HighlightNewsরাজ্য

হিজাব পরায় স্বাস্থ্যকর্মীকে ঢুকতে বাধা ও অপমানের অভিযোগ মালদার রতুয়ায়

টিডিএন বাংলা ডেস্ক : হিজাব পরে আসায় এক গ্রামীণ স্বাস্থ্যকর্মীর সঙ্গে অভব্য আচরনের অভিযোগ উঠেছে ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত নার্সের বিরুদ্ধে। রতুয়া ১ ব্লকের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ঘটনা। ওই দায়িত্বপ্রাপ্ত নার্সের বিরুদ্ধে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ও বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ওই গ্রামীণ স্বাস্থ্যকর্মী। ঘটনার তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক। বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলেও জানিয়েছেন বিডিও।

জানা গিয়েছে অভিযোগকারী গ্রামীণ স্বাস্থ্যকর্মী আনোয়ারা খাতুন রতুয়া ১ ব্লকের চাঁদমুনি ১ অঞ্চলের গোরক্ষা গ্রামের সাব সেন্টারের এএনএম। তাঁর অভিযোগ যে তিনি স্বাস্থ্য দফতর নির্ধারিত পোশাক পরেই নিয়মিত ডিউটি করেন। তবে নির্ধারিত সেই পোশাকের রংয়ের হিজাব বহুদিন থেকেই পরেন তিনি। গত বুধবার হিজাব পরে ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাওয়ায় দায়িত্বপ্রাপ্ত নার্স তাঁকে অপমান করেন তাঁর রুমে ঢুকতে পর্যন্ত দেননি। সংশ্লিষ্ট নার্স তাঁকে জানিয়ে দেন হিজাব খুলে না আসলে তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। তাই তিনি গোটা ঘটনার বিবরণ দিয়ে বিএমওএইচ ও বিডিওকে অভিযোগ জানিয়েছেন। তিনি হিজাব পরেই কাজ করেন ভবিষ্যতেও করতে চান।

আনোয়ারার বয়ান অনুযায়ী ‘আমি প্রায় ১৫ বছর ধরে স্বাস্থ্য দফতরে কাজ করছি। গ্রামীণ স্বাস্থ্যকর্মী হিসাবে গোরক্ষা গ্রামে কাজ করি। সরকার নির্ধারিত পোশাক পরেই সবসময় ডিউটি করি। তবে সেই পোশাকের রংয়ের হিজাবও পরি। এনিয়ে আগে কখনও কোনও সমস্যা হয়নি। তবে হিজাব পরে কাজ করায় সিনিয়র নার্স দিদিমনি তা নিয়ে আগেও প্রশ্ন করেছেন।

সমস্যা দেখা দেয় মাস তিনেক আগে। ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রতি মাসে আমাদের বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে আমি হিজাব পরেই গিয়েছিলাম। সেখানে সবার সামনে দিদি আমাকে বলেন আমি যেন হিজাব পরে বৈঠকে না আসি। শুধু তাই নয় হিজাব পরে আমি যেন ডিউটি কিংবা তাঁর রুমেও না যাই। আমি কারণ জানতে চাইলে তিনি আমাকে বৈঠক থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। যাইহোক তারপরেও এতদিন কেটে গিয়েছে। আমি হিজাব ছাড়িনি। কিন্তু ফের সমস্যা দেখা দেয় বুধবার। ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট দফতরে মাসিক রিপোর্ট জমা দিতে এসে হিজাব পরে থাকায় সিনিয়র দিদি বলে দেন যে তিনি আমার রিপোর্ট জমা নেবেন না। হিজাব পরে তিনি আমাকে তাঁর রুমেও ঢুকতে দেননি।

আমি প্রতিবাদ করলে আমার কথা না শুনে চিৎকার শুরু করে দেন। চিৎকার চেঁচামেচির জেরে বিএমওএইচ আমাকে ডেকে পাঠান। আমার কাছে গোটা ঘটনা শোনেন। তিনিও দিদিকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু দিদি আমার কোনও কথায় কান দিতে চাননি। বিএমওএইচের সঙ্গেও তিনি ঝামেলা শুরু করে দেন। অগত্যা রিপোর্ট জমা না দিয়েই আমাকে সেখান থেকে ফিরে আসতে হয়। তবে এনিয়ে আমি বিএমওএইচ ও বিডিওর কাছে অভিযোগ জমা করেছি।’

বিএমওএইচ মাসুদ রহমান জানান ‘ওই স্বাস্থ্যকর্মী আমার কাছে লিখিত অভিযোগ জমা করেছেন। তবে ঠিক কী নিয়ে সমস্যা হয়েছে তা আমি ঠিকমতো জানি না। এনিয়ে আমি এখনও নার্সের সঙ্গে কথা বলতে পারিনি। অভিযোগের ভিত্তিতে আমি অবশ্যই এনিয়ে তদন্ত করব। যদি ছোটখাটো কোনও সমস্যা হয়ে থাকে তবে আমি তা সমাধান করার চেষ্টা করব।’

এনিয়ে অভিযুক্ত নার্স শম্পা প্রামাণিক কোনও প্রতিক্রিয়া জানাতে রাজি হননি। তবে বিডিও রাকেশ টোপ্পো জানান এমন অভিযোগের কথা তিনি শুনেছেন। জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলে এবিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন বলে জানান তিনি। এ ব্যাপারে মালদার জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র জানিয়েছেন নির্দিষ্ট ইউনিফর্মের সঙ্গে কেউ স্কার্ফ পরে এলে কারও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সূত্র- পুবের কলম পত্রিকা

Related Articles

Back to top button
error: