মিসরে আবারও এক গণ অভ্যুন্থানের মাধ্যমে শিঘ্রই পতন ঘটবে আল সি সির : ভবিষ্যতবানী ড. মামদুহ হামজা
টিডিএন বাংলা ডেস্ক : মিডল ইস্ট আইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মিসরের বামপন্থী নেতা ড. মামদুহ হামজা বলেন, ‘ বর্তমান প্রেসিডেন্ট আল সি সি জণগনের সমর্থন হারিয়েছেন। তাঁর স্বৈরাচারী শাসনে অতিষ্ট মিসরবাসী। ফলে তাঁর অত্যাচার, জুলুম, নিপীড়ন থেকে বাঁচতে খুব শিঘ্রই মিসরে আবারও একটি গণ অভ্যুত্থান ঘটবে। তবে এই অভ্যুন্থান হবে আগের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা, এবার হবে টিকে থাকার লড়াই।’
আল সিসির প্রধান প্রতিপক্ষ ইখওয়ানুল মুসলিমিনকে তো তিনি প্রায় ধ্বংস করে দিয়েছেন, তবে এই অভ্যুন্থান ঘটাবে কারা- এই প্রশ্নের উত্তরে ড: হামজা বলেন, সিসি মূলত তেমন শাক্তিশালী নয়। তাকে দেখতে যতটা শক্তিশালী মনে হয়, বাস্তবতা কিন্তু এমন নয়। বর্তমানে তার অবস্থান অত্যন্ত নড়বড়ে। যে কোনো মুহূর্তে তার বিরুদ্ধে গণজাগরণ সৃষ্টি হতে পারে।,
এই গণ অভ্যুন্থানের বিষয়ে হামজা জানান, ‘এটি গণমানুষের আন্দোলন হবে। এমন কৃষক আন্দোলনে অংশ নেবেন, যাদের জমিতে পানি নেই চাষের জন্য। এমন শিক্ষকরা এতে অংশ নেবেন, যা স্কুলগুলোতে ক্লাসরুমের অভাবে পড়াতে পারছেন না। এমন অভিভাবকরা আন্দোলনের যোগ দেবেন, যারা মনে করছেন তাদের সন্তান শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। চিকিৎসা বঞ্চিত মানুষও হয়তো থাকবে আন্দোলনে।’
ড: হামজা অভিযোগ করেন, আল সি সির আমলে মিসরের অর্থনৈতিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে। তিনি এমন ব্রিজ ও রাস্তা নির্মাণে অর্থ ব্যয় করেছেন যা সাধারণ মানুষের কাজে আসেনা। তিনি সুয়েজ খালের শাখা খনন করতে প্রচুর অর্থ ব্যয় করেছেন অথচ এটা দেশের উপকারে তো আসবেই না উল্টে কৃ্ষিকাজে জল সংকট দেখা দেবে। এছাড়া আল সি সির বিরুদ্ধে তাঁর বিরোধীদের মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার,হত্যা ও গুমের অভিযোগ আনেন।
উল্লেখ্য যে, হামজা এর আগে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির বিরুদ্ধে ২০১৩ সালে বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি অংশ নেন ২০১১ সালে স্বৈরাচারী হোসনি মোবারকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভেও। তিনি ছিলেন আল সি সির কট্টর সমর্থক ও সহযোগী। কিন্তু বিভিন্ন বিষয়ে আল সি সির সঙ্গে হামজার মত বিরোধ শুরু হয়। এই বিরোধ চরমে পৌঁছালে তিনি মিসর ত্যাগ করেন।
তিনি তো আল সি সির সমর্থক ছিলেন, এখন তাঁর বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি সামরিক শাসন ও গুপ্তহত্যার বিরুদ্ধে। আল সি সি প্রথমে প্রেসিডেন্ট পদ দখল করবেন না বলে কথা দিলেও রাখেনি। আমি রাজনৈতিক ইসলামের বিরুদ্ধে, তাই ইখওয়ানের বিরোধিতা করে ছিলাম।