দেবিকা মজুমদার, টিডিএন বাংলা: একদিকে যখন গোটা দেশে কোথাও লাভ জিহাদ বা কোথাও ধর্মীয় গোঁড়ামি বা ইসলামোফোবিয়ার নামে সাম্প্রদায়িক বিচ্ছিন্নতার চিত্র ধরা পড়ছে তেমনি অপর দিকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ দিয়ে মানুষকে হতবাক করে দেন কিছু মানুষ। কখনো নিজের পৈত্রিক ভিটে হিন্দু মন্দির বানানোর জন্য সমর্পণ করে দেন আল্লাহর বান্দা তো কখনো মসজিদে গিয়ে সম্পূর্ণ হিন্দু রীতি নীতি মেনে বিয়ে করে সাম্প্রদায়িক ভাতৃত্বের এবং সৌহার্দের এক নতুন উজ্জ্বল উদাহরণ সৃষ্টি করেন এক হিন্দু দম্পতি। এই অনন্য নজির গড়লেন কেরালার দম্পতি অঞ্জু এবংং শরৎ। এই ঘটনার কথা তুলে ধরে একটি সংবাদমাধ্যমের খবর শেয়ার করে নিজের অফিশিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্টে একটি টুইট করে জানিয়েছেন কংগ্রেসের বড়িষ্ঠ নেতা শশী থারুর।
একটি টুইট করে শশী থারুর লিখেছেন,”এই বিবাহ (একটি মসজিদে আয়োজিত হিন্দু রীতিনীতি মেনে) গত রবিবার সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে, তবে অনেকেই ভিডিওটি দেখেননি। কেরালায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সহযোগিতার কি দুর্দান্ত কাহিনী!”
This wedding (Hindu nuptials conducted in a masjid) made news last Sunday, but not many have seen the video. What a great story of communal harmony & co-operation in Kerala! pic.twitter.com/ekIR9USDyv
— Shashi Tharoor (@ShashiTharoor) November 21, 2020
কংগ্রেসের বরিষ্ঠ নেতা শশী থারুরের শেয়ার করা ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে কেরালার একটি মসজিদে রীতিমতো হিন্দু রীতি নীতি মেনে এমনকি মসজিদের ভেতরে পুরোহিত দিয়ে মন্ত্রোচ্চারণ করে, মাল্যদান করে সম্পূর্ণ হিন্দু আচার-অনুষ্ঠান মেনে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছেন ওই দম্পতি। গত রবিবার কেরালার আলাপ্পূজা এলাকার চেরুবল্লি মুসলিম জামাত মসজিদে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন ওই দম্পতি। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, কনের মায়ের আর্থিক সমস্যা থাকার দরুন মেয়ের বিবাহ দিতে অসুবিধায় পড়ে নিকটবর্তী ওই মসজিদে সাহায্য প্রার্থী হন তিনি। মসজিদের তরফ থেকে কনের মায়ের এই আর্জিতে সাড়া দিয়ে বিয়ের জন্য শুধুমাত্র মসজিদের দরজাই খুলে দেওয়া হয়নি তার সঙ্গে বিয়ে উপলক্ষে কনেকে দশটি সোনার অলংকার এবং কুড়ি লক্ষ টাকা উপহার দেওয়া হয়েছে।
এরপর মসজিদ চত্বরের ভেতরেই তৈরী করা হয় বিয়ের মন্ডপ। গোটা মসজিদটাকে সাজিয়ে ফেলা হয় ওই হিন্দু দম্পতির বিয়ের উপযোগী বিভিন্ন সরঞ্জামে। শুধু তাই নয়, এই বিবাহ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতদের আহারে বিরিয়ানির বদলে পরিবেশন করা হয় সম্পূর্ণ নিরামিষ আহার।
এই বিয়ে গোটা দেশের জন্য এক অসাধারণ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং সৌহার্দের নিদর্শন বলে মন্তব্য করেছেন আলাপ্পূজার বিধায়ক এমএ আরিফ। কংগ্রেসের বলিষ্ঠ নেতা শশী থারুরের টুইটে শেয়ার করা ওই সংবাদমাধ্যমের প্রকাশিত খবর অনুযায়ী এই বিবাহ অনুষ্ঠান সম্পর্কে এম এ আরিফ বলেন,”এই বিয়ে শুধুমাত্র কেরালার জন্য নয় গোটা দেশের জন্য একটি সন্দেশ বহন করে। আজকের দিনে যখন মানুষ মানুষকে মেরে ফেলছে ধর্মের নামে সেখানে আমরা মানুষকে শেখাচ্ছি কিভাবে একে অপরকে ভালবাসতে হয়। এই বার তাই আমরা দিচ্ছি। অঞ্জু এবং শরতের একটি সুখী বৈবাহিক জীবন কামনা করি।”
নিজেদের এহেন বৈবাহিক বন্ধনে খুশি কেরালার ওই দম্পতি অঞ্জু এবং শরৎও।