HighlightNewsদেশ

সুপ্রিম কোর্টেও বড়োসড়ো ঝটকা খেলো যোগী সরকার; ডাক্তার কাফিল খানের মুক্তির বিরুদ্ধে করা আবেদন খারিজ করল আদালত

টিডিএন বাংলা ডেস্ক: ডক্টর কাফিল খানের মুক্তির বিরুদ্ধে আবেদন করতে গিয়ে সুপ্রিমকোর্টে বড়সড় ধাক্কা খেলো উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকার। গোরখপুরের বাবা রাঘবদাস মেডিকেল কলেজ থেকে বিতাড়িত ডঃ কাফিল খানের মামলায় দায়ের করা পিটিশন খারিজ করে দিল শীর্ষ আদালত। উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকারের পক্ষ থেকে ডঃ কাফিল খানের বিরুদ্ধে এলাহাবাদ হাইকোর্টের এনএসএর ধারা হটানোর সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিমকোর্টে পিটিশন দায়ের করা হয়েছিল। ওই আবেদনের ভিত্তিতে আজ শুনানিতে আবেদনপত্র খারিজ করে দিল আদালত।

উল্লেখ্য সম্প্রতি এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ের পর জামিনে মুক্তি পান ডক্টর কাফিল খান। ২ সেপ্টেম্বর কাফিল খানকে মথুরা জেল থেকে মুক্ত করে দেওয়া হয়। এলাহাবাদ হাইকোর্ট কাফিল খানের উপর আরোপিত এনএসএকে অবৈধ বলে উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে আরোপিত এনএসএর ধারা পাঠিয়ে দেয় এবং অবিলম্বে তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেয়।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ১৩ই ডিসেম্বর আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরোধিতা করে উস্কানিমূলক মন্তব্য করার অভিযোগে ডক্টর কাফিল খানের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়। ওই এফআইআরের ভিত্তিতে এই ঘটনার ৪২ দিনের মাথায় উত্তরপ্রদেশ পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্স তাঁকে গ্রেফতার করে। যদিও ডঃ কাফিল খান-এর এই জেলযাত্রা প্রথমবার নয়, এর আগেও ২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরে বিআরডি হাসপাতালে ৬০ জনেরও বেশি শিশু মৃত্যুর জেরে গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁকে। সে সময় ওই হাসপাতালের শিশু বিভাগের দায়িত্বে থাকা কাফিল খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে, তিনি অন্যান্য হাসপাতাল থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার সংগ্রহ করেন। পরে আরো অভিযোগ ওঠে যে বিআরডি হাসপাতাল থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার চুরি করে নিজের ব্যক্তিগত ব্যবসা চালাচ্ছিলেন কাফিল খান। আর সেই কারণেই হাসপাতালে অক্সিজেন সিলিন্ডারের ঘাটতি তৈরি হয়। যার জেরে মৃত্যু হয় ওই শিশুদের। যদিও পরে এই ঘটনায় ডঃ কাফিল খানকে ক্লিনচিট দেয় উত্তরপ্রদেশ সরকার। এরপর আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটি মঞ্চে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরোধিতা করে আপত্তিজনক মন্তব্য করার জন্য গ্রেফতার হন ডঃ কাফিল খান। এই ঘটনার পর তাঁর আইনজীবীর আর্জি শুনে গত ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁকে জেল থেকে মুক্ত করার নির্দেশ দেয় আদালত। কিন্তু, উত্তরপ্রদেশ সরকার ডক্টর কাফিল খানকে ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট অনুযায়ী দোষী ঘোষণা করে। ঘটনাচক্রে এই মামলায় যেদিন তিনি জামিন পান তার কয়েক ঘণ্টা পরেই তাঁকে জাতীয় সুরক্ষা আইনের অধীনে ফের আটক করা হয়। ওই আইনের অধীনে গ্রেপ্তার কোন ব্যক্তিকে রাষ্ট্র ১২ মাস পর্যন্ত আটক করতে পারে এবং যদি কোন নতুন প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যায় তাহলে তাঁকে আরো বেশি সময় ধরে আটক করে রাখতে পারে প্রশাসন।

এরপর, ২ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার সকালে এলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি গোবিন্দ মাথুরের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ আলীগড় প্রশাসনের তরফ থেকে ডাক্তার কাফিল খান এর ওপর থেকে জাতীয় সুরক্ষা আইন বা এনএসএ চাপিয়ে দেওয়া বেআইনি বলে তা খারিজ করে এবং অবিলম্বে জেল থেকে শর্তসাপেক্ষ জামিনে মুক্ত করার নির্দেশ দেয় এলাহাবাদ হাইকোর্ট।

 

 

Related Articles

Back to top button
error: