HighlightNewsরাজ্য

ইউক্রেন থেকে ঘরে ফিরল করিমপুরের দুই ছাত্র, স্বস্তি মিললেও উদ্বিগ্ন পড়াশুনার ভবিষ্যৎ নিয়ে

নিজস্ব প্রতিনিধি, টিডিএন বাংলা, নদীয়া: আতঙ্ক কাটিয়ে অবশেষ যুদ্ধ বিদ্ধস্ত ইউক্রেন থেকে বাড়ি ফিরলেন নদিয়ার করিমপুর-২ ব্লকের দুই ছাত্র। ডাক্তারি পড়ুয়া মহম্মদ আব্দুল্লা আলামিন সেখ ও ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া সায়ন বিশ্বাসের ঘরে ফেরায় স্বভাবতই হাঁপ ছেড়ে বাঁচল দুই পরিবার সহ গ্রামের মানুষ। থানারপাড়া থানার টোপলা গ্রামের বাসিন্দা আলামিন কে রবিবার সকালে বিমান বন্দর থেকে ব্লক প্রশাসনের গাড়ি করে পৌঁছে দেওয়া হয় তার জন্মভিটেতে। একইভাবে করিমপুর থানার রহমতপুর গ্রামের সায়ন বিশ্বাস কেউ সোমবার সকালে পরিবারের হাতে তুলে দেয় প্রশাসনের লোকেরা।

এদিকে ওদের বাড়ি ফেরার খবর পেয়ে বাড়িতে দেখতে আসছেন আত্মীয় স্বজন থেকে গ্রামের লোকজন। ওদের মুখে মিসাইল রকেট বোমা বারুদের কাহিনী শুনে শিহরিত হয়ে উঠছেন তারাও। ঘরে ফিরে আপাতত স্বস্তি পেলেও পড়াশুনার ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত ওরা।

ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া সায়ন বিশ্বাসের চোখে মুখে এখনো আতঙ্কের ছাপ। বাড়ি ফিরলেও এখনো কানে ভাসছে কিয়েভের সেই মিসাইলের ভয়ানক আওয়াজ। তার কথায়, ‘চোখের সামনে বোমা পড়তে দেখেছি। আমাদের ঘুম উড়ে গিয়েছিল। প্রাণ হাতে হোস্টেলের কার্নিশে ভয়ের রাত কাটিয়েছি। অবশেষে বাড়ি ফিরে স্বস্তি পেলাম। কিন্তু আমাদের মত কয়েক হাজার ছাত্রছাত্রীদের পড়াশুনায় যাতে ছেদ না পড়ে তার জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

কিয়েভ মেডিকেল ইউনিভার্সিটির ছাত্র মহম্মদ আব্দুল্লা আলামিন সেখ বলছিলেন তার লোমহর্ষক অভিজ্ঞতার কথা, ‘আমাদের হোস্টেল থেকে মাত্র তিন কিমি দূরে মিসাইল পড়েছে। ভয়ঙ্কর ওই শব্দ শুনেই শুরু কান্নাকাটি। ভেবেছিলাম আর হয়তো বাড়ি ফেরা হবে না। যুদ্ধের চার দিন পর আমরা সেখান থেকে বেরিয়ে আসি হাঙ্গেরি বর্ডারে। সেখান থেকে ভারতীয় দূতাবাসের সহযোগিতায় হোটেলে দুদিন থাকি। ওখান থেকে আমাদের বিমানে আনা হয় দিল্লি, তারপর কলকাতা। তারপর কলকাতা থেকে ব্লকের গাড়ি তে বাড়ি ফিরি।’ আলামিন আরও জানায়, যুদ্ধে শুধু ইউক্রেনই ধ্বংস হয়নি, ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে আমাদের কেরিয়ারও। কেন্দ্র ও রাজ্য উভয় সরকারকে তাদের কেরিয়ারের বিষয়ে ভাবারও আকুতি জানাচ্ছে আলামিন।

জমি জায়গা বিক্রি করে ডাক্তারি পড়ানোর স্বপ্ন নিয়ে ছেলে আলামিন কে বিদেশে পাঠিয়েছিলেন পেশায় কৃষক আব্দুর রশিদ সেখ। তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ লাগার খবর শুনেই আমাদের ঘুম উড়ে গিয়েছিল কখন ছেলে ঘরে ফিরবে! এখন ছেলে তো ফিরল কিন্তু ওদের পড়াশুনার কি হবে তাই নিয়ে চিন্তা হচ্ছে। আশা করি সরকার ওদের নিয়ে ভাববে।

করিমপুর-২ বিডিও সামসুজ্জামান বলেন, ওদের সুস্থভাবে বাড়ি ফিরিয়ে দিতে পেরে খুব ভাল লাগছে। ওদের উদ্বিগ্ন বাবা মায়েরাও এবার চিন্তামুক্ত হলেন।

Related Articles

Back to top button
error: