রাজ্য

একটি রাস্তার শিলান্যাস অনুষ্ঠানে তিনটি মঞ্চ! ফের প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল

নিজস্ব সংবাদদাতা, টিডিএন বাংলা, মালদা: একটি রাস্তার শিলান্যাস অনুষ্ঠানে তিনটি মঞ্চ! শুনতে অবাক লাগলেও এমনই ঘটনা ঘটল মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুরে। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আরোও প্রকট হয়ে উঠলো তৃণমূলের দুই পক্ষের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ছবি। যদিও এই রাস্তাকে কেন্দ্র করে বিবাদের সূত্রপাত হয় বেশ কয়েকমাস আগেই, সেই আঁচ এসে পড়লো শিলান্যাস অনুষ্ঠানেও।

মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের কুমেদপুরে রাস্তার শিলান্যাস অনুষ্ঠানকে ঘিরে চললো গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। রবিবার ওই রাস্তার শিলান্যাসের জন্য গড়া হয়েছিল তিনটি পৃথক মঞ্চ। একটি সরকারি উদ্যোগে। বাকি দুটি মঞ্চ গড়েছিলেন বিবাদমান গোষ্ঠীর দুই নেতাদের। ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমে শেষ পর্যন্ত একটি অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়। তবে সরকারি অনুষ্ঠান বাদেও অন্য এক মঞ্চে ফিতে কেটে রাস্তার শিলান্যাস করেন রাজ্যসভার সাংসদ মৌসম নুর। পরে সরকারি অনুষ্ঠানেও রাস্তার শিলান্যাস করেন তিনি। তবে দুটি অনুষ্ঠানের কোনওটিতেই দেখা যায়নি জেলা পরিষদের স্থানীয় সদস্য মমতাজ বেগমকে।

জানা গেছে, হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লকের অদূরে মালিওর বাঁধের শিশাতলা থেকে কুমেদপুর বাইপাস পর্য়ন্ত ৯ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের জন্য প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় ৯ কোটি টাকা ছ মাস আগে বরাদ্দের পর থেকে দুই গোষ্ঠীর বিবাদের শুরু। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জুবেদা বিবির স্বামী আসরাফুল হক কাটমানি না পেয়ে রাস্তার কাজে বাধা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ তোলেন জেলা পরিষদের সদস্য মমতাজ বেগমের স্বামী আমিনুল হক। মাস দুয়েক আগে দুপক্ষের বিবাদে একে অন্যকে মারধর এমনকি গুলি চালানোর মতোও অভিযোগ ওঠে। এরপর গত বৃহস্পতিবার রাস্তার দাবিতে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভের ঘটনা ঘটে। তারপর রবিবার রাস্তার শিলান্যাসের আয়োজন করা হয়েছে বলে আমন্ত্রনপত্র ছাপানো হয় জুবেদা বিবির নামে। কিন্তু তা নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়। জেলা পরিষদের কাজ হলেও কেন সেখানে স্থানীয় সদস্য বা জেলা পরিষদের পদাধিকারীর নাম রাখা হয়নি তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
প্রশাসন ও তৃণমূল সূত্রে খবর, রবিবার শিলান্যাসকে ঘিরে ফের সক্রিয় হয়ে ওঠেন বিবাদমান দুই গোষ্ঠীর নেতা আসরাফুল ও আমিনুল। এদিন সরকারিভাবে কুমেদপুর আইডিয়াল ক্লাবে সরকারিভাবে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এদিকে রাস্তার শেষ অংশে কুমেদপুর বাইপাসে পৃথক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন আসরাফুল। পাশাপাশি যেখানে রাস্তার শুরু, সেই শিশাতলা এলাকায় পৃথক অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেন মমতাজ। কিন্তু দলের একাংশের চাপে তাকে পিছু হটতে হয়। কিন্তু শিশাতলায় অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেন মালিওর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সেতারা খাতুন। পরে অবশ্য বাইপাসের অনুষ্ঠান বাতিল করে উদ্যোক্তা আসরাফুল, তার স্ত্রী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জুবেদা বিবি সরকারি অনুষ্ঠানে হাজির হন। কিন্তু দুটির কোনওটিতেই যাননি জেলা পরিষদ সদস্য মমতাজ বা তার স্বামী আমিনুল। বিডিও প্রীতম সাহা বলেন, সরকারিভাবে একটিই অনুষ্ঠান হয়েছে। তবে যেখানে রাস্তা শুরু হচ্ছে, সেই শিশাতলায় এলাকাবাসীর দাবি ছিল অনুষ্ঠান করতে হবে।

রাজ্যসভার সাংসদ তথা জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মৌসম নুর অবশ্য এসবকে গুরুত্ব দিতে চাননি। তিনি বলেন, আজ আনন্দের দিন। বিস্তীর্ণ এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হতে চলেছে। আর মমতাজ কেন আসেননি জানি না। আমি খোঁজ নেব।

Related Articles

Back to top button
error: