![](https://bangla.tdnworld.com/wp-content/uploads/2022/05/Manik-Shah.jpg)
টিডিএন বাংলা ডেস্ক: ত্রিপুরার পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হবেন মানিক সাহা। বিধায়ক দলের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য রাজ্যসভার সাংসদ মানিক সাহার নামেই শিলমোহর দেওয়া হয়েছে। এদিকে নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মানিক সাহার নাম ঘোষণার পরেই প্রকাশ্যে এল ত্রিপুরার গেরুয়া শিবিরের গোষ্ঠী কোন্দল। মানিক সাহার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সিদ্ধান্তে মোটেও খুশি নন বিধায়কদের একাংশ। বৈঠকের পরে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন ওই বিধায়করা। ভাঙলেন চেয়ার টেবিল। শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সামনেই নতুন মুখ্যমন্ত্রীকে ধাক্কা দিলেন রাজ্যেরই কারামন্ত্রী রামপ্রসাদ পাল। যদিও এই সমস্ত ক্ষোভ-বিক্ষোভ উপেক্ষা করেই শপথ গ্রহণের উদ্দেশ্যে রাজভবনের দিকে রওনা হন “বিপ্লব ঘনিষ্ঠ” হিসেবে পরিচিত মানিক সাহা। ইতিমধ্যেই তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। প্রকাশ্য সভায় তাঁর হাতে তুলে দিয়েছেন ফুলের তোড়া। জানিয়েছেন শুভেচ্ছা।
শনিবার বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ বিপ্লব কুমার দেব মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন। ইস্তফার পর বিপ্লব দেব জানান, ২০২৩ সালে হতে চলা বিধানসভা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া বাকি আছে। তিনি আরো বলেন যে এ প্রসঙ্গে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে কথাও বলেছেন।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, বিপ্লব দেব ত্রিপুরার বিজেপি প্রধান হতে চলেছেন। শুক্রবারই বিপ্লব দেব স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সূত্রের খবর অনুযায়ী, গতকালই অমিত শাহ জানিয়ে দিয়েছিলেন নির্বাচনে এবার নতুন মুখের সাথে ময়দানে নামতে চান তিনি।
প্রসঙ্গত, ডক্টর মানিক সাহা ত্রিপুরা বিজেপি প্রধান এবং রাজ্যসভার সাংসদ। সূত্রের খবর অনুযায়ী, মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণুদেব শর্মার নামও আলোচনার তালিকায় ছিল। ত্রিপুরায় আগামী বিধানসভা নির্বাচন ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে হবে। তার দশ মাস আগে বিপ্লব দেবের ইস্তফার পর বিজেপিতে ভূপেন্দ্র যাদব এবং বিনোদ তাবড়েকে পর্যবেক্ষক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে।
এদিন ইস্তফা দেওয়ার পর সংবাদমাধ্যমের কাছে বিপ্লব দেব জানিয়েছিলেন,”দল সবার ওপরে এবং আমি একজন নিষ্ঠাবান কর্মী। হাই কমান্ড আমার ওপর ভরসা করেছিল এবং এবার ইস্তফা দেবার জন্য বলেছে তাই আমি ইস্তফা দিলাম। এ প্রসঙ্গে আমি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছেন এখনো নির্বাচনে দেরি আছে। এখন আমি দলকে মজবুত করার জন্য কাজ করব।”
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন সরকারি চিকিৎসক মানিক সাহা। এরপর বিপ্লব দেবের হাত ধরে দ্রুতগতিতে দলে পদোন্নতি হতে থাকে তাঁর। ২০১৮ সালের ভোটে তাঁকে টিকিট দেয়নি দল। যদিও নির্বাচনের পর ত্রিপুরা বিজেপির প্রধান পদে অভিষিক্ত হন মানিক সাহা। রাজ্য সভাপতির পর ত্রিপুরা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট হন তিনি। এরপর আগামী বছর হতে চলা বিধানসভা নির্বাচনের মাত্র দশ মাস আগে বিপ্লব দেবের পদত্যাগের পর ত্রিপুরার দায়িত্ব হাতে তুলে নিলেন মানিক সাহা।
বিজেপি গত ১১ মাসে মোট চারটি রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী বদল করেছে। গতবছর জুলাই মাসে তিরথ সিং রাওয়াতকে বদলে পুষ্কর সিংহ ধামীকে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী করা হয়। ওই একই মাসে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদদুরাপ্পাকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী করা হয় বাসবরাজ বোম্মাইকে। এরপর সেপ্টেম্বরে বিজয় রূপানিকে সরিয়ে ভূপেন্দ্র ভাই পটেলকে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী করা হয়। এবার ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের বদলে মুখ্যমন্ত্রী করা হচ্ছে মানিক সাহাকে।