টিডিএন বাংলা ডেস্ক: ইউক্রেনে রাশিয়ার “সামরিক অভিযান” শুরু হওয়ার পর থেকে আমেরিকা, ব্রিটেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অস্ট্রেলিয়া, জাপান সহ একাধিক দেশ ভ্লাদিমির পুতিনকে জব্দ করতে লাগাতার আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে ভারতকে সরাসরি তেল বিক্রির ওপর বিশাল পরিমাণ ছাড় দিতে আগ্রহ প্রকাশ করল রাশিয়া। ব্লুমবার্গের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, রাশিয়া ভারতকে প্রতি ব্যারেল ৩৫ ডলার পর্যন্ত ছাড় দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এর ফলে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে ভারত যে দামে অপরিশোধিত তেল পেত, তার থেকে অনেক কম দামে অপরিশোধিত তেল পাওয়া যাবে। এর ফলে, দেশে তেলের দাম নিয়ন্ত্রনে রাখা যাবে বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। জানা গিয়েছে, রাশিয়ার তরফ থেকে ভারতকে শুধুমাত্র তেলের ওপরে ছাড়ের কথাই বলা হয়নি প্রাথমিকভাবে ১.৫ কোটি ব্যারেল তেল কেনার জন্যও অফার দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার চলমান যুদ্ধের আবহে রাশিয়া থেকে ভারতের তেল কেনার বিষয়টিকে মোটেও ভালো ভাবে নিচ্ছে না পশ্চিমী দেশগুলি। এই পরিস্থিতিতে একদিকে যখন বৃহস্পতিবার ভারতে এসেছেন রুশ বিদেশমন্ত্রী লাভরভ তেমনি অন্যদিকে এইসময়েই দেশে রয়েছেন ব্রিটেনের বিদেশ সচিব এলিজাবেথ ট্রাস। জানা গিয়েছে, ভারতের বিদেশ মন্ত্রী সুব্রহ্মণ্যম জয়শঙ্কর জানিয়েছেন,”যখন তেলের দাম লাফিয়ে বাড়ছে, তখন এটাই তো স্বাভাবিক যে নিজেদের দেশবাসীর জন্য ভালো অফার পেলে সে দিকেই এগোবে ভারত।”
রয়টার্সের দেওয়া একটি রিপোর্ট অনুসারে, রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা দেশগুলির বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার পর ভারত এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৩ মিলিয়ন অপরিশোধিত তেল রাশিয়ার কাছ থেকে কিনেছে। যেখানে ২০২১ সালে গোটা বছরে মোট ১৬ মিলিয়ন ব্যারেল অপরিশোধিত তেল রাশিয়ার কাছ থেকে ভারত কিনেছিল। বিশেষজ্ঞদের মতে, পশ্চিমা দেশগুলি যখন কাঠগড়ায় তুলছে পুতিনকে সেই সময় যেভাবে রাষ্ট্রসঙ্ঘের ভোটাভুটি থেকে কৌশলগতভাবে সরে দাঁড়িয়েছে ভারত ঠিক সেভাবেই তেলের ক্ষেত্রেও পরোক্ষে রাশিয়ার পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছে নয়াদিল্লি। ইতিমধ্যেই, মস্কোর জন্য ভারতের “মানি-মার্কেট” অর্থাৎ “অর্থ-বাজার” খুলে দিয়েছে মোদি সরকার।