টিডিএন বাংলা ডেস্ক : বলিউড পরিচালক বিনোদ কাপরি ঘোষণা করলেন তিনি ‘গুজরাট ফাইলস’ বানাতে চান। সে ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিজি কি সেই ছবিটির মুক্তি আটকে দেবেন না বলে আশ্বস্ত করবেন? সেই প্রশ্নও করেন তিনি। সদ্যই মুক্তি পেয়েছে বিবেক অগ্নিহোত্রীর ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’। মুক্তির পর ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ এর ব্যাপক প্রশংসা করেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। ইতিমধ্যে বহু রাজ্যে করমুক্ত করে দেওয়া হয়েছে এই ছবি। পাশাপাশি মধ্যপ্রদেশ এবং আসামে এই ছবি দেখার জন্য ছুটি পর্যন্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বক্স অফিসে সফল ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’। কাশ্মীর থেকে কাশ্মীর পন্ডিতদের নির্বাসনের মতো স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে তৈরি এই ছবি। ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ দেখে একদিকে যেমন আপ্লুত হিন্দুত্ববাদীরা, তেমনই অন্যদিকে এই ছবিকে বিজেপির উদ্দেশ্যমূলক প্রচার হিসাবেও সমালোচনা করেছেন অনেকে। ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’-এর পর অনেকেরই দাবি ছিল গুজরাট দাঙ্গা নিয়েও ছবি বানানো হোক এবং তা মুক্তি পাক বড় পরদায়।
সম্প্রতি এই ছবি দেখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘সব জায়গায় কাশ্মীর ফাইলস ছবির চর্চ্চা চলছে। আর যারা সিনেমার ধ্বজাধারী হয়ে ঘোরে তাদের মাথা ঘুরে গেছে। তথ্য আর আর্টের উপর তৈরি এই ছবির প্রশংসা না করে ছবিটিকে পিছনে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। কেউ যদি সত্যি ঘটনা তুলে আনার সাহস দেখাচ্ছে কিন্তু সেই সত্যি মেনে নেওয়ার সাহস নেই, সেই সত্যি সকলে জানুক তা মেনে নেওয়ার সাহস নেই, তাই বিগত ৪-৫ দিন ধরে ষড়যন্ত্র চলছে। সত্য ঘটনা তুলে আনা সবসময় দেশের পক্ষে হিতকর। তার অনেক দিক থাকতে পারে। যার মনে হয়েছে এই সিনেমায় ভুল দেখানো হয়েছে সে আরেকটা সিনেমা বানাক।’
এরপরই পরিচালক বিনোদ কাপরি তার প্রথম টুইটে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে ট্যাগ করে লেখেন, ‘তথ্য ও শিল্পের উপর ভিত্তি করে গুজরাট ফাইলস নামে একটি ছবি তৈরি করতে আমি প্রস্তুত এবং এই ঘটনায় আপনার ভূমিকাও বিশদভাবে উল্লেখ করা হবে। আজ দেশের সামনে আমাকে আশ্বস্ত করবেন নরেন্দ্র মোদিজি যে আপনি ছবির মুক্তি আটকে দেবেন না?’ এই টুইটের কিছুক্ষণ পরে দ্বিতীয় টুইটে পরিচালক বিনোদ কাপরি লেখেন, ‘আমার প্রথম টুইটের পর কিছু প্রযোজকের সঙ্গে কথাও হয়েছে। তারা গুজরাট ফাইলস তৈরি করতে প্রস্তুত। প্রধানমন্ত্রী এখন যে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলছেন, সেটা যে পরেও থাকবে এই নিশ্চয়তা প্রয়োজন।’ বিনোদ কাপ্রির টুইটে সমর্থন জানিয়েছেন অনেকেই। বিনোদের এই দুটি টুইটই ক্রমশ ভাইরাল হচ্ছে।
উল্রেখ্য, ২০০২ সালের হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গায় গুজরাটে দুহাজারেরও বেশি লোক নিহত হয়েছিলেন, যাদের বেশির ভাগই ছিলেন মুসলিম। ওই ভয়াবহ দাঙ্গার সময় গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দাঙ্গা ও মুসলিম হত্যার জন্য সে সময় তার ভূমিকাকে দায়ী করেন অনেকে। ২০১৪ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর মুসলিমদের উপরে সহিংসতা ও নির্যাতন বাড়ছে বলেও অভিযোগ করেছেন অনেকেই। ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’-এর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে অনেক মুখ্যমন্ত্রীরাও। এরপরই অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, তাহলে গুজরাট ফাইলসও তৈরি করা হোক। আর সেটাও যেন সেন্সর বোর্ডের পক্ষ থেকে ছাড় পায়। দাঙ্গা লাগাতে পারে এমন যুক্তি দিয়ে যেন সেই ছবির মুক্তি আটকে দেওয়া না হয়!