানান নাম। শোনা যাচ্ছিল, বাধা ছকে হাঁটবে না বিজেপি। বরং উত্তরপ্রদেশে যেমন যোগী আদিত্যনাথের নাম ঘোষণা করে চমক দিয়েছিল গেরুয়া শিবির, তেমনই কিছু একটা কন্নড়ভূমিতেও করতে চলেছেন। এক্ষেত্রে নাম উঠে আসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশীরও।ইয়েড্ডির উত্তরসূরি খুঁজতে দলের তাবড় নেতারা কয়েকদিন থেকে বেঙ্গালুরুতে ঘাঁটি গাড়তে শুরু করেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জি কিষেণ রেড্ডি ও ধর্মেন্দ্র প্রধানের সঙ্গে যোগ দেন দলের সাধারণ সম্পাদক বিএল সন্তোষ। ছিলেন রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অরুণ সিংও। তবে শেষমেশ মেনে নেওয়া হয় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শকেই। ইয়েড্ডি কেন্দ্রীয় নেতাদের বোঝান, ব্রাহ্মণ কাউকে এই পদে বসালে ভুল হবে। কারণ এতে প্রথম থেকেই আপত্তি লিঙ্গায়েত সম্প্রদায়ের। ফলে এই সম্প্রদায়ের বাইরে কাউকে মুখ্যমন্ত্রী করলে তার প্রভাব পড়তে পারে বিধানসভা ভোটে। রাজ্যে ১৬ শতাংশ ভোট রয়েছে লিঙ্গায়েতদের। সেই ভোট হারানোর ভয়ে বিএসওয়াই-এর বেছে নেওয়া প্রার্থীকেই শেষ পর্যন্ত বেছে নিল পদ্মশিবির।
উল্লেখ্য, বাসবরাজের বাবা প্রয়াত এসআর বোম্বাই এক সময় অবিভক্ত জনতা দলের শীর্ষস্থানীয় নেতা ছিলেন। কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীও হয়েছিলেন তিনি। তবে মেয়াদ শেষ করতে পারেননি। সেই সময় কেন্দ্রীয় সরকার ৩৬৫ ধারা প্রয়োগ করে বোম্বাই সরকারকে ফেলে দিয়েছিল। কর্ণাটকে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সুপ্রিমকোর্টেও যান এস আর বোম্বাই।