রাজ্য

বাংলাদেশে কোটি কোটি টাকার চন্দন কাঠ পাচারে ধৃত কাস্টমসের দুই অফিসার

নিজস্ব সংবাদদাতা, টিডিএন বাংলা, কলকাতা: নেতাজি সুভাষ ডক থেকে একের পর এক চন্দন কাঠের কনসাইনমেন্ট পাচার হচ্ছিল বাংলাদেশে। তবে পাচারকারী কোনও সাধারণ অপরাধী নয়, কাস্টমস বিভাগের ডেপুটি কমিশনার বিকাশ কুমার ও সুপারিন্টেডেন্ট অব কাস্টমস সন্দীপকুমার দীক্ষিত! পাচার কাজে তাঁদের সহযোগী বাংলার দুই রফতানিকারী ব্যবসায়ী জনৈক জ্যোতি বিশ্বাস ও সুবীর ঝা। এভাবে কলকাতা করিডর দিয়ে কোটি কোটি টাকার চন্দন কাঠ চলে যেত বাংলাদেশে। প্রায় চার বছর তদন্তের পর অবশেষে সোমবার অভিযুক্ত ৪ জনকে গ্রেফতার করল সিবিআই। সিবিআই সূত্রে খবর, ২০১৬ সাল থেকে নেতাজি সুভাষ ডক থেকে প্রথম চন্দন কাঠ পাচার হচ্ছে বলে গোপন সূত্রে খবর পায় ডিরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স (ডিআরআই)। সেই অনুযায়ী ডকে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়। বাজেয়াপ্ত হয় ১০০ কোটি টাকা মূল্যের রক্তচন্দন কাঠ। ডিআরআই তদন্তে উঠে আসে, চোখে ধুলো দেওয়ার জন্য রফতানির কনসাইনমেন্টের কাগজপত্র তৈরি হয় ‘আয়রন অ্যান্ড স্টিল’ নামে। সেগুলিকে কাস্টমসের খাতায় বলা হত ‘মিসডিক্লেয়ার্ড আইটেম’। অর্থাৎ, একটি জিনিসের পরিবর্তে অন্য জিনিস বিদেশে পাঠানো। এভাবে পণ্য রফতানির জন্য কাস্টমসে আবেদন করতেন রফতানিকারীরা। ছাড়পত্রও পেয়ে যেতেন। এই মামলায় অভিযুক্ত হিসেবে উঠে আসে জ্যোতি বিশ্বাস ও সুবীর ঝা নামে দুই ব্যবসায়ীর নাম। দেখা যায়, জ্যোতি ও সুবীরের নামে বেশ কয়েকটি ভুয়ো রফতানিকারক সংস্থা রয়েছে। এই রকম একটি সংস্থার নামে ‘আয়রন অ্যান্ড স্টিল’ রফতানির জন্য জাল ইনভয়েস দেখিয়ে আবেদন করা হত কাস্টমসে। সেই ভুয়ো চালানে স্ট্যাম্প-স্বাক্ষর করে ছাড়পত্র দেন কাস্টমস কর্তারা! তদন্তকারীরা জানতে পারেন, এভাবে চন্দন কাঠের প্রায় ১৫ টি কনসাইনমেন্ট পাচার হয়ে গিয়েছে। যার তৎকালীন বাজার দর প্রায় ২০০ কোটি টাকা! এরপর ২০১৭ সালে কলকাতায় অবস্থিত ‘অ্যান্টি করাপশন ব্রাঞ্চ’ এ অভিযোগ দায়ের করে ডিআরআই। জানা যায়, কখনও দামি গাড়ি, কখনও বিদেশ ভ্রমণের টাকা দেওয়া হত দুই কেন্দ্রীয় আমলাকে। কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রককে ডিআরআই এই রিপোর্ট দেওয়ার পর তা যায় প্রধানমন্ত্রীর দফতরে। তারপরই তদন্তে নামে সিবিআই। সোমবার সিবিআইয়ের নিজাম প্যালেসে কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার বিকাশ কুমার ও সুপারিন্টেডেন্ট অব কাস্টমস সন্দীপকুমার দীক্ষিতকে ডেকে পাঠানো হয়। সেখানে তাঁদের দীর্ঘক্ষণ জেরার পর গ্রেফতার করে সিবিআই।

Related Articles

Back to top button
error: