ধর্ষণ মামলায় নির্দোষ প্রমাণিত প্রখ্যাত ইসলামি পণ্ডিত তারিক রামাদান, ‘মামলা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ দাবি পরিবারের

ছবি সংগৃহীত

টিডিএন বাংলা ডেস্ক: ধর্ষণ ও যৌন জবরদস্তির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় প্রখ্যাত ইসলামি পণ্ডিত তারিক রামাদানকে খালাস দিয়েছেন সুইজারল্যান্ডের একটি আদালত। তিনি সুইস নাগরিক এবং মিসরের মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রতিষ্ঠাতা হাসান আল-বান্নার নাতি। একজন সুইস নারী মামলাটি দায়ের করেছিলেন। তিনি বলেন, ২০০৮ সালে জেনেভার একটি হোটেলে তারিক রামাদান তাঁকে ধর্ষণ করেছিলেন। ধর্মান্তরিত ওই মুসলিম নারী তাঁর ভক্ত ছিলেন। ওই নারী আদালতকে বলেন, তিনি নির্মম যৌন হয়রানি, মারধর ও অপমানের শিকার হয়েছিলেন।

আজ বুধবার বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিযোগ প্রমাণিত হলে ৬০ বছর বয়সী তারিক রামাদানকে তিন বছর পর্যন্ত কারাভোগ করতে হতো। তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে ওই নারীর সঙ্গে দেখা হওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। একজন ‘রক স্টার’ ইসলামি চিন্তক হিসেবে পরিচিত তারিক রামাদান। এই বিচার তাঁর কর্মজীবনের সঙ্গে চরমভাবে সাংঘর্ষিক। ইউরোপ যখন সন্ত্রাসী হামলা ও ক্রমবর্ধমান মুসলিমবিরোধী মনোভাব মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছিল, তখন তারিক রামাদান দৃঢ়তার সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের নিন্দা জানান এবং মৃত্যুদণ্ডের বিরোধিতা করে আসছিলেন। অগণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সমালোচনা করায় তিউনিসিয়া, মিসর, সৌদি আরব, লিবিয়া ও সিরিয়ায় তাঁর প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়।

২০০৪ সালে টাইম সাময়িকীর বিশ্বের সবচেয়ে ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় জায়গা করে নিয়েছিলেন তারিক রামাদান। তিনি ২০০৭ সালে সেন্ট অ্যান্থনিস কলেজ অক্সফোর্ডে ইসলামিক স্টাডিজের অধ্যাপক হন। তবে ফ্রান্সের একজন নারী ২০১৭ সালে ধর্ষণের অভিযোগ আনলে তারিক রামাদানের উত্থান থমকে যায়। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই আরও কয়েকজন নারী একই ধরনের অভিযোগ করেন। তাঁর বিরুদ্ধে ফ্রান্সে চারটি ও সুইজারল্যান্ডে একটি মামলা দায়ের করা হয়। প্রবেশনে মুক্তি পাওয়ার আগে ফ্রান্সে ৯ মাস কারাভোগও করেছিলেন তিনি।

তবে আদালতে শুনানিতে তারিক রামাদানের পক্ষে দাঁড়িয়েছিল তাঁর পরিবার। ফ্রান্সে ইসলাম নিয়ে চলা বিতর্কে তাঁর ভূমিকার প্রতি ইঙ্গিত করে ছেলে সামি ২০১৯ সালে বিবিসিকে বলেছিলেন, অন্য কারণে তাঁর বাবার বিরুদ্ধে এসব মামলা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এসব মামলাকে আমরা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করি।’ আমেরিকান দার্শনিক নোয়াম চমস্কি ও ব্রিটিশ চলচ্চিত্র নির্মাতা কেন লোচসহ অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিত্বও এই দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করেছিলেন। একটি খোলা চিঠিতে তাঁরা প্রশ্ন তুলেছিলেন, স্বচ্ছ আইনি প্রক্রিয়ায় তারিক রামাদানের বিচার হচ্ছে কি না। সূত্র- প্রথম আলো