নিজস্ব প্রতিনিধি, টিডিএন বাংলা, নদীয়া: গ্রামে গ্রামে সবজি ফেরি করেন বাবা। অভাবের সংসার। সরকারি ঘর মেলেনি। চার সদস্যের পরিবারটির মাথা গোঁজার ঠাঁই বলতে পাটকাটি টিন টালির ছাউনি। ঝড় বৃষ্টিতে ঘরে জল পড়ে। আর এই পরিবেশ থেকেই অদম্য ইচ্ছে আর কঠোর পরিশ্রমে ভর করে উচ্চমাধ্যমিকে ভূগোলে একশোয় একশো সহ নজর কাড়া নম্বর তুলেছে অমৃত দাস। অমৃতর বাড়ি করিমপুরের থানারপাড়া থানার ফলিয়া গ্রামে। নারায়ণপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কলা বিভাগে তার মোট নম্বর ৪৭৭. বিষয় ভিত্তিক বাংলায় ৯৫, ইংরেজিতে ৮০, ভূগোলে ১০০, দর্শনে ৯৪, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ৯৭।
আগামীতে ভূগোল নিয়ে গবেষণা করার ইচ্ছে অমৃত দাসের। কিন্তু সেই পর্যন্ত পৌঁছুতে তো অনেক টাকা খরচ হবে। অত টাকা কোথায় মিলবে তা নিয়েও চিন্তিত অমৃত। দরিদ্র এই মেধাবীর কথায়, ‘সংসার চালাতে কষ্ট হলেও বাবা মা আমাকে কখনো সেই অভাব বুঝতে দেয়নি। তারা সব সময় আমাকে পড়াশুনা চালিয়ে যেতে উৎসাহ জুগিয়েছে। জোর বৃষ্টিতে ঘরে জল পড়ে বই খাতা ভিজে যায়। কিন্তু পড়ার মনোবল হারায় নি কখনো আগামীতে আরও পড়তে চাই।’
অমৃত তার টিউশনি খরচ সহ পড়ার যাবতীয় খরচ জোগাড় করত টিউশনি পড়িয়ে। বাবা ভজন দাস বলেন, ‘সবজি ফেরি করে মাসে যে ৫-৬ হাজার টাকা আয় হয় তাতে সংসার চালাতেই হিমশিম খেতে হয় দেখে ছেলে নিজেই টিউশন পড়িয়ে নিজের পড়ার খরচ চালায়। সামনে ওর আরও বড় খরচ। কিভাবে সামলে উঠব ভেবে পাচ্ছি না।’ প্রধান শিক্ষক বিজন সরকার বলেন, ‘প্রথম থেকেই মেধাবী অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের অমৃত দাসের পাশে কেউ দাঁড়ালে আরও এগিয়ে যেতে পারবে ছেলেটি।’