টিডিএন বাংলা ডেস্ক: সেনাবাহিনীতে নিয়োগের কেন্দ্রের নয়া প্রকল্প “অগ্নিপথ”-এর বিরোধিতা হচ্ছে দেশের একাধিক রাজ্যে। এবার ওই প্রকল্পের বিরোধিতায় একাধিক বিরোধী রাজনৈতিক দলের তরফে আজ “ভারত বন্ধের” ডাক দেওয়া হয়েছে। রেল রোকো আন্দোলন থেকে রেলের কামরায় আগুন, রাস্তা অবরোধ, মিছিল কিছুই বাদ যায়নি আন্দোলনের কর্মসূচিতে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তৎপর হয়েছে প্রশাসন। রেলওয়ের তরফে ইতিমধ্যেই আরপিএফ এবং জিআরপিকে সতর্ক করা হয়েছে। পাশাপাশি সহিংস আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে গুরুতর ধারায় মামলা দায়েরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিকে, অগ্নিপথের বিরোধিতায় যুব কংগ্রেসের কর্মীরা এদিন দিল্লির শিবাজি ব্রিজ স্টেশনে ৪০ মিনিটের জন্য ট্রেন অবরোধ করে। পরে ওই যুব কংগ্রেস কর্মীদের আটক করে পুলিশ।
অনুদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি রাজ্যে বন্ধ নিয়ে আলোড়ন শুরু বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। উত্তরপ্রদেশ, বিহার, রাজস্থান সহ একাধিক রাজ্যে দেখা যাচ্ছে বিক্ষোভ। বেশ কিছু জায়গায় চলছে ট্রেন অবরোধ। পশ্চিমবঙ্গও সেই তালিকা থেকে বাদ যায়নি। হাওড়া স্টেশনেও ট্রেন বাতিলের কারণে অসুবিধায় পড়েছেন যাত্রীরা। দিল্লী এবং এলাহাবাদগামী ট্রেনগুলি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বাতিল করা হয়েছে। বেশ কিছু ট্রেন ছাড়বে দুপুর কিংবা সন্ধ্যের দিকে। অগ্নিপথ বিক্ষোভ সবথেকে হিংসাত্মক চেহারা নিয়েছে বিহারে৷ রবিবারই বিহারের উপর দিয়ে যাতায়াতকারী ৩৫০টি ট্রেন বাতিল করতে হয়েছে৷ বিহারে বিজেপি-র পার্টি অফিসগুলির নিরাপত্তাও আঁটোসাঁটো করা হয়েছে৷ বিহারের অন্তত কুড়িটি জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে৷
এদিকে, বনধের জেরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আঁটোসাঁটো করা হয়েছে হয়েছে রাজধানীতে। দিল্লির বিভিন্ন এলাকায় প্রবল যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। সকাল ১১টা থেকে প্রবল যানজটের কারণে নয়ডা-দিল্লি লিঙ্ক রোড, দিল্লি-গুরগাঁও এক্সপ্রেসওয়ে জুড়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে গাড়ি।
দিল্লির গৌতম বুদ্ধ নগরের কাছে বড় কোনও জমায়েতের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পুলিস৷ সাধারণ মানুষকে আইন ভঙ্গ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে৷ দিল্লির কাছে ফরিদাবাদেও রাস্তা অবরোধের চেষ্টা চলছে৷
ঝাড়খণ্ডে অগ্নিপথের প্রতিবাদে বনধের কথা মাথায় রেখে সমস্ত স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার৷ অন্যদিকে, ঝাড়খণ্ডে নবম এবং একাদশ শ্রেণির যে পরীক্ষা চলছিল, তাও পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে৷
তামিলনাড়ুতে “ভারত বন্ধের” পরিপ্রেক্ষিতে, যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত দক্ষিণ রেলের চেন্নাই বিভাগের সমস্ত রেলস্টেশনে প্ল্যাটফর্ম টিকিট নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এদিকে, ভারত বন্ধের জেরে আগে থেকেই সতর্ক রেলমন্ত্রক। বাতিল করা হয়েছে একাধিক ট্রেন। সব রেল স্টেশন জারি করা হয়েছে হাই অ্যালার্ট। একটি সরকারি হিসেব অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত আন্দোলনের কারণে নষ্ট হয়েছে ৭০০ কোটি টাকার সম্পত্তি।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফেও রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নবান্ন থাকে নির্দেশিকা জারি করে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিসকেও।