মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর উপর হামলার প্রতিবাদে সরব জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ
নিজস্ব সংবাদদাতা, টিডিএন বাংলা, কলকাতা: রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী মাওলানা সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর উপর হামলার প্রতিবাদে সরব হল জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ। শনিবার রাজ্য জুড়ে পথে নেমেছিল সংগঠন। বিভিন্ন জায়গায় পথ অবরোধ করতেও দেখা যায়। এক প্রেস বিবৃতিতে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের রাজ্য সম্পাদক মুফতি আব্দুস সালাম জানান,
সরবেড়িয়া পেট্রলপাম্প সংলগ্ন সড়কের উপর জনাব সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী সাহেবের গাড়ি আটক করে। প্রায় ১৫ মিনিট ধরে স্থানীয় তৃণমূল নেতা শাহজাহান এর পরিকল্পনায় গাড়ির উপর তারা চড়াও হয়। কোভিড পরিস্থিতির কোনো পরোয়া না করে শত শত মানুষ দুষ্কৃতী চেহারা নিয়ে ড্রাইভার আলীর গাড়ির চাবি, এমনকি পুলিশের গাড়ির চাবি কেড়ে নেওয়ার চাপ, জনাব চৌধুরী সাহেবের দেহরক্ষীর সাবির ও উসমান কে মারধর করে, জনাব চৌধুরী সাহেব গাড়ি থেকে নামলে দরজায় তাকে পিষে মারার চেষ্টা- এহেন এক ঘৃণ্য কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয় তারা। তৃণমূলের পতাকা ধরে তারা বলে, আমরা তৃণমূলের কর্মী। গাড়ি লুঠ করেছি বেশ করেছি। এখানে ত্রাণ বিলি হবে না। উল্লেখ্য ইতিমধ্যে প্রায় ৪০০ পরিবারের জন্য আলু, পেঁয়াজ, ত্রিপল, শাড়িসহ ত্রাণসামগ্রীবাহী গাড়ি কলকাতার জমিয়ত ভবন থেকে সরবেড়িয়া যাওয়ার পথে দুপুর একটার সময় ওখানকার গুন্ডারা সবকিছু লুট করে নিয়ে যায়।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়,’সেই খবর জানার চৌধুরী সাহেব নিজে নবান্নের ডিজি কন্ট্রোলে এবং তার একান্ত সচিব প্রদীপ আগারওয়াল এসডিপিও বসিরহাট কে জানিয়ে ওখানে যাওয়ার কথা বলেন। এসডিপিও জানান যে ওখানে স্থানীয় থানার পুলিশ থাকবে। কিন্তু বাস্তবে ওরা ওখানে ছিল না। সব জেনে ওরা আত্মগোপন করে ছিল। এদিকে জনাব চৌধুরী সাহেব দুষ্কৃতীদের বলেন, আমরা সারা রাজ্যে ত্রাণ দেই। জনগণের স্বার্থে ত্রাণ সামগ্রী ফেরৎ দিন। ওরা বলে তুই নেমে আয়। এখানে শাহজাহানই শেষ কথা। আমরা জানি তুই মন্ত্রী। কিন্তু এখানে কোন মন্ত্রী-টুন্ত্রী চলবে না। আমরা যা করেছি ঠিক করেছি। বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোকে মেরে ফেলবো। ওদের মধ্যে অনেকে এর মধ্যে গাড়িতে সজোরে আঘাত করতে করতে জনাব চৌধুরী সাহেবের দিকে মারমুখী হয়ে তেড়ে এলে নিরাপত্তারক্ষীরা ওঁকে বলেন স্যার আপনি গাড়িতে বসুন, নইলে ওর আপনাকে দরজায় পিষে মেরে দেবে। তিনটি গাড়িভর্তি সশস্ত্র পুলিশ থাকলেও তাদের সিংহভাগ নিষ্ক্রিয় হয়ে বসেছিলেন। মাত্র তিনজন সাব-ইন্সপেক্টর গাড়ি থেকে নেমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। তারা গাড়িতে বসে আমোদ-প্রমোদ করার পরিবর্তে গাড়ি থেকে নামলে দুষ্কৃতীরা কোনভাবেই এই সাহস পেতনা। পুলিশি এই নিষ্ক্রিয়তার দুষ্কৃতীদের জন্য কতটা সহায়, সেটা নিশ্চিয় পশ্চিমবঙ্গ সরকার সহজেই অনুধাবন করতে পারবে। চৌধুরী সাহেবের উপর এভাবে বারংবার হামলা হবে কেন? তার নিরাপত্তায় বা এত খামতি কেন? কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীরা নিষ্ক্রিয় ছিল কেন? এই প্রশ্নগুলির উত্তর প্রয়োজন। সিপিএমের শাসনামলেও জমিয়ত ত্রাণ দিয়েছে। কিন্তু জমিয়তের ত্রাণে হাত দেওয়ার দু:সাহস সিপিএমও দেখায়নি।”
জমিয়ত বিবৃতিতে আরও বলেছে,”৪০ বছর ধরে চৌধুরী সাহেবের কর্তব্যের অন্যতম দিক হলো – রাজ্যজুড়ে দুঃখী মানুষের পাশে দাড়ানো। তিনি মরে গেলেও এ কাজ থেকে বিরত হতে পারবেন না। জনাব মাওলানা সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী সাহেব প্রথমে জমিয়তের রাজ্য সভাপতি। তারপরে রাজ্যের ক্যাবিনেট মন্ত্রী। এরকম সম্মানিত ব্যক্তিকে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা অপমানিত করবে, মারবে আমরা তা মেনে নিতে পারবোনা। সিপিএমের আমলে আমরা মেনে নিই নি, এখনও মেনে নেব না।”
শুক্রবারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে,এর বিরুদ্ধে রাজ্যজুড়ে ১৭ই জুলাই শনিবার প্রতিটি শাখায় জমিয়ত কর্মীরা অনূর্ধ্ব 50 জন জমিয়তের পতাকা ধরে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ প্রদর্শন করে তা ভিডিও রেকর্ডিং করে সর্বত্র ছড়িয়ে দেবে। এই ভন্ডামি বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। দোষীরা শাস্তি পাক। চৌধুরী সাহেব কে মন্ত্রিসভায় যাওয়ার সুযোগ জমিয়তের রাজ্য কমিটি দিয়েছে বারবার অপমানিত হওয়ার জন্য নয়। এহেন ন্যাক্কারজনক ঘটনার সবটাই পুলিশ প্রশাসনের নখদর্পণে। আমরা মূল পান্ডা শাহজাহানসহ তার সহযোগী জিয়াউদ্দিন, শফিকুল, রাজসহ অন্যদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।”