পদ্মশ্রী সম্মানিত শিল্পীদের সরকারি আবাসন খালি করার নির্দেশ দিল গৃহ নির্মাণ ও নগর বিষয়ক মন্ত্রালয়

 

টিডিএন বাংলা ডেস্ক: করোনা পরিস্থিতিতে একদিকে সরকারের পক্ষ থেকে বাড়িওয়ালাদের কাছে আবেদন করা হচ্ছে যাতে তারা কোন পরিস্থিতিতেই ভাড়াটিয়াদের বাড়ি খালি করতে না বলেন। অপরদিকে, সরকারের গৃহনির্মাণ ও নগর বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আগামী ৩১ শে ডিসেম্বরের মধ্যে পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত যতীন দাস, পণ্ডিত ভজন সোপোরি, রিতা গাঙ্গুলি এবং ওস্তাদ এফ ওয়াসিফুদ্দিন দাগর, বীরজু মহারাজ সহ বহু শিল্পীকে সরকারি আবাসন খালি করার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। সরকারের এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করে শিল্পীদের পক্ষ থেকে এই নোটিশ প্রত্যাহার করার আবেদন জানানো হয়েছে।

দেশের সেরা পদ্মশ্রী পুরষ্কারে ভূষিত সন্তুর বাদক পণ্ডিত ভজন সোপোরিও সরকারী আবাস খালি করার নোটিশ পেয়েছেন। ২০০৪ সালে সরকারের পক্ষ থেকে তাঁকে এই সরকারি আবাস বরাদ্দ করা হয়। এই আবাস খালি করার সরকারি নোটিশ পেয়ে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন যে এই নোটিশ এমন সময়ে দেওয়া হয়েছে, যখন দেশে করোনার পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ অবস্থায় রয়েছে।

প্রসঙ্গত, শিল্পী কোটার আওতায় দেশের বিশিষ্ট শিল্পীদের এই সরকারই আবাসগুলি দেওয়া হয়ে থাকে। প্রতিদিন বছর অন্তর একটি এফিডেভিট করা হতো এবং শিল্পীদের আবাসে থাকার সময়সীমা বাড়ানো হতো। যদি এই সময়ের মধ্যে কোন শিল্পী নিজের বাড়ি কিনে ফেলেন তাহলে তাকে এই আবাস ছেড়ে দিতে হতো, কিন্তু এখনও পর্যন্ত বেশিরভাগ শিল্পীর কাছেই তাদের নিজেদের বাড়ি নেই।

সরকারের এই সিদ্ধান্তের পর শিল্পী মহলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে সারাবিশ্বে এই শিল্পীরা দেশের নাম উজ্জ্বল করেন। তাঁদের সাথে সরকারের এহেন ব্যবহার করা উচিত নয়। ভজন সোপোরি জানিয়েছেন যে তিনি আড়াইশোর বেশি পুরষ্কার পেয়েছেন। প্রায় ৬০ বছর ধরে তিনি অনুষ্ঠান করছেন। সরকারের এই বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত।

পণ্ডিত ভজন সোপোরির ছেলেও সন্তুর বাদক। তিনিও জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক অনেক পুরষ্কার পেয়েছেন। সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, গত ১০ মাসে করোনা পরিস্থিতির কারণে শিল্পীদের অবস্থা খুবই খারাপ। কোনও উপার্জন না করেও শিল্পীরা স্ব স্ব ক্ষেত্রে কাজ করে চলেছেন। তিনিও সরকারের এই সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট নন।

পদ্মশ্রী পুরষ্কারে ভূষিত ধ্রুপদী সংগীতশিল্পী ওস্তাদ এফ ওয়াসিফুদ্দিন দাগরও গৃহনির্মাণ ও নগর বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এই নোটিশ পেয়েছেন।তাঁকেও আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বাড়ি খালি করতে বলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করে, সংগীতশিল্পী ওস্তাদ এফ ওয়াসিফুদ্দিন দাগর সংবাদমাধ্যমের কাছে জানিয়েছেন, তাঁরা সময়মতো ভাড়া দিচ্ছেন। দেশের নাম উজ্জ্বল করছেন তা সত্বেও এ ধরনের ব্যবহার করা হলে দুঃখ তো হবেই।

সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা প্রকাশ্যে আসার পর শিল্পী মহলের তরফ থেকে এই বিষয়ে গভীর দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে। পাশাপাশি এই সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।