HighlightNewsরাজ্য

৬ টাকায় পেঁয়াজ বিক্রি করে খরচটাই উঠছে না, সংরক্ষণের দাবি তুলছেন কৃষকরা

নিজস্ব প্রতিনিধি, টিডিএন বাংলা, নদীয়া: পিঁয়াজের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় চরম হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন মুর্শিদাবাদের নওদা ব্লকের কয়েক হাজার পিঁয়াজ চাষী। বহু কষ্ট আর খরচ করেও মিলছে না দাম। সারের যা দাম তাতে চলতি বাজারে ৬-৭ টাকায় পিঁয়াজ বিক্রি করে লাভ তো দূরের কথা খরচটাই উঠছে না বলে জানাচ্ছেন চাষীরা।

নওদা ব্লকের শিবনগর, দুধসর, পাটিকাবাড়ী, আমতলা, বাদশানগর, শ্যামনগর, বালি, টুঙ্গি প্রভৃতি এলাকায় প্রচুর ভাল প্রজাতির পিঁয়াজ চাষ করেন চাষীরা। এখানকার গাড়ি গাড়ি পিঁয়াজ পাড়ি দেয় ভিন রাজ্যেও। পার্শ্ববর্তী নদিয়ার করিমপুরের গোয়াস, গোপালপুর, সেনপাড়া, পিপুলখোলা, বার্বাকপুরেও প্রচুর পিঁয়াজের উৎপাদন হয়।

এদিকে ফসলের দাম না মেলায় ভাগচাষীদের দুর্ভোগ বেড়েছে আরও চরমে। তারা চাষের খরচ তুলবেন নাকি জমির মালিককে টাকা দেবেন ভেবেই পাচ্ছেন না। শিবনগরের ভাগচাষী উজ্জ্বল বিশ্বাসের কথায়, ‘২০হাজার টাকা কন্ট্রাক্টে এবার দুই বিঘা পিঁয়াজ লাগিয়েছিলাম। তাতে খরচ হয়েছে ৫০হাজার টাকা। এখন ৬ টাকায় পিঁয়াজ বিক্রি করে চাষের খরচ তুলব নাকি জমির মালিক কে দেব বুঝতে পারছি না।’ একই বক্তব্য করিমপুরের গোলাম কিবরিয়া, পিন্টু বিশ্বাস, আসান মন্ডলদেরও।

বিঘা প্রতি ১০-১৫হাজার টাকায় পিঁয়াজের চারা কেনা থেকে শুরু করে চড়া মূল্যের লেবার খরচ দিয়ে কেউ বা নিজের জমিতে কেউবা অন্যের জমিতে চুক্তিতে পিঁয়াজ লাগিয়েছিলেন নওদা করিমপুরের চাষীরা। ১০০টাকায় ডিজেল কিনে সেচ খরচ সহ ব্লাকমার্কেট থেকে দ্বিগুন দামের সার দিয়ে পিঁয়াজ ঘরে তুলতে যে পরিমান খরচ হয়েছে তার অর্ধেকই উঠছে না বলে ক্ষোভ চাষীদের।

পিঁয়াজ চাষে নওদা ব্লককে পশ্চিমবঙ্গের নাসিক বলা হলেও চাষীদের আক্ষেপ, এবছর ঘনঘন বৃষ্টির কারণে পিঁয়াজের ফলনও ভাল হয়নি। যা হয়েছে তারও দাম নেই। ঘরে রেখে যে পরে দাম হলে বিক্রি করবে সে উপায়ও নেই। কারণ এখানে সংরক্ষণের কোন ব্যবস্থা নেই। দুই জেলার চাষীদের অভিযোগ, প্রতি বছরই পিঁয়াজ উঠলেই দাম কমিয়ে দেওয়া হয়। পচে যাওয়ার আশঙ্কায় ওই কম দামেই মাল বিক্রি করতে বাধ্য হই। পরে আবার দাম বাড়ানো হয়। ফলে ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হয় প্রকৃত চাষীরা। নওদার পিঁয়াজ চাষী ফিরোজ সেখ বলছিলেন, ‘এলাকা ভিত্তিক সরকারিভাবে পিঁয়াজ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করলে ভাল হত। বিনামূল্যে হিমঘরে পিঁয়াজ রাখার সুযোগ পেলে আমরা কিছু লাভের মুখ দেখতে পাব।’

Related Articles

Back to top button
error: